অশান্তির পরে। —নিজস্ব চিত্র।
রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের অশান্তি হাসপাতালে। এ বার রোগীর পরিজনের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর বাসিন্দা দেবাশিস বিশ্বাস (৫২)। সমস্যা ধরা পড়ার পর থেকেই দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালে তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। গত ২৫ জুলাই অবস্থার অবনতি হওয়ায় দেবাশিসবাবুকে এই হাসপাতালের ভর্তি করানো হয়। তার পরেও তাঁর অবস্থা ক্রমে অবনতি হতে থাকে। মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দেবাশিসবাবুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই সার্জিক্যাল বিভাগের সিস্টার রুমে চড়াও হন তাঁর এক আত্মীয়া। তিনিই ভাঙচুর শুরু করেন। সিস্টার রুমের কাছে থাকা কম্পিউটার, রক্তের নমুনা সংগ্রহ করার টিউব, ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জগুলি ভাঙচুর করা হয়। কর্তব্যরত নার্সদের গালিগালাজও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি।
গত শনিবারই এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে এসএনসিইউ বিভাগের এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিলেন, ওই সদ্যোজাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। সে কথা পরিবারের লোকজনকে জানানোও হয়েছিল। চার দিন এসএনসিইউ বিভাগে রেখে আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। আর তার পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ডাক্তারের উপরে চড়াও হন পরিজনেরা। এই ঘটনায় পুলিশ এক জনকে গ্রেফতারও করেছে। এর কিছু দিন আগে কাঁকসা স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও এক শিশুর মৃত্যুতে বিক্ষোভ-অশান্তি হয়।
দুর্গাপুর মহকুমায় নানা হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বারবার এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক বলে দাবি করেছেন চিকিৎসক-মহল। চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) রাজ্য সহ-সভাপতি মিহির নন্দীর কথায়, “এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুভার্গ্যজনক। সমস্যা থাকতেই পারে। তা বলে চড়াও হয়ে মারধর, ভাঙচুর নিন্দনীয়।”