পেঁয়াজও কাটুন, জ্বালাও এড়িয়ে যান। ছবি: সংগৃহীত।
পেঁয়াজ ছাড়া বিশ্বের অধিকাংশ হেঁশেল অকেজো। পেঁয়াজ ছাড়া আমিষ রান্না যেন কল্পনাই করা যায় না। কিন্তু তার জোগানের পর্ব কারও পক্ষেই খুব সুখকর নয়। খোসা ছাড়ানো থেকে কুচো করে কাটা, প্রতি ধাপেই চোখ জ্বালা ও ক্রমাগত জল পড়া। পাশাপাশি, নাক থেকেও জল পড়ে অনেকের। বিশেষ করে যাঁদের চোখে আগে থেকেই সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য এই ধাপ বেশ কঠিন।
কেন পেঁয়াজের কাটার সময়ে চোখে জল আসে?
পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেটি থেকে এনজ়াইম এবং সালফেনিক অ্যাসিড নিঃসৃত হয়। এগুলি একত্রিত হয়ে প্রোপানেথিয়াল এস-অক্সাইড তৈরি করে। এটি এক প্রকার জ্বালা ধরানো গ্যাস। প্রোপানেথিয়াল এস-অক্সাইড একটি ল্যাক্রিমেটরি এজেন্ট। এর অর্থই হল, চোখের সংস্পর্শে এলে জল বার করবে। মানুষের চোখ সেই মুহূর্তে অশ্রু তৈরি করে চোখ পরিষ্কার করে ফেলে।
কোন প্রকার পেঁয়াজে এই সমস্যা নেই?
পেঁয়াজ নানা ধরনের হয়। হলুদ, লাল, সবুজ। প্রথম দু'টি রঙের পেঁয়াজে সালফারের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এই পেঁয়াজগুলির খোসা ছা়ড়ালে এবং কাটলে তীব্র গ্যাস নির্গত হয়। কিন্তু সবুজ পেঁয়াজে এই সমস্যা কম। সবুজ পেঁয়াজ অথবা পেঁয়াজকলি আদপে মিষ্টি স্বাদের। হালকা সাদাটে ভাব থাকে রঙে। এতে সালফার কম বলে এর গন্ধ মৃদু, চোখের জল পড়ার সমস্যাও কম। তাই অশ্রু ও জ্বালা ভাব থেকে রক্ষা পেতে মাঝেমধ্যে কেবল পেঁয়াজকলি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে রান্নায় স্বাদের হেরফের হবেই। কারণ, অন্যান্য পেঁয়াজের মতো ঝাঁজ এতে থাকে না। এটি এক ধরনের অ্যালিয়াম সব্জি, যা দেখতে হয় লম্বা। সবুজ ডাঁটা থাকে উপরের দিকে। আর এই পেঁয়াজকলি গোলাকার পেঁয়াজের মতো কন্দে পরিণত হয় না।
পেঁয়াজকলিতে সালফার কম বলে ঝাঁঝ কম। ছবি: সংগৃহীত।
পেঁয়াজ কাটার সময় চোখের জল রোধ করার উপায় কী?
তবে যদি সাধারণ পেঁয়াজই রান্নায় ব্যবহার করতে চান, সে ক্ষেত্রে সব্জিটি কাটার সময়ে কয়েকটি পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। এতে চোখের জল পড়ার সমস্যা খানিক কমতে পারে। কাছাকাছি পাখা চালিয়ে রাখতে পারেন, যাতে গ্যাস দূরে সরে যায়। কন্ট্যাক্ট লেন্স বা চশমা পরে থাকলেও খানিক তীব্রতা কমতে পারে। কিংবা পেঁয়াজ কাটার আগে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিতে পারেন বা ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখতে পারেন।