Asia’s Biggest Data Centre

তথ্যভান্ডার গড়তে ৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ! দেশের দক্ষিণে বন্দর-শহরে এশিয়ার সর্ববৃহৎ ডেটা সেন্টার গড়ছে গুগ্‌ল

দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে এ বার এশিয়ার সর্ববৃহৎ তথ্যভান্ডার গড়ে তুলতে ৬০০ কোটি ডলার লগ্নি করছে মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগ্‌ল। ভারতের জন্য এই ডেটা সেন্টার ‘গেম চেঞ্জার’ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১০:৩৭
Share:
০১ ১৫

আর ‘অনাদরে’ ফেলে রাখা নয়। ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজের জায়গা পাকা করতে এ বার বিশাল এক তথ্যভান্ডার গড়তে চলেছে ভারত। সরকারের এ হেন সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদারেরা। তাঁদের কথায়, আগামী দিনে তথ্যের নিরিখে ‘খেলা ঘোরানো’র ভূমিকা নেবে ওই ডেটা সেন্টার। পাশাপাশি, তথ্য সুরক্ষার বিষয়টিও অনেকটা মজবুত করতে পারবে প্রশাসন।

০২ ১৫

সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ দেশে বিরাট তথ্যভান্ডার তৈরি করতে ৬০০ কোটি ডলার লগ্নি করছে মার্কিন টেক জায়ান্ট সংস্থা গুগ্‌ল। দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে তৈরি হবে ওই ডেটা সেন্টার। এক গিগাওয়াট পর্যন্ত তথ্যধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন ওই তথ্যভান্ডারের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো তৈরি করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতে এই ধরনের বিনিয়োগ প্রথম বার করছে সংশ্লিষ্ট মার্কিন টেক জায়ান্ট।

Advertisement
০৩ ১৫

অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের দুই পদস্থ আধিকারিকের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বন্দর-শহর বিশাখাপত্তনমে সংশ্লিষ্ট তথ্যভান্ডারটিকে তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর জন্য ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে গুগ্‌ল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুতে চলবে ওই ডেটা সেন্টার। পরিবেশ দূষণের হার কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

০৪ ১৫

গুগ্‌ল সূত্রে খবর, এশিয়ার সর্ববৃহৎ তথ্যভান্ডার অন্ধ্রপ্রদেশে তৈরি করবে তারা। সেই কারণেই দক্ষিণী রাজ্যটিতে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করছে এই মার্কিন টেক জায়ান্ট। বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং তাইল্যান্ডে এই ধরনের ডেটা সেন্টার রয়েছে গুগ্‌লের। ভারতেরটি সেগুলিরই সম্প্রসারিত অংশ হিসাবে কাজ করবে বলে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

০৫ ১৫

চলতি বছরের এপ্রিলে নতুন ‘পারস্পরিক শুল্ক নীতি’ চালু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে বিশ্ব জুড়ে তৈরি হয় আর্থিক অস্থিরতা। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতেও বিশ্ব জুড়ে ৭,৫০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ থেকে পিছিয়ে আসছে না গুগ্‌ল। এ ব্যাপারে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছে মার্কিন টেক জায়ান্ট।

০৬ ১৫

গত জুলাইয়ে সিঙ্গাপুর সফরে যান অন্ধ্রপ্রদেশের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী নারা লোকেশ। সেখানকার সরকারি আধিকারিক এবং শিল্পপতিদের সঙ্গে বিনিয়োগের ব্যাপারে একগুচ্ছ বৈঠক করেন তিনি। সিঙ্গাপুরে তাঁর সঙ্গে গুগ্‌লের কোনও প্রতিনিধিদল দেখা করতে এসেছিল কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। যদিও সূত্রের খবর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতেই বিশাখাপত্তনমে তথ্যভান্ডার তৈরির বিষয়টি একরকম পাকা করে ফেলেন তিনি।

০৭ ১৫

গুগ্‌লের পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশে তৈরি হবে সিফাই টেকনোলজিসের একটি ডেটা সেন্টার। ৫৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই তথ্যভান্ডার নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন নারা লোকেশ। সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে তিনি বলেন, ‘‘ডেটা সেন্টারের জন্য আমাদের রাজ্যে প্রথম বার লগ্নি করতে চলেছে সিফাই। অক্টোবরে এই সংক্রান্ত আরও বড় ঘোষণা করব আমরা।’’ তখনই আনুষ্ঠানিক ভাবে গুগ্‌লের নাম বলা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

০৮ ১৫

লোকেশ জানিয়েছেন, ১.৬ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডেটা সেন্টার তৈরির বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে শূন্য থেকে মোট ছয় গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তথ্যভান্ডার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে অন্ধ্র সরকারের। সে ক্ষেত্রে কোন কোন টেক জায়ান্টের বিনিয়োগ দক্ষিণী রাজ্যটিতে আসবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

০৯ ১৫

বর্তমানে দেশে চালু রয়েছে ১.৪ গিগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তথ্যভান্ডার। লোকেশের দাবি, আগামী দু’বছরের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে ১.৬ গিগাওয়াটের ডেটা সেন্টার তৈরি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা বিশাখাপত্তনমে তিনটি কেব্‌ল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরির জন্য কাজ করছি। এখানে কেব্‌ল নেটওয়ার্ক তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকের মুম্বইয়ের তুলনায় যেটা হবে দ্বিগুণ।’’

১০ ১৫

বিশ্বব্যাপী তথ্য আদানপ্রদান নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত থাকে কেব্‌ল ল্যান্ডিং স্টেশন। এগুলিকে মূলত ডেটা সেন্টারের গা ঘেঁষে তৈরি করা হয়। সমুদ্রের নীচে ছড়িয়ে থাকা তার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কেব্‌ল ল্যান্ডিং স্টেশন। পরে সেটা সংরক্ষণের জন্য ওই স্টেশন তথ্য পাঠিয়ে দেয় ডেটা সেন্টারে।

১১ ১৫

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র ব্যাপক প্রচার চালায় কেন্দ্র। দেশ জুড়ে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়েছে ‘ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস’ বা ইউপিআই-এর লেনেদেন। এ ছাড়া ব্যাঙ্কিং থেকে শুরু করে রেল, বিমা ও অন্যান্য বহু সরকারি কাজের পুরোটাই বর্তমানে হচ্ছে পুরোপুরি ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

১২ ১৫

এর জেরে নিত্য দিন ভারতে উৎপন্ন হচ্ছে বিপুল পরিমাণে তথ্য বা ডেটা। কিন্তু এত দিন সেগুলি সংরক্ষণের ব্যাপারে নজর দেয়নি সরকার। বিশ্লেষকদের দাবি, সংশ্লিষ্ট তথ্য চিন, পাকিস্তান বা অন্য কোনও শত্রুর হাতে চলে গেলে দেশের মধ্যে তৈরি হতে পারে অরাজকতা। বিষয়টি নজরে আসার পরেই ডেটা সেন্টার তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে প্রশাসন।

১৩ ১৫

বর্তমানে বিশ্বের ২০ শতাংশ ডেটা বা তথ্য উৎপন্ন হচ্ছে ভারতে। অথচ সেগুলির মাত্র তিন শতাংশ সংরক্ষণের পরিকাঠামো হয়েছে নয়াদিল্লির হাতে। আগামী বছরের মধ্যে ১,৮০০ মেগাওয়াটের তথ্যভান্ডার তৈরি হয়ে যাবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার।

১৪ ১৫

বিশ্লেষকদের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশে তথ্যভান্ডার তৈরির দ্বিমুখী সুবিধা রয়েছে। আগামী দিনে গুগ্‌লের দেখাদেখি মাইক্রোসফ্‌ট-সহ অন্য বহুজাতিক টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলি ডেটা সেন্টার তৈরির জন্য এ দেশে বিনিয়োগ করতে পারে। দ্বিতীয়ত, এর জেরে কিছুটা চাঙ্গা হবে দক্ষিণী রাজ্যটির অর্থনীতি। বাড়বে কর্মসংস্থান।

১৫ ১৫

তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এত দিন শুধুমাত্র পরিষেবা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ভারত। এ বার পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও উন্নতি করার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি। মার্কিন মুলুকের সিলিকন ভ্যালির মতো প্রযুক্তিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্র। সেখানে কর্নাটকের বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশের বড় ভূমিকা থাকবে বলে আশাবাদী আর্থিক বিশ্লেষকেরা।  

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement