Gold Investor John Paulson

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনার মালিক, অনাস্থা বিটকয়েনে, হাজার হাজার কোটির সম্পত্তি ট্রাম্পের আস্থাভাজনের

জন পলসন এক সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠবৃত্তের সদস্য ছিলেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের লড়াইয়ের সময় ট্রেজ়ারি সেক্রেটারি পদের জন্যও তাঁকে বিবেচনা করা হয়েছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১০:০২
Share:
০১ ১৭

সোনা মানেই নিশ্চিত সঞ্চয়। প্রাকৃতিক এই সম্পদের দাম চড়চড় করে বেড়েছে কয়েক বছরে। দাম বৃদ্ধি পেতে পেতে কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম সোনা লাখের অঙ্ক পেরিয়েছে। রাজারাজড়াদের আমলে সোনা সঞ্চয় শুধু সম্পদ বৃদ্ধির উপায় হিসাবে দেখা হত না। সোনা রাখা তাঁদের কাছে শক্তি এবং মর্যাদার প্রতীক বলেও গণ্য করা হত।

০২ ১৭

আধুনিক যুগেও হলুদ ধাতুর গ্রহণযোগ্যতা একই রয়ে গিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সোনা একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগের বিকল্প হিসাবে সমাদৃত হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। কেবল সম্পদের প্রতীক হিসাবে নয়, অনিশ্চিত সময়ে এটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ বলে ধরা হয় পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে। সোনাকে অনিশ্চিত সময়ের সেরা সম্পদ বলা হয়।

Advertisement
০৩ ১৭

সোনাকে দীর্ঘ দিন ধরেই নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম বলে মনে করা হয়। কিন্তু আমেরিকায় সুদের হার কমে যাওয়ায় এবং ডলারের দর হ্রাস পাওয়ায় অনেকেই লগ্নি সোনায় সরাচ্ছেন। বিশ্বব্যাপী সোনার মজুতের দিকে তাকালে দেখা যাবে, সবচেয়ে বেশি সোনা রয়েছে আমেরিকার হাতে।

০৪ ১৭

২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ১৩৪ টন সোনা মজুত ছিল। তার পরেই জার্মানির স্থান। চিন ও ভারত যথাক্রমে ২ হাজার ২৮০ টন এবং ৮৭৬ টন সোনার মজুত নিয়ে এই তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের অনুমান অনুসারে এত দিন ধরে পৃথিবী জুড়ে প্রায় ২ লক্ষ ১৬ হাজার ২৬৫ টন সোনা খনন করা হয়েছে।

০৫ ১৭

সোনা সম্পদের প্রতীক। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সোনা সঞ্চিত রয়েছে ভারতীয় পরিবারগুলির হাতেই। ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে গয়না পরার চলও খুব বেশি। সঙ্গতি থাকলে গলায়, কানে, আঙুলে প্রায় সব সময়ই সোনা পরেন বহু মহিলা।

০৬ ১৭

এ তো গেল দেশ বা পারিবারিক সোনার মজুতের পরিসংখ্যান। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত সোনা সঞ্চিত রয়েছে যে সব ব্যক্তির কাছে তাঁদের মধ্যে যিনি অন্যতম, তিনিও আমেরিকার বাসিন্দা, জন পলসন। ধনকুবের ও হেজ ফান্ড ম্যানেজার। ব্যক্তিগত মালিকানার নিরিখে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোনার মালিক তিনি। সোনার উপর বাজি ধরার জন্য বিশেষ পরিচিত পলসন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, ভবিষ্যতে মার্কিন ডলার দুর্বল হবে।

০৭ ১৭

জন পলসন একজন মার্কিন ধনকুবের। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা পলসন অ্যান্ড কোম্পানির সর্বময় কর্তা তিনি। আমেরিকার ধনকুবেরদের তালিকার উপরের দিকেই থাকেন তিনি। ওয়াল স্ট্রিটের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক বলে ধরা হয় পলসনকে।

০৮ ১৭

মজার ব্যাপার হল, পলসন এক সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠবৃত্তের সদস্য ছিলেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের লড়াইয়ের সময় ট্রেজারি সেক্রেটারি পদের জন্যও তাঁকে বিবেচনা করা হয়েছিল।

০৯ ১৭

২০১৬ সালে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পাওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করে পলসন সংবাদমাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। পলসন ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের একজন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১০ ১৭

হেজ ফান্ড ম্যানেজার পলসন ২০০৮ সালে আমেরিকা আবাসন বাজারের পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করে ২ হাজার কোটি ডলার আয় করেছিলেন। তিনি বরাবরই চিরাচরিত সম্পদে বিনিয়োগে উৎসাহী। ট্রাম্পের আস্থাভাজন হিসাবে পরিচিত হলেও বিনিয়োগের প্রশ্নে ট্রাম্পের মতের বিপরীতেই নিজের মত প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

১১ ১৭

২০১০ সালে পলসন প্রায় ৫০০ কোটি ডলার আয় করেন। ফোর্বস রিয়্যাল টাইম ট্র্যাকার অনুযায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩০০ কোটি ডলার বা প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২৫ সালে ফোর্বস জানিয়েছে, তাঁর সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

১২ ১৭

১৯৫৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কের কুইন্সে জন্ম পলের। বাবা ছিলেন ইকুয়েডরের অধিবাসী। মা ছিলেন লিথুয়ানিয়া এবং রোমানিয়ার ইহুদি অভিবাসী কন্যা। পলসন ছাত্রজীবনে বেশ মেধাবী ছিলেন। ১৯৭৮ সালে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ বিজনেস অ্যান্ড পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে স্নাতক হন। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রাক্তনী ১৯৮০ সালে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৩ ১৭

বেশ কিছু দিন ধরেই ভার্চুয়াল মুদ্রা বা ক্রিপ্টো মুদ্রায় বিনিয়োগের পক্ষে সওয়াল করে এসেছেন আমেরিকার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরই বিটকয়েনে বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। জনপ্রিয় এই ক্রিপ্টো মুদ্রার কৌশলগত ভান্ডার (স্ট্র্যাটেজিক রিজ়ার্ভ) গড়ে তুলতে চাইছেন তিনি।

১৪ ১৭

বর্তমানে ওয়াশিংটনের হাতে এই ধরনের প্রায় দু’লক্ষ ক্রিপ্টো মুদ্রা রয়েছে। এর আনুমানিক বাজারমূল্য ২,১০০ কোটি ডলার। সূত্রের খবর, আগামী বছর জুলাই মাস থেকে বিটকয়েন জমানোর কাজ শুরু করবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। তার জন্য হলুদ ধাতুর ভান্ডার ভেঙে বিটকয়েনে বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথাও শোনা গিয়েছিল বিভিন্ন মহলে।

১৫ ১৭

ট্রাম্পের এই ঘোষণার অনেক আগে থেকেই বিটকয়েনে বিনিয়োগকে ঝুঁকির বিনিয়োগ বলে উল্লেখ করেছিলেন ধনকুবের পল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আজ যতই লেনদেন হোক না কেন, কয়েক বছর পর তা মূল্যহীন প্রমাণিত হবে। এক বার এর উচ্ছ্বাস কমে গেলে সেগুলির মূল্য শূন্যে নেমে যাবে। আমি কাউকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেব না।’’

১৬ ১৭

বিশ্ব বাজারে প্রতি দিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সোনার দাম। মজুত থাকা সোনার দরও হয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। বেশির ভাগ ধনকুবেরই সোনার বিনিময়ে বাণিজ্য তহবিলের মাধ্যমে এবং সোনার খনির কোম্পানিগুলির স্টকে বিনিয়োগ করে কাগজের সোনার উপর বিনিয়োগ করেন। পলসনও তাঁর ব্যতিক্রম নন।

১৭ ১৭

তাঁর সোনার ভাঁড়ারে টন টন হলুদ ধাতুর বদলে দেখা মিলতে পারে হলুদ কাগজের। সোনার খনিগুলির অংশীদারি থেকে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন জন পলসন।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement