ঠান্ডার আঁচ পড়তে না পড়তেই মনের মাঝে চাড়া দিয়ে উঠছে মাখন আর ড্রাই ফ্রুটসে ভরপুর কেক-কুকিজের ঘ্রাণ? তাই রইল বেকিং শুরুর কিছু প্রাথমিক টিপ্স হিম পড়তে শুরু করে দিয়েছে। আর ক’দিনের মধ্যেই জাঁকিয়ে বসবে শীত। ঠান্ডা হাওয়া, নরম মিঠে রোদের সঙ্গে এই সময়টার বিশেষত্বই হল হেঁশেলজোড়া ম’ম’ করা কেক-কুকিজ-ব্রেডের মিষ্টি গন্ধ।
ধরুন বাড়িতে কেক বানানোর ইচ্ছে আপনার অনেক দিনের। কিন্তু বাড়িতে নেই মাইক্রোওয়েভ বা ওটিজি। তাও চিন্তা কীসের? আগেকার দিনে ঠাকুমা-দিদিমাদের সময়ে যখন কেক আভেনেরও খুব একটা চল হয়নি, তখনও তাঁরা দিব্যি কেক বানিয়ে দিতেন প্রেশার কুকারে। আর তারও উপায় না থাকলে কড়াই আছে তো! আঁচে কড়াই বসিয়ে বালির পরত তৈরি করে বসিয়ে দেওয়া হত কেকের মিশ্রণভরা পাত্র। রাঁধুনির গুণে হেঁশেল ভরে উঠত কেকের গন্ধে।
হেঁশেলের টুকিটাকি:
কেক তৈরির জন্য প্রাথমিক কিছু উপাদান প্রত্যেকের রান্নাঘরেই মজুত থাকে। তবু শীতের শুরুতে আরও এক বার মনে করিয়ে দেওয়া যাক কেক বেকিংয়ের এসেনশিয়াল উপাদানগুলোর কথা!
প্রাথমিক ভাবে কেক তৈরির জন্য ময়দা, ডিম, চিনি, মাখন, নুন, এসেন্স তো জরুরি। তবে এই সময়টায় বাজারে পাওয়া যায় ভাল মানের মোরব্বা। সেই মোরব্বা, চেরি, আমন্ড, কাজু বাদাম, কিশমিশ, আখরোট, প্রুনস জাতীয় ড্রাই ফ্রুটস অবশ্যই মজুত রাখুন। কারণ, সাধারণ ভ্যানিলা বা চকলেট কেক নয়, এগুলো থাকলে চটজলদি বানিয়ে ফেলতে পারবেন শীতকালীন ফ্রুট কেকও!
প্রাথমিক নিয়ম:
কেক বেক করতে গেলে কয়েকটা জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
• বেকিং মানেই হল সমস্ত উপকরণের সঠিক পরিমাপ। কোনওটা বেশি বা কম হলে তা ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই বেকিং শুরুর আগে ভাল করে একাধিক বার রেসিপি পড়ে নিন।
• রেসিপির প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ রান্নাঘরে মজুত আছে কি না, দেখে নিন সেটা।
• আভেনে কেক তৈরির প্রথম শর্তই হল, আভেন প্রি-হিট করে রাখা। তার পর কেক প্যান বসান।
• মাখন, ডিম, দুধ ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকলে একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে যাবে সহজে। বেকিং শুরুর আগে সব উপকরণ ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা আবশ্যিক।
• যে উপাদান যতটা পরিমাণে দেওয়ার কথা বলা আছে, ঠিক ততটাই দিন।
• মাখনের ঘনত্ব ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। বরফঠান্ডা জমাট মাখন যেমন ভাল কেক তৈরি করে না, তেমনই আবার একদম গলে যাওয়া মাখনও কাজের নয়। ফলে ঘরোয়া তাপমাত্রায় রাখা নরম মাখনই শ্রেয়।
• রেসিপিতে না থাকলেও যে কোনও মিষ্টি পদ তৈরির আগে এক চিমটে নুন দিন। এতে মিষ্টত্ব বাড়বে বই কমবে না!
• বাড়িতে ডিম নেই অথচ দুধ আছে। কিংবা নিরামিষ বা এগলেস কেক বানাতে চান? তা হলে এক কাপ ময়দার সঙ্গে এক কাপ দুধ দিয়ে কেক বানান।
• চিনি মিক্সিতে বা শিলে গুঁড়ো করে নিন। স্বাস্থ্যসচেতন হলে কেকে চিনির পরিবর্তে ব্যবহার করুন গুড় বা মধু। এতে মিষ্টত্বের হেরফের হবে না মোটেও।
• কুকিজ বানাতে চাইলে কুকি ডো ঠান্ডা করে নিন। কিংবা ব্রেড অথবা বিস্কিট বানানোর সময়ে ময়দা মেখে তার জন্য আলাদা সময় রাখুন।
• চকলেট কেক বানানোর সময়ে কেকের ব্যাটারে মিশিয়ে দিন ঈষদুষ্ণ জলে ভেজানো ইনস্ট্যান্ট কফি পাউডার। এতে কিন্তু চকলেট কেকের স্বাদ এবং গন্ধ বাড়বেই।
• বেকিং যদি আপনার প্যাশন হয়, তা হলে কিনে রাখুন আভেন থার্মোমিটার। এতে বেকিং করাকালীন আভেনের তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখা সম্ভব হবে।
• কেক নামিয়েই সেটি টিন থেকে বের করার চেষ্টা করবেন না। ধৈর্য ধরুন। কেক ঠান্ডা হতে দিন। তা হলে কেক না ভেঙে বেরিয়ে আসবে খুব সহজেই।
অর্থাৎ ঠিকমতো পরিমাপ, সামান্য অভিজ্ঞতা, একটু ধৈর্য ধরলে বানাতে পারবেন সুস্বাদু কেক।