What is DIGIPIN

প্রয়োজন ফুরোল ঠিকানা-পিনকোডের, রাস্তা বাতলে দেবে ‘ডিজিপিন’! কী ভাবে কাজ করবে ডাক বিভাগের ‘ডিজিটাল অবতার’?

ভারতীয় ডাক বিভাগ একটি নতুন ঠিকানা ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে। প্রতিটি ঠিকানার জন্য থাকবে একটি ডিজিটাল আইডি। সেই আইডি দিয়ে প্রতিটি ঠিকানা সঠিক এবং দ্রুত খুঁজে বার করতেই এই ‘ডিজিটাল বিপ্লব’।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৩:০৭
Share:
০১ ১৫

ঠিকানার জন্য একটি স্বতন্ত্র ডিজিটাল আইডি। পরিচয়ের জন্য আধার এবং ডিজিটাল লেনদেনের জন্য ইউপিআইয়ের পর বাড়ির ঠিকানার জন্য বিশেষ ১২ সংখ্যার একটি পিন চালু করতে চলেছে কেন্দ্র। চিঠি বা পার্সেল পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে বলে মনে করছে ভারতীয় ডাক বিভাগ। নয়া এই ব্যবস্থায় পিনকোডের পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে একটি আলফা নিউমেরিক ১২ অঙ্কের সংখ্যা।

০২ ১৫

এই সংখ্যাটিকে ‘ডিজিপিন’ নামে বর্ণনা করা হয়েছে। এই নতুন ঠিকানা ব্যবস্থা চালু করার নেপথ্যে অবদান রয়েছে আইআইটি হায়দরাবাদ এবং ইসরোর। দুই সংস্থার সহযোগিতায় তৈরি করা হয়েছে ‘ডিজিপিন’। লক্ষ্য, দেশের সঠিক ডিজিটাল ঠিকানা পরিকাঠামোকে উন্নত করে গড়ে তোলা। সেই অর্থে দেশের অন্যতম ডিজিটাল গভর্ন্যান্স উদ্যোগী হতে চলেছে ডিজিটাল পোস্টাল ইনডেক্স নম্বর বা ডিজিপিন নম্বরটি।

Advertisement
০৩ ১৫

আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে আপনার ঠিকানার শেষে যে পিনকোডটি উল্লেখ করা হয় তার ব্যবহার কী? পিনকোড হল ভারতের কোনও এলাকা বা অবস্থান শনাক্ত করার জন্য ডাক বিভাগ নির্ধারিত একটি ছয় সংখ্যার নম্বর। ১৯৭২ সালে চালু হয় পিনকোড ব্যবস্থা। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, মোবাইল-ইন্টারনেটের যুগে এক দিকে যেমন চিঠি লেখার অভ্যাস কমেছে, তেমনই আরও উদাসীন হয়েছে ডাক বিভাগ।

০৪ ১৫

পিনকোডের সীমাবদ্ধতা প্রচুর। সঠিক পিনকোড দেওয়া সত্ত্বেও অনেক সময়ই নির্ধারিত ঠিকানায় চিঠিপত্র সময়ে এসে পৌঁছোতে পারে না। এই বিষয়টি মাথায় রেখে, ভারতীয় ডাক বিভাগ একটি নতুন ঠিকানা ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে। প্রতিটি ঠিকানার জন্য একটি ডিজিটাল আইডি। সেই আইডি দিয়ে প্রতিটি ঠিকানা সঠিক এবং দ্রুত খুঁজে বার করতেই এই ‘ডিজিটাল বিপ্লব’।

০৫ ১৫

এ বার থেকে কারও ঠিকানা খুঁজতে প্রয়োজন হবে না রাস্তা, গলি বা বাড়ির নাম। তার বদলে ডাক বিভাগ একটি উপযুক্ত এবং জিয়োকোডেড ঠিকানার কাঠামো তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। এই ব্যবস্থায় ভারতের যে কোনও স্থানের পরিচয় সূচিত হবে ডিজিপিন দিয়ে। ঠিকানা বোঝাতে পিনকোড ও ডিজিপিন উভয়ই ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

০৬ ১৫

নতুন ব্যবস্থায় গোটা দেশকে ৪ মিটার x ৪ মিটারের ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করা হবে। এই ১৬ বর্গমিটারের নিরিখে মেপে প্রতিটি অংশকে একটি অনন্য পরিচয়পত্র (ডিজিপিন) দেওয়া হবে। এমনকি সমুদ্র বা উপকূল সীমান্তও বাদ যাবে না। দেশের প্রতিটি ১৬ বর্গমিটারের একটি একটি অংশকে চিহ্নিত করা হবে এক একটি ডিজিপিন দিয়ে।

০৭ ১৫

এটি প্রচলিত পিনকোডের মতো নয়, যেখানে এক একটি বিস্তীর্ণ এলাকার জন্য একটি পিনকো়ড ব্যবহার করা হয়েছে। পরিবর্তে ছোট ছোট এলাকায় ভাগ করে পিন তৈরি করে চিঠি, নথি ও পার্সেল ডেলিভারিকে আরও সহজ করে তোলা হবে। যে সব এলাকা ঠিকানা না থাকার জন্য সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হত তাদের পরিষেবার আওতায় আনতেই এই লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র।

০৮ ১৫

ডিজিপিনের কোডটি তৈরি হবে অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশের উপর ভিত্তি করে। এই ব্যবস্থার সাহায্যে যে কোনও রাস্তা, গলি বা গ্রামের সঠিক ঠিকানার হদিস সহজেই পাওয়া যাবে। এমন পরিস্থিতিতে, কোনও কুরিয়র বা কোনও ব্যক্তির আপনার ঠিকানায় পৌঁছোতে কোনও সমস্যা হবে না। এই ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হল ভারতের সমস্ত ঠিকানাকে একই ছাদের নীচে এনে তার পরিকল্পিত রূপ দেওয়া।

০৯ ১৫

কী ভাবে পাওয়া যাবে এই অনন্য কোডটি? ডিজিপিন খুঁজে পেতে প্রথমে ডিজিপিনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর, সেখানে সম্পূর্ণ ঠিকানা বা জিপিএসের অবস্থান লিখতে হবে। এর পর সিস্টেমটি আপনার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আপনাকে ১২-অক্ষরের একটি অনন্য কোড দেবে। এটি হবে আপনার ডিজিপিন ঠিকানা।

১০ ১৫

পিয়ন বা ডেলিভারি কর্মী ঠিকানায় লেখা ডিজিপিনের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ দেখে সোজা উপস্থিত হতে পারবেন ঠিকানায়। তবে এর জন্য প্রয়োজন হবে গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমযুক্ত একটি যন্ত্র বা মোবাইলের। ডাক বি‌ভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ডিজিপিনের পোর্টাল ও অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।

১১ ১৫

ডাক বিভাগের এক কর্তা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ভৌগোলিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল ঠিকানা ব্যবস্থা চালু হলে ডেলিভারির ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে খুব সহজেই। ঝঞ্ঝাটবিহীন পরিষেবা দেওয়া-নেওয়ার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ ও ডেলিভারি সংস্থা উভয়ই। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় কার্যকরী ভূমিকা নেবে এই ডিজিপিন।

১২ ১৫

সরকারি তথ্য বলছে ঠিকমতো ঠিকানা না থাকার কারণে গ্রাহক ও ডেলিভারি সংস্থাগুলির ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ কোটি থেকে ৪০০ কোটি ডলার। সময় ও অর্থনৈতিক অপচয় রুখতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিতে পারবে এই নতুন ব্যবস্থা। ডিজিটাল পিন ব্যবস্থাটি চালু হলে সরকারি পরিষেবা, স্বাস্থ্যসেবা, নানা অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করতে পারবে দুর্গম এলাকাগুলি, এমনটাই মত ডাক বি‌ভাগের।

১৩ ১৫

জঙ্গল ও পাহাড়ি অঞ্চলগুলির মতো প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে ডাক পরিষেবা পৌঁছোতে কখনও কখনও ২০-২৫ দিন সময় পেরিয়ে যায়। উত্তরাখণ্ড, হিমাচল ও কাশ্মীরের মতো পাহাড়ি এলাকায় যাঁরা বাস করেন তাঁরা এই সমস্যার সঙ্গে সম্যক ভাবে পরিচিত। ভারতে গ্রামীণ এলাকায় এমনও জায়গা রয়েছে যেখানে বাড়ির কোনও নম্বর নেই। বাসিন্দাদের নাম ও নির্দিষ্ট ‘ল্যান্ডমার্ক’ ব্যবহার করে ডেলিভারি করা হয়।

১৪ ১৫

সরকারি ভাবে জানা গিয়েছে, এই ব্যবস্থাটি প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষামূলক ভাবে কার্যকর করার কথা চিন্তা করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে কেন্দ্র। ধীরে ধীরে জনগণের মতামতের উপর নির্ভর করে তা গোটা দেশে বাস্তবায়নের পথে হাঁটবে সরকার।

১৫ ১৫

ডিজিপিন চালু করার আরও একটি সদর্থক দিক হতে পারে এর গোপনীয়তা। ব্যক্তিগত ভাবে কেউ চাইলে তবেই এই ডিজিপিন পাবে ডেলিভারি সংস্থা ও তাদের কর্মীরা। চাইলেই ইকমার্স ও ডেলিভারি সংস্থা ঠিকানা সংগ্রহ করে তা বিক্রি করতে পারবে না। ডিজিটাল পিন চালু হলে অনিয়ন্ত্রিত ঠিকানা ব্যবহারে রাশ পরানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement