IAS officer’s salary

দেশের কঠিনতম পরীক্ষা, উত্তীর্ণ হলে অপেক্ষা করে মোটা বেতন, নানা সুবিধা! কত বেতন পান আইএএস আধিকারিকেরা?

১০০ শতাংশ নিরাপত্তা, বেতন ও ভাতা মিলিয়ে মোটা রোজগার, কর্মস্থলের সুপরিবেশ এবং সব শেষে পদমর্যাদা ও সামাজিক সম্মান৷ একটা চাকরিতে মানুষ ঠিক যা যা খোঁজে, তার সবই রয়েছে এই সরকারি চাকরিতে৷

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫ ১২:১২
Share:
০১ ১৭

এ দেশের অন্যতম কঠিন এবং সম্মানজনক পেশা হল আইএএস, আইপিএস বা আইএফএস। সেই পেশায় পা রাখার প্রথম ধাপ হল ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসি পরিচালিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। দেশের লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার কাছে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করা স্বপ্নের সমান। অন্যতম কঠিন এই পরীক্ষায় বসে সফল হওয়া মুখের কথা নয়!

০২ ১৭

হাই স্কুল বা কলেজের পঠনপাঠন শেষের পর কেরিয়ার গড়তে অনেকেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন। একাগ্রতা, অধ্যবসায় আর পরিশ্রম, এই তিন মন্ত্রেই আইএএস, আইপিএস এবং আইএফএস হওয়ার স্বপ্নপূরণ সম্ভব। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য প্রচুর পরিশ্রম এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। কারণ এটি দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা।

Advertisement
০৩ ১৭

১০০ শতাংশ নিরাপত্তা, বেতন ও ভাতা মিলিয়ে মোটা রোজগার, কর্মস্থলের সুপরিবেশ এবং সব শেষে পদমর্যাদা ও সামাজিক সম্মান। একটা চাকরিতে মানুষ ঠিক যা যা খোঁজে, তার সবই রয়েছে এই সরকারি চাকরিতে। তাই আইএএস বা আইপিএস হওয়ার লক্ষ্যে প্রতি বছর লাখো পরীক্ষার্থী প্রাণপাত করেন।

০৪ ১৭

ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হলেই প্রার্থীরা ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা, পুলিশের পরিষেবা বা বৈদেশিক পরিষেবা পদের দাবিদার হন। এই পদের শ্রেণিবিভাগ করা হয়ে থাকে তাঁদের পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে। সরকারি কর্মচারীরা জনপ্রশাসনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত, তাই তাঁদের বেতনকাঠামোও পদের পরিপূরক হওয়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট মহল।

০৫ ১৭

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এক জন আইএএস পদমর্যাদার আধিকারিকের বেতন কত? এই চাকরিতে নির্বাচিত হওয়ার বাড়তি সুবিধাগুলি কী কী? সপ্তম বেতন কমিশনের নিয়ম অনুসারে কোন ধাপে কত টাকা বেতন পান সরকারি এই আধিকারিকেরা?

০৬ ১৭

সপ্তম বেতন কমিশনের নিয়ম বলছে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হলে দশম ধাপের পদমর্যাদায় যোগদান করতে হয় সদ্য উত্তীর্ণ আধিকারিককে। এর মাধ্যমে আমলাতন্ত্রে প্রবেশ করেন তাঁরা। পদমর্যাদার হিসাবে মহকুমা শাসক বা সহকারী কালেক্টর হিসাবে প্রথম পোস্টিং পান এক জন সদ্য পাশ করা আধিকারিক। এই পদটি জুনিয়র টাইম স্কেল অফিসার নামেও পরিচিত। প্রাথমিক স্তরের পদ এটি।

০৭ ১৭

এর পরের পদটি হল সিনিয়র টাইম স্কেল অফিসার। একাদশতম ধাপ। সাধারণত চাকরির ৪ বছর পূর্ণ হওয়ার পর পদোন্নতি ঘটে। পদের নাম ডেপুটি কালেক্টর বা উপসচিব। পরবর্তী ধাপে পদোন্নতি ঘটার পর হওয়া যায় জেলাশাসক। প্রথমেই অবশ্য বড় জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় না। ছোট জেলার দায়িত্ব দেওয়ার কয়েক বছর পর তাঁদের উপর বড় জেলার দায়িত্বভার ন্যস্ত হয়।

০৮ ১৭

প্রায় ১৩ বছরের চাকরিজীবন পার করার পর ১৩তম ধাপে পৌঁছোতে পারেন এক জন আইএএস আধিকারিক। বিশেষ সচিবের পদপ্রাপ্তি ঘটে তাঁর। আমলাতন্ত্রে অভিজ্ঞতালাভের পর ধীরে ধীরে নীতি প্রণয়ন বা নীতি নির্ধারণের মতো গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে এই পর্যায়ের আধিকারিকদের উপর। তার পরের ধাপে আসেন সচিব বা কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকেরা।

০৯ ১৭

১৪ ও ১৫ নম্বর ধাপে হওয়া যায় যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব ও প্রধান সচিব। সাধারণত রাজ্য সরকারের কোনও দফতরের প্রশাসনিক প্রধান হন প্রধান সচিব বা প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি। এর পরের ধাপে রয়েছেন মুখ্যসচিব। মুখ্যসচিব রাজ্য প্রশাসনের সমস্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেন।

১০ ১৭

আইএএস কাঠামোয় ক্যাবিনেট সচিব হলেন সরকারের ও দেশের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার আমলা। তিনি সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়ের প্রধান হিসাবে তিনি সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করেন এবং নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে সহায়তা করেন।

১১ ১৭

এ বার আসা যাক বেতনকাঠামোয়। কর্মরত থাকার সময়, পদোন্নতি ও পদমর্যাদার সঙ্গে সঙ্গে বেতন বাড়ে আইএএস আধিকারিকদের। প্রাথমিক ধাপে যাঁরা আধিকারিক হিসাবে যোগদান করেন, অর্থাৎ দশম ধাপের বেতন ৫৬ হাজার ১০০ টাকা। তার পরের ধাপে সহকারী জেলাশাসকদের পদমর্যাদার বেতন ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা। এক জন জেলাশাসক পদমর্যাদার আইএএস আধিকারিকের বেতন ৭৮ হাজার ৮০০ টাকা।

১২ ১৭

বিশেষ সচিবের পদপ্রাপ্তি ঘটার পর সেই বেতনের পরিমাণ দাঁড়ায় লক্ষাধিক টাকা। ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান বিশেষ সচিব বা স্পেশ্যাল সেক্রেটারি। রাজ্য সরকারের সচিব হলে সেই বেতন বে়ড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ২০০ টাকায়। এক জন প্রধান সচিব বা অতিরিক্ত সচিব বেতন পান ১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা।

১৩ ১৭

অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পান ২ লক্ষ ৫ হাজার ৪০০ টাকা, মুখ্যসচিবের বেতন ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। পদমর্যাদার মতোই আমলাতন্ত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ বেতনের অধিকারী ভারতের ক্যাবিনেট সচিব। তিনি পান ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

১৪ ১৭

এই তথ্যগুলি কেবল তাঁদের মাসিক বেতন। এর সঙ্গে যুক্ত হয় নানা রকম ভাতা। বাড়িভাড়া ভাতা, মহার্ঘ ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, চিকিৎসা ভাতা এবং পরিবহণ ভাতা পাওয়া যায়। আইএএস অফিসারের যদি তাঁর পোস্টিংয়ের জায়গায় ভাড়া করা বাসস্থানের প্রয়োজন হয়, তা হলে তিনি বেতনের নির্দিষ্ট শতাংশ অনুযায়ী বাড়িভাড়া ভাতা পান।

১৫ ১৭

বড় শহরগুলির জন্য বেতনের ২৪ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা পান আইএএস আধিকারিকেরা। ৫ লক্ষের কম জনসংখ্যার শহরগুলিতে এটি মূল বেতনের ১৬ শতাংশ। গ্রামীণ এলাকার পোস্টিংয়ে মূল বেতনের ৮ শতাংশ। আইএএস আধিকারিক যদি কোনও সরকারি বাসস্থানে থাকতে চান, তা হলে তিনি এই ভাতা পাবেন না।

১৬ ১৭

এর পর আসে মহার্ঘ ভাতা। মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বছরে দু’বার মহার্ঘ ভাতা সংশোধন করা হয়। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আইএএস আধিকারিকেরা বেতনের সঙ্গে ৪২ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পেয়ে থাকেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ভ্রমণ ভাতা ও অন্যান্য ভাতা। সব মিলিয়ে প্রাথমিক ধাপে এক জন আধিকারিক লক্ষাধিক টাকার বেতন পেয়ে থাকেন।

১৭ ১৭

এ ছাড়াও এক জন আইএএস আধিকারিক আবাসন, নিরাপত্তা, রাঁধুনি এবং অন্যান্য কর্মী-সহ আরও অনেক সুবিধা পান। আইএএস অফিসারকে একটি গাড়ি এবং ড্রাইভারের সুবিধাও দেওয়া হয়। বিনামূল্যে মোবাইল সংযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করা হয়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement