জুনিয়র চিকিত্‌সকদের সঙ্গে বচসায় রোগীর পরিজনেরা

ওয়ার্ডে রোগীদের দেখতে চিকিত্‌সক সময় মতো আসেন না বলে অভিযোগ। তা নিয়ে বলতে গেলে রোগীর লোকজনদের সঙ্গে জুনিয়র চিকিত্‌সকদের বচসা বাধে। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩৩
Share:

ওয়ার্ডে রোগীদের দেখতে চিকিত্‌সক সময় মতো আসেন না বলে অভিযোগ। তা নিয়ে বলতে গেলে রোগীর লোকজনদের সঙ্গে জুনিয়র চিকিত্‌সকদের বচসা বাধে। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটল। হাসপাতালে ভর্তি বিজেপি’র মাটিগাড়া মণ্ডলের সভাপতি অসুস্থ কালীচরণ সেনকে দেখতে এ দিন গিয়েছিলেন দলের লোকজনেরা। সে সময় ‘ঠিক মতো চিকিত্‌সক দেখছেন না’ বলে দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক গণেশ দেবনাথ, যুগলকিশোর ঝা-সহ অনেকে অভিযোগ তুললে জুনিয়র চিকিত্‌সকদের সঙ্গে তা নিয়ে বচসা বাধে। অভিযোগ জুনিয়র চিকিত্‌সকেরা সে সময় গণেশবাবুকে ধাক্কা দেন। জুনিয়র চিকিত্‌সকদের পাল্টা অভিযোগ, গণেশবাবু এবং তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি-ই জুনিয়র চিকিত্‌সকদের গায়ে হাত তুলেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ যায়।

Advertisement

গণেশবাবুরা হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্রনাথ সরকারের কাছে জুনিয়র চিকিত্‌সকদের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। হাসপাতালের সুপারের সামনে তাঁর দফতরে-ই গণেশবাবুদের ঘেরাও করে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমনকী তাঁরাই জুনিয়র চিকিত্‌সকদের গায়ে হাত তুলে অন্যায় করেছেন বলে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিতে হয় গণেশবাবুকে। হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “জুনিয়র চিকিত্‌সকদের সঙ্গে রোগীর লোকজনদের সামান্য সমস্যা হয়েছিল। পরে তা মিটে যায়।”

জুনিয়র চিকিত্‌সকদের অভিযোগ, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেশি। অতিরিক্ত সময় কাজ করে, কখনও রাত জেগে তাঁরা পরিষেবা দিচ্ছেন। তার উপর রোগীর লোকজনদের এ ধরনের আচরণে তাঁরা হতাশ। আগেও একাধিকবার ওয়ার্ডে জুনিয়র চিকিত্‌সকদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ রয়েছে। ইন্দ্রনীল খান, অভিজিত্‌ দাসদের মতো জুনিয়র চিকিত্‌সকদের অভিযোগ, গণেশবাবু ওয়ার্ডে ঢুকে অপর রোগীর চিকিত্‌সার সময় ঠিক মতো রোগীকে দেখা হচ্ছে না বলে নানা কথা তোলেন। অথচ সে সময় চিকিত্‌সক ওই রোগীকেই দেখছিলেন। পরে ওই রোগী মারা যান। এর পর তিনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বলে গণেশবাবু হুমকিও দেন। ওয়ার্ডে নার্সদের ছবি তুলে রাখেন মোবাইল ক্যামেরায়। গণেশবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর সঙ্গে থাকা যুগলবাবু বলেন, “চিকিত্‌সকদের কথা মেনে নিয়ে গণেশবাবু ক্ষমা চেয়েছেন। তবে যা ঘটেছে তা কাম্য নয়। এরপর তারা রোগীকে রাখবেন কি না তা ভাবতে হবে।”

Advertisement

চিকিত্‌সা পরিষেবা নিয়ে অবশ্য এ দিন অন্য আরও কয়েকজন রোগীর আত্মীয়রা অভিযোগ জানান। এ দিন সকালে মারা যান অনুপ ওঁরাও নামে এক রোগী। মালবাজারের ওয়াশাবাড়ির বাসিন্দা অনুপবাবুর ছেলে কৃষ্ণবাবু বলেন, “ভর্তির পর বুধবার রাতে একবার চিকিত্‌সক এসে দেখি গিয়েছিলেন। এর পর কোনও চিকিত্‌সক আসেননি।” গঙ্গা চা বাগানের বাসিন্দা সুনীল গণ অভিযোগ করেন, ৬ মার্চ থেকে তাঁর মা অর্তি গণ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এ দিন সকালে মারা যান। হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে তাঁরা ক্ষুব্ধ। আয়া না রাখলে রোগীকে ওয়ার্ডে নার্সরা দেখেন না। স্যালাইনের ‘চ্যানেল’ লাগাতে আয়ারা টাকা নেন। টাকা না দিলে দেখেন না। দিনে এবং রাতে ১২০ টাকা করে দুই জন আয়া রাখার ক্ষমতা অনেক বাসিন্দারই নেই। অথচ সেই কারণে তাঁদের রোগীদের দেখভাল ঠিক মতো হয় না বলে অভিযোগ।

রক্তদানের উদ্যোগ

গণতান্ত্রিক আইনজীবী সঙ্ঘের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে এক রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয়। আইনজীবী সঙ্ঘের জেলা সম্পাদক রঘুনাথ ভট্টাচার্য জানান, শিবিরে সব মিলিয়ে ৪৫ জন রক্তদান করেন। পাশাপাশি, থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় শিবির, ব্লাড সুগার নির্ণয় শিবির প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন