Play Date for Children

শুধু বড়রা নয়, ছোটরাও ডেটে যায়! ‘প্লে ডেট’ কী জানেন?

‘প্লে ডেট’-এর প্রস্তুতি নিতে হবে আগে থেকেই। কোথায় যাবেন, কী ভাবে সময় কাটাবেন, সন্তানের জন্য বিশেষ কী ব্যবস্থা করবেন— এই সব ভাবনাচিন্তা আগেই সেরে নেবেন। ‘প্লে ডেট’ কেমন হবে, সে বিষয়ে ধারণা থাকাও জরুরি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৭
Share:

‘প্লে ডেট’ কেমন হবে? ছবি: ফ্রিপিক।

সন্তানের সঙ্গে সুন্দর একটা সময় কাটানোর বাসনা রয়েছে। এ দিকে সময় করে উঠতে পারছেন না। আবার বেশি দিন অফিস বা কাজের জায়গা থেকে ছুটিও নেওয়াও যাবে না। তা হলে কী করবেন? সন্তানকে সময় দিতে না পারায় তারও অভিমান বাড়ছে। সন্তানকে নিয়ে ‘প্লে ডেট’-এ যেতে পারেন। এখন অনেক মা-বাবাই যান। সব সময়ে যে দূরেই যেতে হবে তা নয়, ঘরের ভিতরে বা কাছাকাছি কোথাও অল্প সময়ের জন্য হলেও সন্তানের সঙ্গে ভাল সময় কাটাতে পারেন। সমাজমাধ্যমে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া প্রায়ই তাঁর মেয়ে মালতি মেরিকে নিয়ে ‘প্লে ডেট’-এ যাওয়ার ছবি দেন। তবে তারকাদের অনুকরণ না করে বরং প্লে ডেট কেমন হলে সন্তানের জন্য ভাল, তা জেনে নেওয়া জরুরি।

Advertisement

প্লে ডেট কেমন হবে?

সন্তানের সঙ্গে একরকম ‘কোয়ালিটি’ সময়ই কাটানো। তবে তা অন্য রকম হবে। সহজ করে বললেন, সন্তানকে নিয়ে একটা সুন্দর দিন কাটান। তাতে খাওয়াদাওয়া থাকবে, মজা থাকবে আবার শিক্ষামূলক বিষয়বস্তুও থাকবে। ওই সময়টাতে সন্তানকে বকাবকি করা বা নিজের ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকলে চলবে না। নিজের জরুরি কাজও দূরেই রাখতে হবে। সম্পূর্ণ মনোযোগ থাকবে খুদের দিকেই।

Advertisement

‘প্লে ডেট’-এর প্রস্তুতি নিতে হবে আগে থেকেই। কোথায় যাবেন, কী ভাবে সময় কাটাবেন, সন্তানের জন্য বিশেষ কী ব্যবস্থা করবেন— এই সব ভাবনাচিন্তা আগেই সেরে নেবেন। পেরেন্টিং কনসালট্যান্ট পারমিতা মুখোপাধ্যায় বলছেন, “প্লে-ডেট এখনকার বাবা-মায়েদের মধ্যে বেশ চর্চিত বিষয়। অনেককেই দেখবেন, সন্তানকে কোনও শপিং মলে নিয়ে যাচ্ছেন অথবা সিনেমা দেখাতে নিয়ে যাচ্ছেন। রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়াও হয়। তবে খুব ভাল হয়, যদি এমন জায়গায় যান, যা সন্তানের জন্য শিক্ষামূলকও হবে আবার সকলের সঙ্গে মেলামেশার পরিসরও তৈরি হবে।”

তা কী রকম?

পারমিতার কথায়, বার বার রেস্তরাঁয় না গিয়ে বরং খুদেকে জাদুঘরে নিয়ে যান। নানা রকম জিনিস সে দেখবে, বুঝবে। সহজ করে তার মতো করে বোঝান। এতে ঘোরাও হবে, আবার শেখাও হবে।

এখনকার বাবা-মায়েরা রেস্তরাঁ বা সিনেমাহলে গিয়ে সন্তানের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন সমাজমাধ্যমে। এই নিয়ে প্রতিযোগিতাও চলে। কার বাবা-মা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন, কী কী ব্যবস্থা রাখছেন ইত্যাদি নিয়ে ছোটদের মধ্যেও কিন্তু আলোচনা চলে। এতে যেমন তাদের চাহিদা বেড়ে যায়, তেমনই ছোট থেকেই স্বার্থপরতা বা অহঙ্কারের জন্ম হয়। তার চেয়ে আলাদা কিছু করুন। যেমন সন্তানকে নিয়ে কোনও বৃদ্ধাশ্রমে ঘুরিয়ে আনুন। সেখানকার পরিবেশ দেখান, বয়স্কদের সঙ্গে তাকে সময় কাটাতে দিন। এতে ছোট থেকেই মানসিকতার বদল আসবে।

‘প্লে ডেট’ ঝাঁ-চকচকে হবে না কি সামান্য আয়োজনে সন্তানের মনের মতো হবে, তা ঠিক করতে হবে অভিভাবকদেরই। তবে তারকাদের দেখে তাদের অনুকরণ করতে যাওয়া বৃথা। মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ঘরেই পার্টির আয়োজন করুন। খুদের কয়েক জন বন্ধুকে ডাকুন। থিম পার্টি করতে পারেন, যেখানে সকলে প্রায় একই রঙের জামাকাপড় পরে আসতে পারে। নানা রকম খেলা খেলান ছোটদের। ‘মেমরি গেম’-এর আয়োজন করুন। আপনিও তাতে অংশ নিন।

খুদের জন্য তার মনের মতো ডেটের আয়োজন করতে পারেন। ঘরেই সকলে মিলে ‘ডিনার পার্টি’-র আয়োজন করুন। সন্তানের মনের মতো রান্না করুন। সুন্দর করে টেবিল সাজান। সকলে মিলে একসঙ্গে খেতে বসুন। যদি সম্ভব হয়, ঘরটাও খুদের মনের মতো জিনিসপত্র দিয়ে সাজান। এতেও সন্তানের সঙ্গে খুব ভাল সময় কাটানো হবে, ওর মনও ভাল হবে।

বাড়িতে ‘ডান্স পার্টি’-র আয়োজন করুন। সুন্দর করে ঘরটা সাজান। মিউজ়িক চালিয়ে খুদের সঙ্গে নাচুন। পরিবারের সকলেই অংশ নিন। অনিন্দিতা জানাচ্ছেন, যে সব ছেলেমেয়ে ছোট থেকেই নানা রকম উদ্বেগ, আতঙ্ক বা একাকিত্বে ভোগে, তাদের অভিভাবকদের এমন পরামর্শ দেওয়া। এতে খুদের ধারণা জন্মায় যে, সে একা নয়, বাড়ির সকলেই তার পাশে রয়েছে। তার জন্য বিলাসবহুল কোনও জায়গায় গিয়ে পার্টি করার দরকার নেই। মাঝেমধ্যে এমন আয়োজন করলে তা সন্তানের মনের মতোই হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement