ITI exam 2025 topper

‘বধাই হো!’ পানদোকানির ছেলেকে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, আইটিআইতে ৬০০য় ৬০০ পেল ক্যানিংয়ের সায়ন

চলতি বছর আইটিআই (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) পরীক্ষায় তাকলাগানো ফল করেছেন ক্যানিংয়ের সায়ন নস্কর। খোদ প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এই সুবাদে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সায়ন এখন গ্রামের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুখ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৩:২০
Share:
০১ ১৬

ভাঙাচোরা একচালা বাড়ি। বাবার ছোট্ট পান-বিড়ির দোকান, মা আশাকর্মী। পরিবার যে খুব সচ্ছল নয়, তা পরিষ্কার। কিন্তু শত প্রতিকূলতা পেরিয়েও সায়ন আজ এগিয়ে চলেছে নিজের স্বপ্নপূরণের তাগিদে।

০২ ১৬

সায়ন নস্কর। ক্যানিং থানার তালদি গ্রাম পঞ্চায়েতের বয়ারসিং গ্রামে বাড়ি তাঁর। তিনিই এখন গ্রামের সবচেয়ে উজ্জ্বল মুখ। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়ে এসেছেন বলে কথা!

Advertisement
০৩ ১৬

চলতি বছর আইটিআই (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) পরীক্ষায় তাকলাগানো ফল করেছেন তিনি। গোটা পূর্ব ভারতের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন। ৬০০তে ৬০০! আর তার পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে ক্যানিং-সহ গোটা বাংলায়।

০৪ ১৬

বিগত কিছু বছর ধরে আইটিআই শীর্ষস্থানীয়দের কেন্দ্রের তরফে সম্মানিত করা হয়। তবে প্রতি বার প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন না। অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকেরা সংবর্ধনা দিয়ে থাকেন। কিন্তু এ বার তা হয়নি।

০৫ ১৬

চলতি বছরে সারা দেশের মধ্যে মোট ৪৬ জন কৃতীকে পুরস্কৃত করেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। এ রাজ্য থেকে মোট ৫ জন সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপককে ডাকা হয়েছিল, যার মধ্যে সায়নেরও নাম ছিল।

০৬ ১৬

সায়ন বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমার হাতে শংসাপত্র দিয়ে বলেন, ‘বধাই হো’। আমি চেষ্টা করেছি ভাল ফল করার। তবে একেবারে শীর্ষস্থানে নাম আসবে তা কল্পনার বাইরে ছিল।’’

০৭ ১৬

সায়নের বাবা সুব্রত নস্কর। গ্রামেই একটি ছোট পান-বিড়ির দোকান সামলান তিনি। আর মা রিনা নস্কর পেশায় আশাকর্মী। বাড়িতে অর্থনৈতিক টানাপড়েন থাকলেও সুব্রত ছেলের গায়ে সে আঁচ আসতে দেননি কখনও।

০৮ ১৬

সায়ন বলেছেন, ‘‘বাবা-মা কেউই পড়াশোনার জন্য টাকা খরচ করতে কখনওই পিছপা হয়নি। বরং আরও উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন।’’ এমন ফলাফলের কৃতজ্ঞতা সায়ন তাঁর বাবা-মা এবং স্কুল-কলেজকেই উৎসর্গ করেছেন।

০৯ ১৬

সায়নের এখন অনেক বড় দায়িত্ব রয়েছে। বাড়িতে দাদা রয়েছেন তাঁর। কিন্তু বিশেষ ভাবে সক্ষম তিনি। তাই বাবা-মায়ের সঙ্গে দাদার দেখভালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দ্রুত নিতে চান সায়ন।

১০ ১৬

ক্যানিং থানার তালদি মোহনচাঁদ স্কুল থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন সায়ন। তিনি যে ছোট থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন, তা কিন্তু নয়। তবে ধীরে ধীরে নিজের একাগ্রতা এবং কঠোর অনুশীলনই এমন ফল এনে দিয়েছে বলে মনে করেন ওঁর স্কুলের কর্তৃপক্ষ।

১১ ১৬

স্কুলের প্রধানশিক্ষক মানস পাণিগ্রাহী বলেন, ‘‘ও মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ষাট শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছিল। নিজের চেষ্টা ছিল বরাবর। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম উচ্চ স্তরে ও ঠিক সাফল্য পাবে।’’

১২ ১৬

কম্পিউটারের প্রতি টান ছোট থেকেই ছিল। কিন্তু বাড়িতে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কিছুই ছিল না। স্কুল থেকেই যতটুকু শেখা। আলাদা ভাবে প্রশিক্ষকও ছিল না সায়নের।

১৩ ১৬

শুরুতে কলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও উচ্চ স্তরে পড়তে গিয়ে সায়ন বুঝেছিলেন কম্পিউটার নিয়ে পড়লেই ভাল ফল হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেইমতো স্কুল পাশের পরে প্রথমে ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজে স্নাতক স্তরে ভর্তি হন। এর পর কলেজ পাশ করে এক বছরের জন্য আইটিআইতে কম্পিউটার অপারেটর নিয়ে পড়া শুরু করেন।

১৪ ১৬

এখন সায়নের কাছে কম্পিউটার রয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। পাশাপাশি অপেক্ষায় রয়েছে কলেজ থেকেও দেওয়া ক্যাম্পাসিংয়ের।

১৫ ১৬

কিন্তু যে কোনও চাকরি করতে নারাজ সায়ন। প্রয়োজনে নিজেকে আরও সময় দেবেন, কিন্তু ভাল চাকরি হলে তবেই পা বাড়াবেন বলে মনে করেন তিনি। এর পরে আরও পড়ার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।

১৬ ১৬

অবসর সময়ে ভালবাসেন ক্রিকেট দেখতে, গান শুনতে। মাঠে নেমে নিজের খেলার ইচ্ছে থাকলেও পড়াশোনার চাপে তা আর হয়ে ওঠে না। এখন সায়নের দু’চোখ জুড়ে শুধু নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন। বাবা-মা এবং দাদার পাশে দাঁড়াতে হবে যে!

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement