POK Protest

অবৈধ ভাবে দখল করা কাশ্মীরই গলার কাঁটা! পাক সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ, কেন উত্তাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর?

সোমবার থেকে শুরু হওয়া সেই আন্দোলনকে বিগত কয়েক বছরের মধ্যে পিওকেতে হওয়া সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই বিক্ষোভের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:০৭
Share:
০১ ২০

অবৈধ ভাবে দখলে থাকা কাশ্মীরই এখন পাকিস্তানের গলার কাঁটা! সোমবার সকাল থেকে নতুন করে উত্তাল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে)। মৌলিক অধিকার এবং পাক সরকারের বিরোধিতায় পথে নামলেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। জনতা-পুলিশ ও সোনাবাহিনীর সংঘর্ষে কমপক্ষে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহতও হয়েছেন অনেকে।

০২ ২০

সোমবার থেকে শুরু হওয়া সেই আন্দোলনকে বিগত কয়েক বছরের মধ্যে পিওকেতে হওয়া সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই বিক্ষোভের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement
০৩ ২০

সেই সব ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, পিওকের বিভিন্ন অঞ্চলে সমাবেশ করছে বিশাল জনতা। মৌলিক অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। স্লোগান দিচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সরকারের বিরুদ্ধে। যদিও ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।

০৪ ২০

সেখানকার নাগরিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে তৈরি হওয়া আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি (এএসি) এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে।

০৫ ২০

স্থানীয় সংগঠনের ডাকা লকডাউনের মাঝেই ব্যানার, পতাকা নিয়ে পথে নেমেছেন স্থানীয় মানুষ। রাওয়ালকোট, মিরপুর, কোটলি, নীলম ভ্যালি-সহ পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে সমাবেশ করতে দেখা গিয়েছে।

০৬ ২০

পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। আংশিক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে মোবাইল ফোন, সমাজমাধ্যম, ইন্টারনেট পরিষেবা।

০৭ ২০

মোট ৩৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে এএসি। এই দাবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৌলিক অধিকার সুরক্ষা, শাসনতান্ত্রিক সংস্কার, কাশ্মীরের শরণার্থীদের জন্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আইনসভায় যে ১২টি আসন নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তার অবলুপ্তি ঘটানো ইত্যাদি। ভর্তুকিযুক্ত আটা, মংলা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাওয়া বিদ্যুতের ন্যায্য দামের দাবিও তোলা হয়েছে।

০৮ ২০

বিক্ষোভকারীদের দাবি, পাক সরকার দীর্ঘ দিন ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উন্নতির বিষয়ে উদাসীন। জনগণের মৌলিক অধিকার পর্যন্ত সুরক্ষিত করা হচ্ছে না। এ নিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানের একাধিক মন্ত্রী এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাতেও বসেছিল এএসি। সেই আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরেই বিক্ষোভ শুরু হয়।

০৯ ২০

মুজফ্‌ফরাবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে এএসি কমিটির অন্যতম হোতা শওকত নওয়াজ় মীর বলেন, ‘‘যথেষ্ট হয়েছে। হয় আমাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করুন, নয় জনগণের রোষের মুখে পড়ুন।’’

১০ ২০

অন্য এক আন্দোলনকারীর কথায়, “আমাদের লড়াই কোনও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়। গত ৭০ বছর ধরে যে ভাবে আমাদের মৌলিক অধিকারগুলি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, আমরা চাই সে সব বন্ধ হোক।’’

১১ ২০

পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বড় শহরগুলিতে অতিরিক্ত সেনা-আধাসেনা মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। শনিবার এবং রবিবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢোকা এবং বেরোনোর পথে নজরদারি চালানো হয়। অনেক শহরের প্রবেশপথ বন্ধ করা হয়েছে।

১২ ২০

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলির সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করা হয়েছে। ইসলামাবাদ থেকে অতিরিক্ত এক হাজার পুলিশকর্মীকে পাঠানো হয়েছে সেখানে। এর মধ্যে সোমবার গুলিও চলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। সূত্রের খবর, মুজফ্‌ফরাবাদে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন।

১৩ ২০

পিওকে প্রশাসন জানিয়েছে, শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর তারা। কাউকে জনজীবন ব্যাহত করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার দিয়েছে সরকার।

১৪ ২০

পিওকের এক জেলাশাসক মুদাচ্ছের ফারুককে উদ্ধৃত করে পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘শান্তি বজায় রাখা প্রশাসন, পুলিশ এবং নাগরিকদের একটি যৌথ দায়িত্ব। আমাদের কারও সঙ্গে কোনও বিরোধ নেই। তবে জনসেবার পথে কেউ অন্তরায় হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

১৫ ২০

এ বছরের শুরুতেও পাক সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জনগণ। সেখানকার বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসায় ধাক্কা খায় চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্যও।

১৬ ২০

নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তানে শুরু হয় গণবিক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ভূস্বর্গের এই এলাকায় ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে না ইসলামাবাদ। ফলে প্রবল ঠান্ডায় বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে তাঁদের।

১৭ ২০

এই পরিস্থিতিতে কারাকোরাম হাইওয়েতে ধর্নায় বসেছিলেন গিলগিট-বাল্টিস্তানের বাসিন্দারা। তার পর থেকে যত সময় গড়ায়, ততই এককাট্টা হন তাঁরা। রাতে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের প্রায় ১০ ডিগ্রি নীচে চলে গেলেও ধর্নামঞ্চ ছেড়ে অন্যত্র যাননি বিক্ষোভকারীরা। পরে অবশ্য সেই আন্দোলনে ভাটা পড়ে। পরিস্থিতি শান্ত হয়।

১৮ ২০

পাক অধিকৃত ভূস্বর্গকে ভারতের সঙ্গে মেশানোর দাবি তুলে অনেক দিন ধরেই আওয়াজ তুলেছেন পিওকের জনগণের একাংশ। তার মধ্যেই এ বার মৌলিক অধিকার নিয়ে পাক সরকারের বিরুদ্ধে সরব পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জনগণ।

১৯ ২০

নিজেদের দখল করে রাখা কাশ্মীরকে ‘আজ়াদ কাশ্মীর’ বলে পাকিস্তান। চলতি মাসে মরক্কো সফরে গিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

২০ ২০

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, “পাঁচ বছর আগে আমি কাশ্মীর উপত্যকায় ভারতীয় সেনার এক অনুষ্ঠানে বলেছিলাম পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করতে আমাদের আক্রমণ করার প্রয়োজন নেই। ওটা এমনিতেই আমাদের হবে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরও বলবে, আমরা ভারতের অংশ। সেই দিন আসতে চলেছে।”

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement