Isarel Hamas Conflict

ঠাঁই নেই কবরখানায়, উপচে পড়ছে মর্গ! গাজ়ায় মৃতদেহ রাখতে ভরসা সুখের দিনের আইসক্রিম ট্রাক

ইউএনআরডব্লুএ-র কর্তা রাওয়া হালাস কাতর আর্জি জানিয়েছেন বিশ্ববাসীর কাছে— ‘‘গাজ়াকে বাঁচান। দয়া করে গাজ়াকে বাঁচান। গাজ়া শেষ হয়ে যাচ্ছে। পুরোপুরি শেষ হয়ে যাচ্ছে।’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:০৭
Share:
০১ ১৯

নীল-সাদা মখমলে স্বপ্নের মতো সাজানো ট্রাক। গায়ে শিশুর মুখের ছবি। তার হাতে আইসক্রিম। ঠোঁটের পাশ দিয়ে গড়িয়েও পড়ছে কিছুটা। সুখের দিনে দোকানে দোকানে আইসক্রিম পৌঁছে দিত প্যালেস্তাইনের এই আইসক্রিম ট্রাক। এখন যা চলন্ত হিমঘর।

০২ ১৯

প্রতি দিন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন গাজ়ায়। হাসপাতালের মর্গে তিল ধারণের জায়গা নেই। স্থানাভাবে তাই বিকল্প ব্যবস্থা ভাবতে হচ্ছে। তাই সুদিনের আইসক্রিম ট্রাক দুর্দিনে পরিণত হয়েছে মর্গে।

Advertisement
০৩ ১৯

প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র বাহিনী হামাসের সঙ্গে ইজ়রায়েলের যুদ্ধ শুরু হয়েছে গত ৭ অক্টোবর থেকে। হামাসকে কাবু করতে তাদের দখলে থাকা গাজ়া স্ট্রিপে পর পর হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েলের সেনা। যার জেরে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ২৬০০ প্যালেস্তিনীয়ের। জখম হয়েছেন সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ।

০৪ ১৯

এই পরিস্থিতিতে গাজ়ার হাসপাতাল এবং কবরখানায় মৃতদেহ রাখার জায়গা না হওয়ায়, আইসক্রিমের ট্রাক কিনেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

০৫ ১৯

গাজ়ার দায়ের আল-বালাকের শুহাদা আল-আকসা হাসপাতালের এক চিকিৎসকই বিষয়টি জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে।

০৬ ১৯

তিনি বলেছেন, ‘‘আমার হাসপাতালের মর্গে আর ১০টি দেহ রাখার জায়গা ছিল। তখনই বিকল্প ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিই। একটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরি থেকে আইসক্রিমের ট্রাক কেনার ব্যবস্থা করি। ওতে মর্গের থেকে বেশি দেহ রাখার জায়গা রয়েছে।’’

০৭ ১৯

যদিও চিকিৎসক অনিশ্চিত এই ব্যবস্থা কত দিন চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে তা নিয়েও। তিনি বলেছেন, ‘‘কিছু দেহ তাঁবু খাটিয়ে বরফ দিয়েও রাখা হয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে ওই ট্রাক। তবে এই দিয়েও কত দিন কাজ চলবে জানি না।’’

০৮ ১৯

যে সমস্ত দেহ মর্গে পড়ে রয়েছে তার খোঁজে আসেনি কেউ। কী করেই বা আসবেন? হয়তো গোটা পরিবারটাই আর নেই।

০৯ ১৯

ফলে পড়ে থাকতে থাকতে মৃতদেহে পরিবর্তন আসতে শুরু করছে। ক্ষমতার থেকে বেশি দেহ সংরক্ষণ করায় ধীরে ধীরে পচন ধরতে শুরু করেছে সেই সব দেহে।

১০ ১৯

একই অবস্থা কবরস্থানেরও। মৃতদের সমাধিস্থ করার জায়গা পাচ্ছে না গাজ়া প্রশাসন। যে সমাধিক্ষেত্রটি ছিল সেখানে আর এক ছটাক ফাঁকা জায়গা নেই আর।

১১ ১৯

গাজ়া প্রশাসন তাই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে গণকবরের। ইতিমধ্যেই ১০০ জনকে সমাধিস্থ করার ব্যবস্থা করেছে তারা। কিন্তু রোজ যেখানে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ মারা পড়ছেন সেখানে এই একটি গণকবরের ব্যবস্থা করে কী হবে?

১২ ১৯

হবে যে না, তা বেশ বুঝতে পারছে গাজা প্রশাসনও। কিন্তু কবর খোঁড়া হবে কোথায়? মাত্র ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত গাজ়া স্ট্রিপ। অর্থাৎ অর্ধেক লন্ডন শহরের সামান্য বেশি।

১৩ ১৯

সেখানেই যুদ্ধ, সেখানেই চিকিৎসা, সেখানেই সমাধিস্থল, সেখানেই মানুষের ঘরবাড়িও।

১৪ ১৯

রাষ্ট্রপুঞ্জের যে সদস্যরা গাজ়া স্ট্রিপে কাজ করছেন, তাঁরাই পরিস্থিতির বর্ণনা করে জানিয়েছেন, এখন গাজ়ায় যা অবস্থা, তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়।

১৫ ১৯

তাদের কথায়, গোটা বিষয়টিকে এক কথায় বর্ণনা করতে হলে বলতে হয়— সর্বনাশা পরিস্থিতি। হাসপাতালে জায়গা নেই, নেই জল, নেই খাবার। ইজ়রায়েলের নিরন্তর বোমাবর্ষণের ফলে অনেকের মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও নেই।

১৬ ১৯

রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা সংগঠন ইউএনআরডব্লুএ-র কর্তা রাওয়া হালাস কাতর আর্জি জানিয়েছেন বিশ্ববাসীর কাছে— ‘‘গাজ়াকে বাঁচান। দয়া করে গাজ়াকে বাঁচান। গাজ়া শেষ হয়ে যাচ্ছে। পুরোপুরি শেষ হয়ে যাচ্ছে।’’

১৭ ১৯

গাজ়ার খান ইউনিসের ইউএনআরডব্লুএ-র আশ্রয়শিবিরের প্রধান রাওয়া। তিনি ইউএনআরডব্লুএ-র এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে এই বার্তা দিয়েছেন। রাওয়ার কথায়, এ ভাবে আর কিছু দিন গাজ়ায় ইজরায়েলি হামলা চললে আর কিছুমাত্র অবশিষ্ট থাকবে না এখানে।

১৮ ১৯

গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে আচমকা আক্রমণ চালিয়েছিল গাজ়ার ‘শাসক’ সশস্ত্র বাহিনী হামাস। তার পর থেকেই পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনী। গাজ়ার উত্তরে বসবাসকারী ১১ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়ক তখনই সতর্ক করা হয়েছিল ইজ়রায়েলের তরফে। বলা হয়েছিল ঘরবাড়ি ছেড়ে গাজ়ার দক্ষিণ প্রান্তে চলে যেতে। তার পর থেকে হেঁটে, গাড়িতে হাজার হাজার পরিবার রওনা হয়েছে দক্ষিণ গাজ়ায়। তবে সেখানেও পরিস্থিতি খুব ভাল নয়।

১৯ ১৯

পরিস্থিতি কতটা সঙ্গীন তা বোঝাতে রাওয়া বলেছেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রপুঞ্জের ত্রাণ প্রতিনিধি। আমার দায়িত্ব সবার কাছে ন্যূনতম প্রয়োজন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু আমি অপারগ। চোখের সামনে হাজারও শিশু, বৃদ্ধ হাত পাতছেন, আশ্রয় চাইছেন, খাবার, পানীয় জল চাইছেন। কিন্তু আমি কাউকে কিচ্ছু দিয়ে সাহায্য করতে পারছি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement