Sunjay Kapur’s Legacy

একটি মৃত্যু, একটি উইল, একটি চিঠি, তিন নারী এবং একাধিক অভিযোগ! সঞ্জয়ের ৩০,০০০ কোটি নিয়ে দড়ি টানাটানি তুঙ্গে

সোনা কমস্টারের বার্ষিক সাধারণ সভার প্রাক্কালে পাঠানো একটি চিঠিতে রানি দাবি করেছেন, ছেলের মৃত্যুর পর তিনি যখন মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে জোর করে এমন কিছু কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ তিনি বোঝেননি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১৪:২৮
Share:
০১ ২০

একটি উইল, একটি চিঠি, তিন জন নারী এবং একাধিক অভিযোগ— করিশ্মা কপূরের প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কপূরের মৃত্যুর পর সম্পত্তি নিয়ে অশান্তি চরমে।

০২ ২০

১২ জুন মারা গিয়েছেন শিল্পপতি সঞ্জয়। আকস্মিক প্রয়াণ। মৌমাছি গিলে ফেলার ফলে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। কিন্তু সঞ্জয়ের মা রানি কপূর দাবি তুলেছেন, তাঁর পুত্রের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। বিষয়টি নিয়ে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতও দিয়েছেন রানি।

Advertisement
০৩ ২০

সে প্রসঙ্গে সঞ্জয়ের সংস্থা ‘সোনা বিএলডব্লিউ প্রিসিশন ফোরজিংস’ বা ‘সোনা কমস্টার’-এর অংশীদারদের একটি চি়ঠিও লিখেছেন রানি। সেই চিঠিতে জুন মাসে তাঁর পুত্রের আকস্মিক মৃত্যুর পর ‘পারিবারিক উত্তরাধিকার দখল’-এর লড়াই নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি।

০৪ ২০

সোনা কমস্টারের বার্ষিক সাধারণ সভার প্রাক্কালে পাঠানো সেই চিঠিতে রানি দাবি করেছেন, ছেলের মৃত্যুর পর তিনি যখন মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে জোর করে এমন কিছু কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ তিনি বোঝেননি।

০৫ ২০

রানির দাবি, তাঁর স্বামীর নিবন্ধিত উইলের একমাত্র সুবিধাভোগী তিনি। তাঁর দাবি, তিনি সংস্থার সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারের মালকিনও বটে। অথচ, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও রকম আর্থিক লেনদেন করতে পারছেন না তিনি। সংস্থা সংক্রান্ত কোনও তথ্যও তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না, তেমনটাই অভিযোগ তুলেছেন রানি। ইচ্ছাকৃত ভাবে সংস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি তুলেছেন মৃত সঞ্জয়ের মা।

০৬ ২০

সোনা কমস্টারের অংশীদারদের পাঠানো চিঠিতে রানি লিখেছেন, ‘‘আমাকে তালাবন্ধ দরজার আড়ালে নথিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিল।’’ একই সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন, শোকসন্তপ্ত অবস্থায় তাঁর স্বাক্ষরিত নথিগুলি এখন পরিবারের উত্তরাধিকার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অপব্যবহার করা হচ্ছে।

০৭ ২০

তবে সোনা কমস্টার তাদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেছে যে, সংস্থার সমস্ত সিদ্ধান্ত কর্পোরেট আইন মেনে নেওয়া হয়েছে। সংস্থার তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, রেকর্ড অনুযায়ী রানি সংস্থার অংশীদার নন। তাই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করার কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই পরিচালন সমিতির।

০৮ ২০

সোনা কমস্টার নিশ্চিত করেছে, ২৫ জুলাই তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছে এবং পরিচালন সমিতিতে এক জন নতুন সদস্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আর কেউ নন— সঞ্জয়-পত্নী প্রিয়া সচদেব কপূর।

০৯ ২০

মনোনয়নের ভিত্তিতে প্রিয়াকে সংস্থার নন-এক্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পরিচালন সমিতি জানিয়েছে, মনোনয়ন এবং পারিশ্রমিক কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করার পরেই প্রিয়ার নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে।

১০ ২০

সোনা কমস্টার আরও জানিয়েছে, ২৪ জুলাইয়ের বেলার দিকে রানির চিঠি তারা পেয়েছিল এবং বিষয়টি নিয়ে আইনি পরামর্শদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ করার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত করার কোনও কারণ নেই।

১১ ২০

সংস্থাটির পরিচালন সমিতি আরও জানিয়েছে, সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর রানির থেকে কোনও স্বাক্ষরিত নথি তারা পায়নি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সংস্থার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছে সোনা কমস্টার।

১২ ২০

কিন্তু সঞ্জয়ের পারিবারিক ইচ্ছাপত্রে কী লেখা আছে এবং সংস্থার কে কত শতাংশ অংশীদার, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে গভীর পারিবারিক দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে এসেছে।

১৩ ২০

এক জন আইনজীবী জানিয়েছেন, ভারতীয় আইন অনুযায়ী সংস্থার অংশীদারের মৃত্যুর পর একজন মনোনীত ব্যক্তি সেই অংশের চূড়ান্ত মালিক নন। মনোনীত ব্যক্তি কেবল শেয়ারের একজন তত্ত্বাবধায়ক বা ট্রাস্টি। যত ক্ষণ না বৈধ উত্তরাধিকারী বা সুবিধাভোগীরা বৈধ ইচ্ছাপত্রের অধীনে শেয়ারের উপর তাঁদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত সেগুলি দেখভালের দায়িত্ব তত্ত্বাবধায়কের।

১৪ ২০

আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ এ-ও মনে করছেন, রানি পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে প্রয়াত স্বামীর ইচ্ছাপত্রের প্রমাণপত্র চাইতে পারেন, যা সেই ইচ্ছাপত্রের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করবে।

১৫ ২০

তবে আইনজীবীদের অনেকে এ-ও জানিয়েছেন যে, ২০১৩ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী, সংস্থার বোর্ডে পরিবর্তন আনার আগে সংস্থাগুলিকে আইনত পরিবারের সদস্যদের অবহিত করার বা তাদের সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ফলে রানির যুক্তি ধোপে না-ও টিকতে পারে।

১৬ ২০

সঞ্জয়ের মৃত্যুর পরই শোনা যাচ্ছিল তাঁর কোম্পানি সোনা কমস্টারের দায়িত্ব আসতে পারে সঞ্জয়-করিশ্মার মেয়ে সামাইরা কপূরের হাতে। কিন্তু তেমনটা হয়নি, বরং বর্তমান স্ত্রী প্রিয়াই সবটা দেখভাল করছেন। কারণ প্রিয়া-সঞ্জয়ের দুই সন্তান এখনও অনেকটা ছোট।

১৭ ২০

এ দিকে করিশ্মার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তাঁদের কন্যা সামাইরা এবং পুত্র কিয়ানের পড়াশোনার জন্য ১৪ কোটি টাকার বন্ড কিনে রেখেছিলেন সঞ্জয়। সেই সম্পত্তির কী হবে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।

১৮ ২০

শোনা যাচ্ছে, প্রাক্তন স্ত্রী করিশ্মাও নাকি সঞ্জয়ের ৩০,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তিতে ভাগ পাওয়ার দাবি করেছেন। কিন্তু এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি মেলেনি করিশ্মার তরফে।

১৯ ২০

সম্পত্তির পরিমাণ ৩০,০০০ কোটি। কিন্তু রানি, করিশ্মা এবং প্রিয়া— তিন নারীর মধ্যে কে হবেন উত্তরাধিকারী? সিদ্ধান্ত নিয়ে চাপা অশান্তি এখন দিল্লির কপূরদের বা়ড়িতে।

২০ ২০

আপাতত পরিস্থিতি যা, বিষয়টি দীর্ঘস্থায়ী আইনি লড়াইয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক অশান্তি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement