Music

অনবদ্য এক সঙ্গীতসন্ধ্যা

স্বাগতালক্ষ্মী এর পর সঙ্গীতগুরু মায়া সেনের স্মরণে স্মৃতি পুরস্কার অর্পণ করলেন দেবারতি সোমকে।

Advertisement

শ্রীনন্দা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share:

স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল একলা গীতবিতান সংস্থার ১৪ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্তের একক গানের অনুষ্ঠান ‘মারের সাগর পাড়ি দেব’।

Advertisement

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রার্থনাসঙ্গীত ‘খণ্ডন ভব’ একটি চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে। পরপর গীত হয় ‘অমৃতের সাগর’, ‘আমি মারের সাগর’ ও ‘অমল ধবল’ গানগুলি। অত্যন্ত যত্ন ও অনুশীলনের চিহ্ন পাওয়া যায় গানগুলিতে।

স্বাগতালক্ষ্মী এর পর সঙ্গীতগুরু মায়া সেনের স্মরণে স্মৃতি পুরস্কার অর্পণ করলেন দেবারতি সোমকে। রবীন্দ্রদীক্ষায় দীক্ষিত শিল্পী স্বাগতালক্ষ্মী সতীর্থকে সম্মান জানিয়ে প্রমাণ করলেন “রাজা সবারে দেন মান, সে মান আপনি ফিরে পান...”। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বহু বিশিষ্ট শিল্পীকে মঞ্চে আহ্বান করে সম্মান জানালেন স্বাগতালক্ষ্মী। সে দিন মঞ্চের পর্দায় একলা গীতবিতান-এর পথ চলার স্মৃতিজড়িত বহু ছবি দেখানো হয়।

Advertisement

দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতালক্ষ্মীর একক গানের অনুষ্ঠান। এ কালের শিক্ষিত শিল্পীদের অন্যতম তিনি। সাঙ্গীতিক শিক্ষা ও রবীন্দ্রবোধ তাঁর গানে অন্য মাত্রা এনে দেয়।

অনুষ্ঠানকে তিনি এ বার অন্য ভাবনায় সাজিয়েছেন। চেয়েছেন চাঁদের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্রগানের তালের মিল খুঁজে, গান নির্বাচন করতে। যেমন কৃষ্ণা নবমীতে নবতালে বাঁধা ‘নিবিড় ঘন আঁধারে’, দশমীতে অশুভ নিধনের সঙ্গে খুঁজেছেন দশ মাত্রায় বাঁধা ‘মহা সিংহাসনে’ গানটি। কৃষ্ণা একাদশীতে একাদশী তালে বাঁধা গান ‘দুয়ারে দাও মোরে’ বা ‘দ্বাদশীর চাঁদের আলো কমলেও তাতে থাকে অজানা শক্তির অপেক্ষা’ এই ভাবনায় নিমগ্ন থেকে শোনালেন ১২ মাত্রা তালের ‘তাঁহারে আরতি করে’ গানটি।

প্রতিটি গানই সুগীত। নিবিষ্ট তাঁর ভঙ্গি, অশেষ তাঁর সঙ্গীতপ্রেম—সব মিলিয়ে গানে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। এই শিল্পীই পারেন রবীন্দ্রনাথের গানের তর্জমা করতে, ছবি আঁকতে, এমনকি ‘গীতবিতান’-এর সমস্ত গান রেকর্ডে সংরক্ষণ করতে। যে সব রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর পাওয়া যায় না, এমন কিছু গানে সুরও দিয়েছেন তিনি। সমস্ত জীবন জুড়ে যাঁর রবীন্দ্রনাথ, তাঁর গান শোনাও এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা। অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের গান প্রমাণ করল—শুধু নিজে নয়, পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও একই ভাবে সেই শিক্ষা ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

সহযোগী যন্ত্রশিল্পী পরিতোষ নন্দী এবং পলাশ রায় অনুষ্ঠানটিকে সম্পূর্ণ রূপ দিতে সাহায্য করেছেন।

স্বাগতালক্ষ্মীর কাছে আরও অনেক দিন এই রকম অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় আমরা সকলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন