Elvish Yadav

গোখরোর বিষ দিয়ে নেশা, জি২০ সম্মেলনে ‘টব চুরি’! বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন বিগ বস্ জয়ী এলভিশ

শুক্রবার থেকে সংবাদের শিরোনামে গুরুগ্রামের এই ইউটিউবার তথা সমাজমাধ্যম প্রভাবী। এ বার বড়সড় অভিযোগ উঠেছে এলভিশের বিরুদ্ধে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৩০
Share:
০১ ১৬

এলভিশ যাদব। এই নামটা এখন আর খুব একটা অজানা বা অচেনা নয়। ইউটিউবার, স্ট্রিমার এবং গায়ক হিসাবে জনপ্রিয় হলেও, সেই জনপ্রিয়তাকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে রিয়্যালিটি শো ‘বিগ বস্‌’। ‘বিগ বস্‌ ওটিটি ২’ জেতার পর জোর চর্চা হয়েছিল হরিয়ানার গুরুগ্রামের এই ইউটিউবারকে নিয়ে।

০২ ১৬

২০১৬ সালে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন এলভিশ। ধীরে ধীরে সেই ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে পরিচিতি বাড়তে থাকে তাঁর। ২০১৯ সালে আরও একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন। চলতি বছর আরও একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন এলভিশ।

Advertisement
০৩ ১৬

শুধু ইউটিউব চ্যানেলই নয়, সমাজমাধ্যম প্রভাবী এলভিশের পোশাকের দু’টি ব্র্যান্ডও রয়েছে। একটি অসরকারি সংগঠনও (এনজিও) চালান এলভিশ। দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষা এবং অন্নসংস্থান করে এই সংস্থা।

০৪ ১৬

শুক্রবার থেকে সংবাদের শিরোনামে গুরুগ্রামের এই ইউটিউবার তথা সমাজমাধ্যম প্রভাবী। এ বার বড়সড় অভিযোগ উঠেছে এলভিশের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় একটি রেভ পার্টিতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। দাবি, সেই রেভ পার্টির আয়োজক ছিলেন এলভিশ যাদব। তবে রেভ পার্টির জন্য বিতর্ক নয়, বিতর্কের সূত্রপাত অন্য বিষয়ে।

০৫ ১৬

এই রেভ পার্টির বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের হয়েছে, পুলিশের দাবি, সেখানে এলভিশের নাম রয়েছে। বিতর্ক কী নিয়ে? পুলিশের দাবি, যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, বিদেশি মহিলাদের নিয়ে অবৈধ ভাবে এই রেভ পার্টির আয়োজন করেছিলেন এলভিশ। শুধু তাই-ই নয়, এই পার্টিতে মাদক হিসাবে সাপের বিষ ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আর বিতর্ক এখান থেকেই। বিপুল টাকার বিনিময়ে এই বিষ বিক্রি হয় বলে দাবি পুলিশের।

০৬ ১৬

নয়ডার সেক্টর ৫১-য় আয়োজিত সেই রেভ পার্টিতে বৃহস্পতিবার তল্লাশি অভিযানে গিয়েছিল পুলিশ এবং বন্যপ্রাণ দফতরের একটি দল। পুলিশ জানিয়েছে, পার্টি থেকে পাঁচ মাদকপাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযানের সময় পার্টি থেকে উদ্ধার হয় ন’টি বিষধর সাপ। তার মধ্যে ছিল পাঁচটি গোখরো, দু’টি দু’মুখো সাপ, একটি লাল সাপ এবং একটি অজগর। অভিযুক্তদের কাছ থেকে ২০-২৫ মিলিলিটার সাপের বিষ উদ্ধার হয়েছে।

০৭ ১৬

মেনকা গান্ধী পরিচালিত ‘পিপলস ফর অ্যানিম্যালস’ (পিএফএ) –এর পশুকল্যাণ আধিকারিক গৌরব গুপ্ত নয়ডার ৪৯ সেক্টর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে একটি এফআইআর হয়। সেই এফআইআরে বলা হয়েছে, সঙ্গীদের নিয়ে নয়ডা এবং এনসিআরের খামারবাড়িতে এলভিশ যাদব জ্যান্ত সাপ এবং সাপের বিষ নিয়ে ভিডিয়ো শুট করেন এবং বৈআইনি ভাবে রেভ পার্টির আয়োজন করেন। শুধু তাই-ই নয়, ওই পার্টিতে বিদেশি মহিলাদের ডেকে এনে মাদক হিসাবে সাপের বিষ পান করেন।

০৮ ১৬

নয়ডার রেভ পার্টিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ রাহুল, টিটুনাথ, জয়করণ, নারায়ণ এবং রবিনাথ নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, এই পাঁচ জন রেভ পার্টিতে বিষধর সাপ আনার ব্যবস্থা করেছিল। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে এলভিশ বলেছেন, “আমার সম্পর্কে যে তথ্য এবং অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এক শতাংশও সত্যতা নেই এই অভিযোগের। আমি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করতে রাজি আছি।”

০৯ ১৬

এই বিতর্কের মধ্যেই এলভিশের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। যদিও সেই ভিডিয়ো এবং ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ভিডিয়ো এবং ছবিতে এলভিশকে কখনও বিদেশি তরুণীর সঙ্গে সাপ নিয়ে দেখা গিয়েছে। কখনও আবার তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে সাপ নিয়ে দেখা গিয়েছে।

১০ ১৬

পিএফএ-র চেয়ারপার্সন মেনকা গান্ধীর দাবি, এক সপ্তাহ আগে উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনে তল্লাশি চালিয়ে আটটি সাপ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃতেরা পুলিশের কাছে জানিয়েছিলেন, তাঁরা সাপের বিষ সরবরাহ করেন। সেই বিষ মাদক তৈরিতে কাজে লাগে। সেই গ্যাংয়ের লোকেরাই এলভিশের বিষয়ে জানিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি। মেনকা গান্ধী এলভিশের গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, “এলভিশ যদি নির্দোষই হন, তা হলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন? এই ব্যক্তি টিআরপি বাড়ানোর জন্য যা খুশি করেন। গলায় সাপ জড়িয়ে ঘোরেন। যা বেআইনি। এলভিশকে দ্রুত গ্রেফতার করা উচিত।”

১১ ১৬

তবে শুধু গোখরোকাণ্ডই নয়, এর আগেও বিতর্কে নাম উঠে এসেছে এলভিশের। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ফুলগাছের টব দিয়ে গুরুগ্রামকে সাজানো হয়েছিল। সেই টব চুরির ঘটনাতেও এলভিশের নাম জড়ায়। হরিয়ানা পুলিশ এই ঘটনায় মনমোহন যাদব নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে থেকে দাবি করা হয়, যে গাড়ি করে ওই ব্যক্তি ফুলের টব চুরি করে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই গাড়িটি ব্যবহার করেন এলভিশ যাদব। যদিও সেই অভিযোগ নস্যাৎ করেছিলেন এলভিশ। পাল্টা দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই।

১২ ১৬

সাপের বিষ নিয়ে কেন এত হইচই? সাপ নিয়ে খেলা দেখানো, সাপকে ঘরে রাখা এবং এই সরীসৃপের বিষ বার করে নিয়ে নেশার জন্য তা ব্যবহার করা গুরুতর অপরাধ হিসাবে মানা হয়। এই ধরনের কাজের জন্য জেল পর্যন্ত হতে পারে। প্রসঙ্গত, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ, ১৯৭২ আইন অনুযায়ী, ভারতে সাপেদের সংরক্ষিত করা হয়েছে। সাপেদের পাচার রুখতেই এই আইন আনা হয়েছে। নিয়ম বলছে, যদি কোনও নিষিদ্ধ সাপ বা শিডিউল ১-এর মধ্যে পড়ে এ রকম সাপেদের (গোখরো, অজগর ইত্যাদি) যদি কেউ অপব্যবহার করেন, তা হলে জেল এবং জরিমানা দুটোই হতে পারে।

১৩ ১৬

কোনও নিষিদ্ধ সাপ বা শিডিউল ১ অনুযায়ী, সাপের অপব্যবহার করলে বা সাপের কোনও ক্ষতি করলে অভিযুক্তের তিন থেকে সাত বছরের জেল হতে পারে। সঙ্গে হতে পারে এক লক্ষ টাকা জরিমানা।

১৪ ১৬

গোখরো এবং অন্য বিষধর সাপের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে বিষের জন্য এই সাপের চাহিদা বাড়ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গোখরোর এক গ্রাম বিষের দাম চার হাজার থেকে ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সাপ যত বিষধর হবে, তার উপর এই দামের বিষয়টি নির্ভর করবে। আন্তর্জাতিক বাজারে কোটিতেও বিক্রি হয় সাপের বিষ। এক লিটার বিষের দাম কয়েক কোটি টাকা।

১৫ ১৬

নেশার জন্য গোখরোর বিষ ব্যবহারের আগে তা কয়েকটি ধাপে ‘প্রসেস’ করে এমন পর্যায়ে নিয়ে আসা হয় যাতে ওই বিষ দিয়ে তৈরি মাদক সেবন করলে প্রাণহানি না হয়। মোটামুটি ভাবে ২০০টি গোখরো থেকে এক লিটার বিষ পাওয়া যায়।

১৬ ১৬

মাদকের থেকে অনেক বেশি প্রভাব ফেলে সাপের বিষের নেশা। আর সেই নেশা অনেক সময় পর্যন্ত থাকে বলে দাবি সর্পবিশারদদের। তবে অতিরিক্ত ডোজ় হলেই মৃত্যু অবধারিত। বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী, রেভ পার্টিতে সাপের বিষের তৈরি মাদকের পাশাপাশি জিভে সরাসরি সাপের ছোবলও নেওয়া হয়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement