এখনকার জীবনযাত্রায় যে নন্দনের ছোঁয়া লেগেছে, তাতে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। ব্যস্ত সময়ের মাঝেও আরামকেদারার সঙ্গে রং মিলিয়ে বেছে নেন পরদার লিনেন, এমনকী বাথরুমের হ্যান্ড শাওয়ারের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো মস বা পেব্ল ম্যাট। তা হলে বাড়ির বাগান তৈরির বেলায়ই বা তা বাদ যাবে কেন? বাড়ির বাগানে কী গাছ লাগাচ্ছেন, কেমন ভাবে তার যত্নআত্তি করছেন, তা যেমন দরকারি, একই ভাবে জরুরি বাগানের সাজও। এ বার গাছের টবেই বদলে দিন বাগান তৈরির সংজ্ঞা। বাড়িতে বা বাড়ির লাগোয়া বাগানের জন্য সেরামিক, পোর্সেলিন, মাটি, সিলিকনের টব তো চাইলেই বাজার থেকে কিনে আনতে পারা যায়। এগুলোর ভাল সন্ধান মেলে নার্সারি বা অনলাইন সাইটেও। কিন্তু নতুন টব কেনার আগেই খুঁজে দেখুন বাড়ির অন্দর। দেখবেন, অনেক তুচ্ছ জিনিসের গায়ে সামান্য রং চড়িয়ে বা পাট-দড়ি মুড়ে ভোল বদলে পুঁতে ফেলা যায় চারাগাছ। রইল সে রকমই বাড়িতে তৈরি টবের হদিশ।
• অনেকের বাড়িতে পুরনো অ্যালুমিনিয়ামের কেটলিতে চা হতো। এখন সেই জায়গা নিয়েছে ঝাঁ চকচকে পোর্সেলিনের কেটলি। পুরনোটার গায়ে কোনও উজ্জ্বল রং চড়িয়ে দিন। তা হতেই পারে গাঢ় নীল অথবা চোখ ধাঁধানো গোলাপি। সেই উজ্জ্বল কেটলিতে মাটি ভরে বসিয়ে দিন চারাগাছ। একই ভাবে ব্যবহার করতে পারেন ফেলে দেওয়া টাওয়ার।
• টিনের বিস্কিটের কৌটোর জায়গা এখন নিয়েছে রংচঙে, সুদৃশ্য জার। তা হলে পুরনো টিনের কৌটোটাকে ভাল করে ধুয়ে মুছে কানার দিকে দুটো ছিদ্র করুন। সেই ছিদ্রের মধ্য দিয়ে লাগিয়ে দিন শক্তপোক্ত দড়ি। কৌটোয় মাটি ভরে ছোট গাছ লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিন বারান্দায়। রংও লাগিয়ে নিতে পারেন কৌটোর গায়ে।
• বাড়ির পুরনো জগ বা বড় মুখের ফুলদানি হয়তো হাত থেকে পড়ে গিয়ে সামান্য চটে গিয়েছে। বসার ঘরে আর সেটা মানাচ্ছে না মোটেও। সেই জগ বা ফুলদানির গায়ে সাদা রং চড়িয়ে গাছ লাগান। বাড়ির প্রবেশপথে বা সিঁড়ির কোনায় সেই নতুন টব বাড়িতে আনবে পুরনো দিনের ছোঁয়া।
• লোহার শক্ত তার দিয়ে তৈরি মশলার তাকে একটা সময়ের পর মরচে পড়া স্বাভাবিক। তা বাতিল না করে তাকের নীচে শক্ত কিছু বসিয়ে বেস তৈরি করুন। তার মধ্যে মাটি রেখে গাছ পুঁততে পারেন। মরচে ধরা তাকে রঙিন ফুলগাছের বাহার বাগানে এনে দেবে রাস্টিক ফিল।
• বাড়ির খুদে সদস্য একটা সময়ে স্নান করত ছোট্ট বাথটাবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আর প্রয়োজন পড়ে না সেই বাথটাবের। তাতে মাটি ভর্তি করে লাগিয়ে দিন ছোট ছোট গাছ। নানা রঙের ফুলে বাথটাবে গাছের বাহার হবে অন্য রকম।
• ইদানীং বুকশেল্ফ টবেরও চল উঠেছে। মাঝে কয়েকটি বই রেখে বইয়ের তাকেই দু’পাশে রাখতে পারেন অন্য ধরনের টব। তাতে লিথপজাতীয় গাছ রেখে বাড়াতে পারেন অন্দরমহলের শোভা।
তাই সামান্য অদলবদল ঘটিয়ে দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস কাজে লাগিয়েই ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনার অন্দরমহলের বাগানের মনোময় শোভা।