সচেতন হন, কিছু খাবার একসঙ্গে খাওয়া নিষিদ্ধ। ছবি: শাটারস্টক।
আধুনিক জীবনযাত্রা ও ব্যস্ততার জেরে খুব নিয়মকানুন মেনে খাওয়ার সুযোগ অনেকেরই হয় না। তবু শরীরের প্রয়োজনে কিছু জরুরি ডায়েট ও নিয়ম মেনে চলাই দস্তুর। আমাদের চার পাশে এমন অনেক খাবার আছে, যা একসঙ্গে খেয়ে ফেলা মোটেই উচিত নয়। বরং এই সব খাবার পর পর খেলে হজমশক্তির দফারফা তো হবেই, সঙ্গে শরীরে বিষক্রিয়াও ঘটতে পারে।
চিকিৎসাবিজ্ঞান বিশ্বাস করে, কিছু কাবার আছে যা একসঙ্গে খেলে শরীরের নানাবিধ ক্ষতি হয়। প্রাচীন কালে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রও এমন অনেক খাবার সম্পর্কে সাবধান করেচে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানালেন, ‘কেবল আয়ুর্বেদ নয়, অ্যালোপ্যাথিও এই ধরনের খাবারগুলিকে একসঙ্গে খেতে নিষেধ করে। হজমশক্তি তো বটেই এমনকি, কিছু খাবার আছে যা দিনের পর দিন একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে।
এমন কোনও খাবার ভুলবশত খেয়ে ফেলছেন না তো? তা হলে এখনই সাবধান হন। দেখে নি কোন কোন খাবার রয়েছে এই তালিকায়।
আরও পড়ুন: কটন বাড ব্যবহার করেন? কী ক্ষতির দিকে নিজেকে ঠেলে দিচ্ছেন জানেন?
চা ও দই: এই দুই প্রকার খাবারেই অম্ল রয়েছে। একসঙ্গে বা সামান্য বিরাম দিয়ে পর পর এই ধরনের খাবার খাওয়া মানে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। এতে শরীরে হজমজনিত সমস্যা দেখা দেয়। অম্লতার অসুখ আগে থেকে থাকলে তো আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
মাংস ও দুধ: এই খাবার দু’টি একসঙ্গে না খাওয়ার কথা অনেকে জানলেও সব সময় তা মেনে চলি না আমরা। মাংসে প্রচুর প্রোটিন থাকে। এ দিকে দুধও সুষম আহার। তাই এই দুই খাবার পর পর খেলে শরীরে তাৎক্ষণিক সময়ের জন্য প্রোটিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। একাধিক পুষ্টি উপাদানের মধ্যে বিশেষ কোনও ধরনের উপাদানের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি শরীরের জন্য ভাল নয়।
তরমুজ ও জল: এমনিতেও ফলের পর জল খেতে নিষেধ করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কিছু কিছু ফল আছে, যার পরে জল খেলেও ক্ষতির পরিমাণ নগণ্য ধরা হয়। কিন্তু তরমুজ এমন একটি ফল— যে ফলে প্রচুর জল থাকে। তাই তরমুজের পরে জল খেলে শরীরে জলের পরিমাণ বেড়ে যায়। ইউরিক অ্যাসিড, হজম সমস্যা বা গ্যাস্ট্রিকে ভুগলে জলের এই মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি শরীরের বেশি ক্ষতি করে।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক খান? এ সব সাবধানতা না মানলে বিপদে পড়বেন কিন্তু
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ঠান্ডা পানীয় ও পুদিনা: শরীরের ভিতর এই দু’টি খাবার তীব্র রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এতে হজমের গোলমাল ও বটেই, বিক্রিয়ায় ফলে সায়ানাইডও উৎপন্ন হতে পারে। ফলে এই দুই খাবার একেবারেই একসঙ্গে খাবেন না।
দুধ ও লেবু: রান্নাঘরে কখনও দুধ ও লেবু যোগ করে দেখেছেন? এতে দুধ কেটে যায়। পেটের ভিতরেও একই রকম হয়। অনেকে ভাবেন পেটে পাচক রসে লেবুর তুলনায় অনেক বেশি অ্যাসিডের ভাগ থাকে। কিন্তু মনে রাখবেন, শরীর সে সব রসের সাহায্যে পরিপাকক্রিয়ায় অংশ নিতে অভ্যস্ত। বাইরে থেকে অতিরিক্ত অ্যাসিড যোগ হলে এই পদ্ধতি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
দুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক: কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক আছে যা শরীরে লোহা ও ক্যালসিয়ামের মতো খনিজের শোষণকে প্রতিরোধ করে। তাই অ্যান্টবায়োটিক চলাকালীন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন ওই ওষুধ চলাকালীন দুধ খাওয়ায় বিধিনিষেধ আছে কি না। (ছবি: শাটারস্টক)