আগাম সতর্কতাই ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধের সেরা উপায়

অন্য প্রতিষেধকের মতো অনেকের ধারণা, ফ্লুয়ের প্রতিষেধক নিলে এমনিতেই রোগ ধরে যাবে। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০১
Share:

সচেতনতা: শিশুদের আঁকায় ফ্লু সুরক্ষা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সৌজন্যে

ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধে একটি প্রতিষেধক রয়েছে। কিন্তু সেই প্রতিষেধক নিতে অনীহা অনেকেরই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশ্ব জুড়ে পাঁচ ধরনের অনীহার খোঁজ পেয়েছে। প্রতিষেধক নিতে হলে কয়েকটি নির্দিষ্ট আপত্তি জানান। তার একটি হল, ইনফ্লুয়েঞ্জা খুব সিরিয়াস কিছু রোগ নয়। তাই প্রতিষেধকের দরকার নেই। কিন্তু বাস্তবটা হল, বিশ্বে প্রতি বছর ছ’লক্ষ ৫০ হাজার রোগী ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা যান। স্বাস্থ্যবানেরাও আক্রান্ত হতে পারেন। যদিও বেশির ভাগই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সেরে ওঠেন। কিন্তু কিছুজনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিলতা দেখা যায়। সাইনাস, কানে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, হৃদযন্ত্রে সমস্যা, মস্তিষ্কে প্রদাহের মতো সমস্যাও থাকে।

Advertisement

অন্য প্রতিষেধকের মতো অনেকের ধারণা, ফ্লুয়ের প্রতিষেধক নিলে এমনিতেই রোগ ধরে যাবে। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। অনেকে মনে করেন, এই প্রতিষেধক থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এটিও ধারণা মাত্র। অনেকে বলে থাকেন, প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছে তাঁদের। এটা হতে পারে। কিন্তু তাতে ফ্লু অনেক কমজোরি হয়। শুধু তাই নয়, লোকের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া রুখতেও এই প্রতিষেধক ভীষণ কাজে লাগে। প্রতিষেধক ফ্লুয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায় বলেই মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। অনেক অন্তঃসত্ত্বাও প্রতিষেধক নিতে চান না। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বাদেরও প্রতিষেধক নেওয়া উচিত। কারণ এই সময়ে তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিষেধক তাঁদের নিরাপত্তার জন্যও দরকার।

তবে বিষেজ্ঞদের অনেকে বলছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস বারবার চরিত্র বদলায়। তাই আগে থেকে প্রতিষেধক নিলেও অনেক সময় কাজে আসে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ফ্লু যাতে না ছড়ায় তার জন্য কী করবেন এবং কী করবেন না সে বিষয়ে সচিত্র পরামর্শ দিয়েছে। এই ছবিগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাচ্চাদের দিয়ে ছবিগুলো আঁকিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে কঙ্গো, সুইৎজারল্যান্ড থেকে তাজিকিস্তানের বাচ্চারা এঁকেছে ছবি।

Advertisement

প্রথমে কী করা উচিত নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। ফ্লুয়ে আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি, কাশির সময়ে অবশ্যই নাক, মুখ রুমালে ঢাকবেন। নিয়মিত ভাবে রোগীর হাত ধোয়া দরকার। এই সময়ে জল খেতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি। আর দরকার ভাল করে বিশ্রাম নেওয়া। অনেকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাঁদের অবশ্যই অ্যান্টিভাইরাল নিতে হবে। কম বয়সি বা বেশি বয়সি, ক্যানসারের রোগীদের এই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কোনও ভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক নেওয়া উচিত নয়। কারণ ঠান্ডা লাগলে বা ফ্লু ভাইরাস ঠেকাতে এর কোনও কার্যকারিতা নেই।

এবার কী ফ্লু ঠেকানোর কয়েকটি পদ্ধতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, প্রতি বছর ফ্লুয়ের প্রতিষেধক নেওয়া উচিত। যদি ফ্লু হয়ও তাহলে তার প্রভাব খুব বেশি হবে না। ফ্লু মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। তাই যাঁদের ফ্লু হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে দূরে থাকাই উচিত। রাস্তাঘাটে বেরলে সাবধানে থাকতে হবে। চেষ্টা করতে হবে যেন চোখ, নাক এবং মুখে হাত না দিতে। কারণ এই পথ দিয়েই ভাইরাস শরীরে ঢোকে। ফ্লু ঠেকানোর আরেকটি পথ, থাকার জায়গাটি পরিচ্ছন্ন রাখা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন