বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয় দিনে হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী উদযাপিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া বা অক্ষ তিজ। হিন্দুদের জন্য এই দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সংস্কৃতে অক্ষয় কথার অর্থ চিরস্থায়ী। এই দিন কোনও নতুন ব্যবসা বা শুভকাজ শুরু করলে তা সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে। এই দিন অনেকেই তাই পুজো করে কোনও শুভ কাজ শুরু করেন বা সোনা কিনে স্থায়ী বিনিয়োগ করেন। হিন্দুদের পাশাপাশি জৈনরাও অক্ষয় তৃতীয়া উদযাপন করেন। এই দিন আখের রস খেয়ে তাঁর এক বছরের উপোস ভেঙেছিলেন তীর্থঙ্কর ঋষভ।
অক্ষয় তৃতীয়া নিয়ে প্রচলিত কিছু কিংবদন্তি:
কুবের এই দিন তার হৃতসম্পদ ফিরে পেয়েছিলেন।
এই দিন বন্ধু সুদামা ও দ্রৌপদীকে অক্ষয়পত্র দিয়ে ধনসম্পদে ভরিয়ে দিয়েছিলেন কৃষ্ণ।
এই দিন মা অন্নপূর্ণার জন্ম।
এই দিন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের জন্ম।
এই দিনেই মহাভারত লিখতে শুরু করেছিলেন বেদব্যাস।
এই দিন সত্য যুগের সূচনা হয়েছিল। আর তাই অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তির উত্থান হিসেবে দেখা হয় এই দিনকে।
এ বছর পুজোর সময়
২০১৭ সালে অক্ষয় তৃতীয়া পুজোর সময় ২৯ এপ্রিল সকাল ৬টা ৫৬মিনিটের মধ্যে। এই সময়ের মধ্যেই শুরু করতে হবে পুজো।
অক্ষয় তৃতীয়া পুজোর বিধি:
এই দিন পরিবারের সমৃদ্ধি বাড়াতে বিষ্ণু-লক্ষ্মী অথবা কুবেরের পুজো করতে পারেন। কাঠের আসনে হলুদ বা লাল রঙের কাপ়ড় পেতে নিন। এ বার আসনের উপর লক্ষ্মী-নারায়ণ বা লক্ষ্মী-কুবেরের মূর্তি স্থাপন করুন। নারায়ণের সঙ্গে থাকলে লক্ষ্মী যেন বাঁ পাশে থাকে, কুবেরের সঙ্গে থাকলে ডান পাশে থাকবে লক্ষ্মী। রুপো, ব্রাস বা মাটির প্রদীপ জ্বালান। কলা, নারকেল, পানসুপারি, মিষ্টি ও জল নিবেদন করুন। প্রার্থনা করুন যেন আপনার বাড়িতে এসে ওঁরা আপনার নিবেদন গ্রহণ করেন। কিছু ক্ষণ আসনে বসে ধ্যান করুন ও আশীর্বাদ প্রার্থনা করুন। এ বার ঘণ্টা বাজিয়ে আরতির মাধ্যমে পুজো সমাপ্ত করুন।
সম্পদ বৃদ্ধির কিছু মন্ত্র:
ওঁ মহালক্ষ্মী চ বিধমে
বিষ্ণু পত্নী চ ধীময়ী
তনৌ লক্ষ্মী প্রচোদয়া
উপোসের নিয়ম: এ দিন উপোস করলে আখের রস পান করেই উপোস ভাঙার নিয়ম।
কী খাবেন: এই দিন সাধারণত চাল ও মুগডালের খিচুড়ি খাওয়ার রেওয়াজ।
কী দান করবেন: দান-ধ্যান ছাড়া কখনওই জীবনে সমৃদ্ধি আসে না। ভাত, ঘি, ফল, জামাকাপড়, তেঁতুল, সব্জি ও ফল দান করুন এই দিন।