রঙিন দেওয়ালে লুকিয়ে বিপদ

ঘরের দেওয়ালে রং কিংবা সাজানোর জিনিসে সীসা ব্যবহারের পরিমাণও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রং নির্মাতা সংস্থাগুলি অনেকেই সেই নিয়ম মেনে চলছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটের দেওয়াল রঙিন করতে চান সকলেই। দেওয়ালে রঙের নানা কারুকাজ যেন বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাটের জৌলুস কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সেই রঙের মধ্যেও বিপদ লুকিয়ে রয়েছে। নতুন রং থেকে ভেসে আসা সীসার গন্ধ ক্ষতি করছে শিশুর স্বাস্থ্যের। তেমনই ইঙ্গিত মিলল শুক্রবার শহরের একটি আলোচনাসভা ও কর্মশালায়। যাতে অংশ নিয়েছিলেন চিকিৎসক এবং রং নির্মাতারা।
উদ্যোক্তারা জানান, সম্প্রতি পরিবেশ মন্ত্রক সীসার ভয়াবহতার কথা জানিয়েছে। দেওয়ালের রঙে সীসার ব্যবহারের বিধিনিষেধ নিয়েও বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ঘরের দেওয়ালে রং কিংবা সাজানোর জিনিসে সীসা ব্যবহারের পরিমাণও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রং নির্মাতা সংস্থাগুলি অনেকেই সেই নিয়ম মেনে চলছে না। যার খেসারত দিচ্ছে শিশু কিংবা কমবয়সিরা।

Advertisement

আলোচনা আয়োজক সংস্থার কর্তা প্রশান্ত রাজনাকর বলেন, ‘‘গত বছর নভেম্বরে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণাপত্রের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, সারা দেশ থেকে ২০টি রঙের নমুনা সংগ্রহ করে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। তাতে মাত্র তিনটি নমুনাতেই নির্দিষ্ট পরিমাণে সীসা পাওয়া যায়। বাকি সবগুলিতে অতিরিক্ত পরিমাণে সীসা ছিল। সরকারি নিয়ম বলছে, রঙে ৯০ পিপিএম সীসা মেশানো যায়। তার বদলে কোনও কোনও নমুনায় সীসার ঘনত্ব ১লক্ষ ৭২ হাজার ৯২১ পিপিএম পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে।’’ আলোচনাসভার আয়োজক এবং চিকিৎসকদের দাবি, রঙের ঘনত্ব ও ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে অনেক েক্ষত্রে নির্মাতারা নির্ধারিত পরিমাণের বেশি সীসার ব্যবহার করছেন। তার ফল ভুগছে মূলত শিশুরা।

এ দিন শিশুরোগ চিকিৎসকেরা এ নিয়ে সতর্ক করে জানান, অতিরিক্ত সীসা শিশুর মানসিক বিকাশে সমস্যা তৈরি করে। রঙের গন্ধ নাকে ঢুকলে অথবা রং ত্বকের সংস্পর্শে এলে সীসা রক্তে মেশার সম্ভাবনা থাকে। সে ৈক্ষেত্রে শিশুর বুদ্ধির বিকাশের সমস্যা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। শিশুরোগ চিকিৎসক সুনীতা সাহা জানান, যে ঘরে শিশু বড় হয়ে উঠছে, সেখানে অতিরিক্ত সীসার প্রভাব থাকলে তা শিশুর শরীরে প্রভাব ফেলবেই।

Advertisement

তবে কর্মশালায় উপস্থিত রং নির্মাতারা এ দিন ওই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি।

রাজ্য পরিবেশ দফতর মনে করে, স্থানীয় রং সংস্থাগুলির কারও কারও বাড়িতি সীসা ব্যবহারের প্রবণতা থাকে। এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের নজরদারির মধ্যে বিষয়টি রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন