Motherhood

সন্তান যেন নিতে পারে নিজের যত্ন, পাঠ দেওয়া যাক ছোট থেকেই 

ইচ্ছা হলেই সন্তানের উপরে তার সব ভার তো ছাড়া যায় না। স্বনির্ভরতার পাঠ শুরু হতে হবে ছোট বয়স থেকেই। কী ভাবে? রইল তিনটি সহজ পরামর্শ। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ১৮:১০
Share:

শিশুদের খেলার অভ্যাস থাকা দরকার। তত স্বনির্ভর হতে শিখবে তারা। 

আগের মতো পারিবারিক ব্যবস্থা আর নেই। মায়েরা প্রায় সকলেই বাইরে বেরোন কাজ করতে। স্কুল-কলেজ শুধু নয়। নানা ধরনের দফতরে। কাজের সময় চলে না বাধা নিয়মে। কখনও সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয় বাড়ি ফিরতে। কখনও মাঝ রাতে বেরোতে হয় কাজ শুরু করতে। যৌথ পরিবার ভেঙে ছোট হতে হতে এখন বড়ই ক্ষুদ্র। শুধু যে বড়রা থাকেন না বাড়িতে, এমন নয়। অনেক সময়ে শিশু শুধু এক জন অভিভাবকের সঙ্গে থাকে। হয় মা, নয় বাবার। অন্য জন থাকেন আর একটি শহরে, কিংবা দেশে। এমন অবস্থায় বাড়ির শিশুটির রোজের কাজ, যত্ন নেওয়াও একা মায়ের পক্ষে সম্ভব নয়। এ দিকে, বাইরের লোকের সাহায্য নিলেও চিন্তা থেকে যায়। তবে কী করতে হবে? ছোট থেকেই শেখাতে হবে যাতে শিশু নিজের দায়িত্ব নেওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে তাড়াতাড়ি।
বাঙালিদের জন্য এ কাজ খানিক কঠিন। কথায় বলা হয় বাঙালিরা অনেক দিন শিশু থাকে, তার পরেই বুড়ো হয়। বড় হওয়ার সুযোগ পায় না। ধরেই নেওয়া হয় বাবা-মা সন্তানের সব রকম প্রয়োজনের দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু এখন আর সেই সুখের সময় নেই। কারণ, সুযোগ নেই। স্বনির্ভরতা একমাত্র পথ বলে মনে করেন শিক্ষা থেকে মনোবিজ্ঞান, সব ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরাই।
কিন্তু হঠাৎ এক দিন ইচ্ছা হলেই সন্তানের উপরে তার সব ভার তো ছাড়া যায় না। স্বনির্ভরতার পাঠ শুরু হতে হবে ছোট বয়স থেকেই। কী ভাবে? রইল তিনটি সহজ পরামর্শ।
একা থাকার অভ্যাস
নিজের মতো করে, একা কিছুটা সময় কাটাতে পারা অভ্যাসের বিষয়। তা এক দিনে হয় না। শিশুরা মাকে চাইবেই। কিন্তু মায়ের কাজ থাকে, তিনি যে সর্ব ক্ষণ শুধু সন্তান প্রতিপালনে ব্যস্ত থাকতে পারবেন না, তা ছোট থেকই বোঝাতে হবে শিশুকে। খানিকটা সময় তাকে নিজের মতো খেলা করা, ছবি দেখায় ব্যস্ত রাখতে হবে। তখন হাতে সময় থাকলেও তার পাশে গিয়ে বসা ঠিক নয়। এ ভাবে চলতে চলতেই তার অভ্যাস হবে একা থাকার সময়টা ভাল ভাবে নেওয়ার। পাশে কেউ বসে না থাকলেও আর মন খারাপ হবে না।
নিজের কাজ করা
সব কাজ কেউই ছোট থেকে করতে পারে না। একটু একটু করে শেখে। সেই শিক্ষা শুরু হোক কম বয়স থেকে। অল্প অল্প করে। যত কম বয়সে সম্ভব, নিজে হাতে খেতে শেখানো ভাল। তার পরে দাঁত মাজা, খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, চুল বাঁধার মতো কাজ। নিজের যত্ন নিতে শেখা। যত তাড়াতাড়ি সন্তান জানবে যে সব বিষয়ে বাবা-মায়ের সাহায্য নিতে নেই, ততই স্বনির্ভর হতে শিখবে সে।
মেলামেশা
করোনার সময়ে সামাজিক মেলামেশায় বিধি-নিষেধ রয়েছে। তবে বড়রাও যেমন নিজেদের জন্য একটি নিরাপদ বৃত্ত তৈরি করে নিচ্ছেন, তেমনটা প্রয়োজন শিশুদেরও। যাতে একাকিত্বে না ভোগে তারা। আর সমবয়সিদের সঙ্গে দেখা হলে, খেলার মাতলে মন ভাল থাকবে। মা-বাবার উপরে গোটা সময়টা নির্ভর করতেও চাইবে না তারা। খেলার অভ্যাস থাকা তাই দরকার।
নিজের মতো করে শিশুর প্রয়োজন মেটানোয় ক্ষতি নেই। তবে তাকে স্বনির্ভর হতে দেখলে ভালই লাগবে বাবা-মায়ের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন