parenting tips

সন্তান বাধ্য হলেই তাকে ‘উপহার’ দিচ্ছেন? আদরের ‘ঘুষ’-এর এই প্রবণতা কি ভাল?

সন্তান কথা না শুনলে বাবা-মায়েরা অনেক সময়েই তাদের কোনও উপহারের লোভ দেখান। এই অভ্যাস দীর্ঘকালীন পরিস্থিতিতে সন্তানের ক্ষতিও করতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১০:২৩
Share:

প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।

বেড়়ে ওঠার দিনে সন্তান কখনও কখনও বাবা-মায়ের কথা না-ও শুনতে পারে । কারণ বয়সের সঙ্গে বিশেষ করে কৈশোরকালে তার মনের মধ্যে নানা কারণে জেদ তৈরি হয়। ফলে অবাধ্য সন্তানকে ‘বাধ্য’ করতে বহু অভিভাবক তাদের উপহার দিয়ে থাকেন। তার ফলে সন্তানও বাবা-মায়ের কথা শুনতে পছন্দ করে।

Advertisement

সন্তানকে উপহার দেওয়ার মাধ্যমে বাধ্য করার প্রবণতার একধিক উদাহরণ রয়েছে। যেমন, কেউ সন্তানকে চকোলেটের লোভ দেখান। বয়স বেশি হলে কেউ আবার তাকে পছন্দের খেলার সামগ্রী কিনে দেন। কিন্তু সন্তানকে বাধ্য করে তুলতে এই ‘ঘুষ’ দেওয়ার প্রবণতা ভবিষ্যতে বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারেই বলে মনে করেন অনেকে।

উপহার নিয়ে সমস্যা

Advertisement

পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট এবং মনোবিদদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, অভিভাবকদের তরফে সন্তানকে ঘন ঘন উপহার দেওয়া সমস্যার কারণ হতে পারে। ১৯৯৩ সালে আমেরিকান লেখক আলফি কোহ্‌ন তাঁর ‘পানিশড বাই রিওয়ার্ডস: দ্য ট্রাবল উইথ গোল্ড স্টারস, ইনসেনটিভ প্ল্যানস, এ’জ় প্রেজ়, অ্যান্ড আদার ব্রাইবস’ বইতে সন্তানকে এই উপহার দেওয়ার প্রবণতার বিরোধিতা করেন। কারণ তাঁর মতে, একটা সময়ের পর সন্তান তাকে যে কাজটি করতে বলা হয়েছে, তার থেকে মনোযোগ হারিয়ে উপহারের উপর মনোনিবেশ করে। ফলে বাবা-মায়ের কাজ বা নির্দেশের পরিবর্তে তার কাছে তখন উপহারটিই মুখ্য হয়ে ওঠে।

গবেষণা কী বলছে

কোনও কোনও গবেষণায় আলফি কোহ্‌নের বক্তব্যকে সমর্থন করা হয়েছে। আবার কোনও কোনও গবেষক আলফির বিরোধিতা করেছেন। যেমন ১৯৯৯ সালে ইউনিভার্সিটি অফ রচেস্টারের তরফে ‘সাইকোলজিক্যাল বুলেটিন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে আলফির বক্তব্যকে সমর্থন করা হয়েছে। আবার ২০০২ সালে ‘দ্য বিহেভিয়ার অ্যানালিস্ট’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে ‘ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টা’র এক দল গবেষক আলফির বিরোধিতা করেন।

কখন উপহার

১) নির্দেশ দেওয়ার পর সন্তান যদি কথা শোনে বা ক্রমশ বাধ্য হয়ে ওঠে, তা হলে তাকে বার বার উপহার দেওয়া উচিত নয়।

২) সামাজিক মেলামেশা, স্কুলে যাওয়া বা বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে ছোটদের কোনও উপহারের লোভ দেখানো উচিত নয়। কারণ এই কাজগুলি তার নিজের উপভোগ করে করার বিষয়।

৩) যে কোনও ক্ষেত্রেই উপহার দেওয়ার অভ্যাস তৈরি করা উচিত নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে উপহার দেওয়া উচিত, বাবা-মা কে আগে থেকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

৪) সন্তানের কোনও খারাপ আচরণ বা পদক্ষেপের জন্য উপহারকে ব্যবহার করা উচিত নয়। তার ফলে এক সময়ে স্বভাবের পরিবর্তনের তুলনায় উপহার মুখ্য হয়ে দাঁড়াতে পারে। তখন সন্তান উপহার পাওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃত খারাপ আচরণ করতে পারে।

৫) প্রয়োজন ফুরোলে উপহারের সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া উচিত। সন্তান যদি সময়ের সঙ্গে কথা শোনে, তা হলে আর উপহারের লোভ দেখানো উচিত নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement