পুজো, বর্ষবরণ, ভ্যালেন্টাইন্স ডে, বিয়ের মরসুম পেরিয়ে দোলও ছুটি নিয়েছে। তাই ডায়েট এ বার কাল থেকে হবে— সেই বাহানার কোনও জায়গা নেই। কিন্তু কিছুতেই লোভনীয় খাবার ছেড়ে ডায়েটে মন বসছে না। এ দিকে মধ্যপ্রদেশ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এখনই সময় পাতের খাবারটা বদলে ফেলার।
ইদানীংকালের ফুড ট্রেন্ডের দিকে যদি খেয়াল রাখেন, তা হলে বুঝবেন, সর্বত্রই এসেছে খাবারে সবুজায়নের জোয়ার। সহজ কথায়, যতটা সম্ভব ভাত, রুটি, পাউরুটি জাতীয় কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে নিজের পেট ভরানো যায়— ততই স্বাস্থ্যের জন্য মঙ্গল। আর এই মন্ত্র মাথায় রেখেই বদলে যাচ্ছে পাস্তার সংজ্ঞা। ময়দা বা আটা ব্যবহার না করে তাই এ বার পাস্তা তৈরি হচ্ছে আনাজ দিয়ে! তার জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে রং বেরঙের জুকিনি। জুকিনি পাস্তা বা জুকিনি দিয়ে তৈরি নতুন নুডলসের নাম হচ্ছে জুডলস!
১০০ গ্রাম রান্না করা পাস্তায় যদি মোটামুটি ১৩১ ক্যালরি থাকে, তা হলে এক কাপ জুকিনিতে তার পরিমাণ মাত্র ১৭ ক্যালরি। অন্য দিকে এক কাপ পাস্তায় মোটামুটি ২৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। আর সম পরিমাণ জুকিনিতে মাত্র ৩.১ গ্রাম! এ ছাড়া জুকিনিতে তো বাড়তি ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও নানা পুষ্টিগুণ থাকছেই। স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ পাস্তার চেয়ে জুকিনি পাস্তার খাদ্যগুণ অনেক বেশি এবং তা স্বাস্থ্যসম্মতও।
এ বার প্রশ্ন ওঠে, এক ধরনের আনাজকে কী ভাবে নুডলের মতো অত সুন্দর, ঝিরিঝিরি, সূক্ষ্ম ভাবে কাটা যায়! বাজারে অনেক ধরনের স্পাইরালাইজার মেশিন কিনতে পাওয়া যায়। তা দিয়ে সহজেই রিবনের আকারে জুকিনি কাটা যায়। এ ছাড়া আমাদের অনেকের বাড়িতেই পিলার বা গ্রেটার থাকে। যা দিয়ে কোনও আনাজ জুলিয়েন করে কাটা সহজ। এ ক্ষেত্রে সেটাও ব্যবহার করতে পারেন। আবার কেউ জুকিনি নুডল বানাতে ভরসা করতে পারেন ছুরি আর নিজের হাতের মুনশিয়ানাকেও।
তবে আর পাঁচটা শিল্পের মতোই রান্নার ক্ষেত্রেও নিজের শিল্পীসত্তাকে কাজে লাগাতে পারেন। জুডল বানাতে শুধুই জুকিনি নয়, নিতে পারেন গাজর, বিট, বাটারনাট স্কোয়াশ ইত্যাদি। এতে পাস্তা হয়ে উঠবে রঙিন এবং তার জন্য ব্যবহার করতে হবে না কৃত্রিম রং।
এ বার প্রশ্ন, বানাবেন কী ভাবে? হাল্কা সিদ্ধ করে মাখনে টস করে নিতে পারেন জুডল। ইচ্ছেমতো নুন, গোলমরিচ দিয়ে সিজনিং করে, উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন অল্প চিজ। আবার চাইলে চিংড়ি, মিটবল, চেরি টম্যাটো জাতীয় নানা ধরনের সবজিও ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণ পাস্তা বা নুডলস রান্নার পদ্ধতি মেনেও বানিয়ে ফেলতে পারেন জুডলস।
সহজ কথায়, জুডল গ্লুটন ফ্রি, হুইট ফ্রি, গ্রেইন ফ্রি, লো কার্ব। খুব সহজে নিজের রোজকার খাবারে আনাজের প্রয়োগ করতে পারেন জুডলসের মাধ্যমে। জুডলস বানানোর জন্য আনাজ কেটে তখনই বানিয়ে ফেলতে পারেন। ফলে এই খাবারটি একেবারেই প্রসেসড নয়।
বাচ্চার টিফিনে হোক বা নিজের স্বাস্থ্যসচেতন ডায়েটে— কার্বোহাইড্রেটকে ফাঁকি দিয়ে সবজি খাওয়ার আরও একটা ফিকির যোগ হল তো?