জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চাইল শিশুমৃত্যুর রিপোর্ট

কালিয়াচকে পরপর শিশুমৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে দেখে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চিঠি দিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিবকে। কী করে ওই শিশুদের মৃত্যু হল, সে বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন বলেছে, লিচুতে ব্যবহৃত কীটনাশক বা রং করার রাসায়নিক থেকে যদি শিশুরা মারা গিয়ে থাকে, তবে তা শিশুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি গুরুতর দৃষ্টান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০৩:০১
Share:

কালিয়াচকে পরপর শিশুমৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে দেখে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চিঠি দিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিবকে। কী করে ওই শিশুদের মৃত্যু হল, সে বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন বলেছে, লিচুতে ব্যবহৃত কীটনাশক বা রং করার রাসায়নিক থেকে যদি শিশুরা মারা গিয়ে থাকে, তবে তা শিশুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি গুরুতর দৃষ্টান্ত। রাজ্যের অন্য কোনও এলাকা থেকে ‘অ্যাকিউট এনসেফালাইটিস সিনড্রোম’ বা ‘লিচি সিনড্রোম’-এ শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে কি না, তা-ও জানাতে বলেছে কমিশন।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, এ দিনই বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়ে দিলেন, কালিয়াচকের লিচুর নমুনায় কীটনাশকের যে মাত্রা মিলেছে, তা মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকারক নয়। সম্প্রতি মালদহ জেলা প্রশাসনের কাছে ওই রিপোর্ট পৌঁছেছে। জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, “লিচুতে যে পরিমাণ টক্সিন থাকলে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে, তার চেয়ে অনেক কম মিলেছে ওই এলাকার লিচু থেকে।”

লিচু বাগান অঞ্চলের শিশুরা পরপর জ্বর, খিঁচুনিতে আক্রান্ত হতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মালদহে পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকার। ওই দলটি কালিয়াচকের প্রায় ৫২ বিঘা এলাকা ঘুরে লিচুর নমুনা নেয়। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানান, মালদহের লিচুর শাঁস, খোসা ও পাতায় ১৪০ ধরনের কীটনাশকের কোনগুলির অবশিষ্টাংশ রয়েছে, তা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় কেবল ‘আলফা-সাইপারমেথ্রিন’ জাতীয় কীটনাশক মিলেছে। তার পরিমাণ প্রতি কেজিতে সর্বোচ্চ ১.০৪ মিলিগ্রাম ও সর্বনিম্ন ৫ মিলিগ্রাম, যা ক্ষতিকর মাত্রার চাইতে অনেক কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং খাদ্য ও কৃষি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লিচুর ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে ২ মিলিগ্রাম বা তার বেশি ‘আলফা-সাইপারমেথ্রিন’ অবশিষ্টাংশ থাকলে তা ক্ষতিকর। মালদহের লিচুতে অনেক কম মাত্রায় ওই কীটনাশক মিলেছে।

Advertisement

অতএব ধোঁয়াশা থেকেই গেল। ১১ দিনে জ্বর ,বমি ও খিঁচুনি উপসর্গ নিয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন শিশুর মৃত্যু হয়। বাড়িতে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ৪৬জন শিশুর চিকিৎসা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন