Cyclone Sitrang

বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রং’! কেন এই নাম? কবে থেকেই বা শুরু হবে এর প্রভাব?

বাংলা এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রং’! এই আসন্ন ঘূর্ণিঝড় নিয়ে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে নবান্নের তরফেও। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ১৫:০১
Share:
০১ ২২

‘ফণি’, ‘আমপান’, ‘ইয়াস’-এর পর এ বার বাংলার দিকে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রং’! হ্যাঁ, আন্দামান সাগরে তৈরি হতে চলা ঘূর্ণিঝড়ের পোশাকি নাম আপাতত রাখা হয়েছে এটাই। শুক্রবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে জেলাশাসকদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। উপকূল থেকে মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

০২ ২২

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আন্দামান সাগরে ক্রমশই ঘনীভূত হচ্ছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। আর সেই ঘূর্ণাবর্ত ক্রমেই শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হতে পারে গভীর নিম্নচাপে। পরে তা আরও শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

Advertisement
০৩ ২২

যদিও এখনও তৈরি হতে চলা এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম হাওয়া অফিসের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী সাগরে তৈরি কোনও ঘূর্ণাবর্ত, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তবেই আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা করা হয়। আন্দামান সাগরের ঘূর্ণাবর্ত প্রতিনিয়ত শক্তি বাড়ালেও এখনও পর্যন্ত তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়নি। তবে আবহবিদদের মতে, এই ঘূর্ণাবর্ত থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

০৪ ২২

‘সিত্রং’ নামটি তাইল্যান্ডের দেওয়া। উচ্চারণ অনুযায়ী, ‘সি-তরাং’।

০৫ ২২

‘সিত্রং’ আসলে তাইল্যান্ডের বাসিন্দাদের একটি পদবি। ভিয়েতনামের ভাষায় আবার এর অর্থ পাতা। ২০২০ সালে আবহাওয়া দফতরের তালিকাভুক্ত ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে একটির নাম দেওয়া হয় ‘সিত্রং’।

০৬ ২২

হাওয়া অফিস ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছে। ক্রমশই এই নিম্নচাপ অঞ্চলের পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

০৭ ২২

২২ অক্টোবর শনিবার পূর্ব-মধ্য এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এই ঘূর্ণাবর্ত। পরে এই নিম্নচাপ আরও শক্তি বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

০৮ ২২

এর পর ২৩ অক্টোবর অর্থাৎ কালীপুজোর আগের দিন পূর্ব-মধ্য এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ পরিণত হতে পারে গভীর নিম্নচাপে। পরে এই নিম্নচাপ উত্তরমুখে বেঁকে যেতে পারে বলেও আবহবিদরা জানিয়েছেন।

০৯ ২২

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কালীপুজোর দিনই। ২৪ অক্টোবর অর্থাৎ সোমবার কালীপুজো। সেই দিনই পশ্চিম-মধ্য এবং সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস।

১০ ২২

আবহবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পর তা ধীরে ধীরে বঙ্গোপসাগরের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাবে। ২৫ অক্টোবর এই ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলের দিকে। তবে এই ঘূর্ণিঝড় আদৌ পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের কোনও উপকূলে আছড়ে পরবে কি না, তা নিশ্চিত করেননি আবহবিদরা।

১১ ২২

উপকূলে সরাসরি আছড়ে না পরলেও ‘সিত্রং’-এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী তিন জেলা— উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

১২ ২২

বৃষ্টিপাত হতে পারে কলকাতাতেও। কালীপুজোর দিন থেকে কলকাতায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।

১৩ ২২

‘সিত্রং’-এর কারণে সামনের সোমবার বঙ্গোপসাগরে প্রতি ঘণ্টায় হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। কোথাও কোথাও ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টা প্রতি ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

১৪ ২২

মঙ্গলবার আরও বাড়তে পারে ঝোড়ো হাওয়ার গতি। সমুদ্রে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে মঙ্গলবার। সেই গতিবেগ ১১০ কিলোমিটারের মাত্রাও ছাড়াতে পারে। ঝোড়ো হাওয়ার তেজ থাকবে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতেও।

১৫ ২২

হাওয়া অফিসের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার বিষয়ে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২৩ অক্টোবর রবিবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে বারণ করা হয়েছে। যে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদেরও ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ২২ অক্টোবর মধ্যেই।

১৬ ২২

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ‘সিত্রং’-এর প্রভাবে সামনের সপ্তাহের সোম ও মঙ্গলবার উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। সমুদ্র উপকূলের বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে হাওয়া অফিস।

১৭ ২২

‘সিত্রং’-আবহে উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টিপাত হতে পারে এই জেলাগুলিতে। তাই এই জেলাগুলির প্রাথমিক স্কুলগুলিকে আশ্রয় শিবির হিসাবে প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।

১৮ ২২

জেলার স্কুল ইনস্পেক্টরদেরও আলাদা করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়েছে, আপৎকালীন প্রয়োজনে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলগুলিকে আশ্রয় শিবির হিসাবে ব্যবহার করা হতে পারে। প্রাথমিক স্কুলগুলিতে জায়গার অভাব দেখা দিলে স্থানীয় মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলিকেও আশ্রয় শিবির হিসাবে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৯ ২২

এর আগেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে একাধিক বার তছনছ হতে দেখা গিয়েছে এই উপকূলবর্তী জেলাগুলির বিস্তীর্ণ এলাকাকে। দুর্বিষহ হতেও দেখা গিয়েছে জনজীবনকে। তাই ‘সিত্রং’ ধেয়ে আসার পূর্বাভাস আসার পর থেকেই আশঙ্কা ফুটে উঠেছে এই এলাকাগুলির মানুষদের চোখে-মুখে।

২০ ২২

প্রসঙ্গত, দেশবাসী এখন উৎসবের আমেজে মেতে রয়েছে। সপ্তাহ শেষে কালীপুজো এবং দীপাবলির আনন্দে মেতে উঠার জন্যও প্রস্তুত সাধারণ মানুষ।

২১ ২২

তবে এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি দেশবাসীর আলো-উৎসব উদ্‌যাপনে ভাটা আনতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। ক্ষতি হতে পারে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও।

২২ ২২

দুর্গাপুজোর সময়ও বাংলা-সহ একাধিক রাজ্যে বৃষ্টিপাতের কারণে উৎসবের মজা মাটি হয়েছিল। এ বার কালীপুজোতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না, তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে দেশবাসীর মনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement