Uttarkashi Tunnel Collapse

যন্ত্রও যেখানে বিফল, সম্বল সেই হাত! দেখুন সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারের চূড়ান্ত অভিযানের সব ছবি

১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গে বন্দি। সূর্যের আলো দেখেননি। তাই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্কা ছিল। কোনও শ্রমিক গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চপারে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
দেহরাদূন শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০২
Share:
০১ ১৬

দেশ-বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল উন্নতমানের যন্ত্র। এসেছিলেন তাবড় তাবড় প্রযুক্তিবিদেরা। এই যন্ত্রের যুগেও শেষ পর্যন্ত হাতই হল ভরসা। উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ইঁদুরের মতো খননকাজ চালিয়ে এল সাফল্য। ১৭ দিন পর মঙ্গলবার উদ্ধার করে আনা হল ৪১ জন শ্রমিককে।

০২ ১৬

মঙ্গলবার রাত ৭টা ৪৯ মিনিট থেকে শুরু হয় চূড়ান্ত অভিযান। শেষ হয় ৮টা ৩৮ মিনিটে। একে একে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসেন শ্রমিকেরা। মুখে চওড়া হাসি। সুড়ঙ্গ থেকে প্রথম বেরিয়ে আসেন ঝাড়খণ্ডের বিজয় হোরো। তার পর একে একে ৪১ জনই বেরিয়ে আসেন।

Advertisement
০৩ ১৬

সুড়ঙ্গের মুখে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী হাসপাতাল। সেখানেই প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় শ্রমিকদের। চিকিৎসকেরা জানান, সকলেই সুস্থ রয়েছেন। তখন যেন প্রাণ ফিরে পান আটকে থাকা শ্রমিকদের আত্মীয়েরা।

০৪ ১৬

১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গে বন্দি। সূর্যের আলো দেখেননি। তাই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্ক ছিল। সুড়ঙ্গের পাশেই রাখা ছিল চিনুক চপার। কোনও শ্রমিক গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে ওই চপারে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। যদিও কিছুর প্রয়োজন হয়নি। সকলেই সুস্থ রয়েছেন।

০৫ ১৬

তবে উদ্ধারের পর শ্রমিকদের আপাতত ৩০ কিলোমিটার দূরে চিনিয়ালিসৌর হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে। সে জন্য সুড়ঙ্গের বাইরে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। সুড়ঙ্গ থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে গ্রিন করিডোর।

০৬ ১৬

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরকাশী জেলা হাসপাতালে ৪১টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। প্রত্যেক শয্যায় রয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা। ট্রমা কেয়ার ইউনিট, আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শরীরের পাশাপাশি মনের চিকিৎসাও চলবে শ্রমিকদের।

০৭ ১৬

জেলা হাসপাতালে পাশে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করে চপারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কোনও শ্রমিকের অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে হৃষীকেশের এমস হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে। সেখানেই চলবে তাঁর চিকিৎসা।

০৮ ১৬

মঙ্গলবার দুপুরে ইঁদুরের মতো গর্ত খুঁড়ে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে যান উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। যে পাইপের মাধ্যমে বেরিয়ে আসেন শ্রমিকেরা, তা উপযুক্ত জায়গায় রাখা হয়েছিল।

০৯ ১৬

বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা শ্রমিকদের বোঝান, কী ভাবে ওই পাইপ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে তাঁদের। এই পাইপটি আড়াই ফুট চওড়া। পাইপের যে সব জায়গায় ঝালাই হয়েছে, সেগুলি বেশ ধারালো। সেখান দিয়ে বেরোনোর সময় আঘাত লাগতে পারে শ্রমিকদের। এ সব ঝুঁকির কথাই বুঝিয়ে দেওয়া হয় শ্রমিকদের।

১০ ১৬

প্রথমে মনে করা হয়েছিল, সুড়ঙ্গ থেকে হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটে বেরোবেন শ্রমিকেরা। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ দিন সুড়ঙ্গে আটক থাকার কারণে তাঁরা শারীরিক ভাবে আর সক্ষম নন। সে কারণে চাকা লাগানো ট্রলির মাধ্যমে পাইপ দিয়ে তাঁদের বার করে আনা হয়।

১১ ১৬

গত ১৭ দিন ধরে বিভিন্ন উপায়ে চলেছে উদ্ধারের চেষ্টা। বার বার ব্যাহতও হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাত দিয়ে ইঁদুরের মতো গর্ত খনন করে উদ্ধার করা হয়েছে শ্রমিকদের। সেই নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে প্রশাসন। কারণ এই পদ্ধতি খুব একটা নিরাপদ নয়।

১২ ১৬

সাধারণ খনি থেকে আকরিক উত্তোলনের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হত। এখন নিষিদ্ধ। সেই ‘র‌্যাট হোল মাইনিং’-এ এসেছে সাফল্য। এই প্রক্রিয়ায় চার ফুটের বেশি গভীর গর্ত খোঁড়া হয় না।

১৩ ১৬

খনি শ্রমিকেরা কয়লার ভান্ডারের কাছাকাছি পৌঁছে গেলে পাশ থেকে এই ধরনের গর্ত খোঁড়া হয়। সরু, ছোট সুড়ঙ্গ বেয়ে কয়লার কাছে পৌঁছে যান শ্রমিকেরা। তার পর কয়লা তুলে বাইরে আনা হয়।

১৪ ১৬

এই প্রক্রিয়ায় মূল ঝুঁকির কারণ হল, সুড়ঙ্গ অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হয়। ফলে যে কোনও মুহূর্তে ধস নেমে শ্রমিকের মৃত্যু হতে পারে। ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’-এ সাধারণত শাবল-গাঁইতির মতো ছোট জিনিস ব্যবহার করা হয়।

১৫ ১৬

উত্তরাখণ্ডে সেই পদ্ধতিই ব্যবহার করা হল যখন আমেরিকা থেকে আনা খনন যন্ত্রও ভেঙে যায়। এই নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়। তবে উদ্ধারের পর এই ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’ কর্মীরাই হয়ে ওঠেন নায়ক। তাঁরা বলেন, ‘‘১৫ মিটার খনন করেছি। আমাদের দেখে কর্মীরা এত খুশি হয় যে, জড়িয়ে ধরেন। আমাদের আমন্ডও খেতে দেন।’’

১৬ ১৬

আজও যন্ত্রকে টেক্কা দিচ্ছে মানুষ! এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেন ব্যবহারকারীরা। পোস্ট করা হয় জন হেনরির গান ‘বিট দ্য মেশিন’। প্রশাসন অবশ্য আপাতত এই বিতর্কে যেতে চাইছে না। চাইছেন না উদ্ধারকারীরাও। তাঁরা আপাতত শ্রমিকদের পরিবারের মতোই মাততে চাইছে আনন্দে। কারণ ১৭ দিনের যুদ্ধ সফল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement