স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠ জুড়ে ময়লা, দূষণ

এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি বা চায়ের দোকান বা হোটেলের আবর্জনা কিংবা নোংরা জল এ সবই ফেলা হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে। পথচারীদের প্রস্রাবের জায়গাও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠ। গোটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র জুড়ে আবর্জনার স্তূপ, দুর্গন্ধ থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৫
Share:

এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি বা চায়ের দোকান বা হোটেলের আবর্জনা কিংবা নোংরা জল এ সবই ফেলা হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে। পথচারীদের প্রস্রাবের জায়গাও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠ। গোটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র জুড়ে আবর্জনার স্তূপ, দুর্গন্ধ থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ। তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে কুকুর, শুয়োরের দল। ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকে শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল এমনই। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী সাফাই কর্মী নেই। এক জন অস্থায়ী কর্মী দিয়ে কোনও রকমে সাফাইয়ের কাজ চলছে। অথচ দিনের পর দিন তা নিয়ে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে স্বাস্থ্য কর্তাদের ভূমিকায় সরব বাসিন্দারা।

Advertisement

সম্প্রতি ব্লক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছে শামুকতলা নাগরিক মঞ্চ। তাদের তরফে অবিলম্বে হাসপাতাল চত্বরে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। দাবি জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নতির জন্যও। কয়েক দফায় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমস্যা না মিটলে বৃহত্তর আন্দোলন নামবার হুমকি দিয়েছেন বাসিন্দারা।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেছেন, “সমস্যা খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আবর্জনা ফেলা কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। তা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ কর্মকার জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে নোংরা আবর্জনা ফেলা কখনই কাম্য নয়। তা বন্ধ করতে শীঘ্রই স্থানীয় পঞ্চায়েত, প্রশাসন, ব্যবসায়ী সমিতি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। পাশাপাশি প্রচারও চালানো হবে। রাজনৈতিক দলগুলিও এ নিয়ে সরব হয়েছেন।

Advertisement

বাসিন্দাদের একাংশের মত, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মানুষ সুস্থ হতে আসে। অথচ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে তাতে মানুষ সুস্থ হতে এসে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বে। সমস্যা সমাধান করার দাবিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ থেকে স্বাস্থ্যকর্তা সর্বত্র লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছেন। নাগরিক মঞ্চের অন্যতম কর্মকর্তা সঞ্জয় ঝার অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের একাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাঠে নোংরা আবর্জনা ফেলছেন। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। হাসপাতালের সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ অবিলম্বে শেষ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাসিন্দারাই জানান, শামুকতলা প্রথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর বা পঞ্চায়েত প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থ্যা নিচ্ছে না। স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও অনেক ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী বিশেষজ্ঞ নিয়োগের দাবি জানালেও সে দাবি পূরণ হয়নি। তাতে গরিব পরিবারের প্রসূতি মহিলারা সমস্যায় পড়ছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চোখ বা দাঁতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই।

আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকে শামুকতলা টটপাড়া, মহাকালগুড়ি তুরতুরি, কোহিনূর-সহ ৪০টি গ্রামের মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নির্ভরশীল। শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান গাব্রিয়েল হাসদা বলেন, “আবর্জনা যাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে না ফেলা হয় তা স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা তাঁরা শুনছেন না। সমস্যা সমাধানে দ্রুত বৈঠক ডাকা হবে।” তৃণমূল ব্লক সভাপতি কাজল দত্ত জানিয়ছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে আবর্জনা কোনও ভাবে মানা যায় না। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। সিপিএমের শামুকতলা লোকাল কমিটির সম্পাদক সচীন রায় জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিকাঠামো গড়া হলেও পরিষেবার মানোন্নয়ন হয়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে আবর্জনা ফেলা কোনও মতেই উচিত নয়। এটা চলতে পারে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন