মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন সদ্য। ভাল ভাবেই মিটেছে সেই বিয়ে। তার পরেই বিয়েতে নিযুক্ত চিত্রগ্রাহকের থেকে টাকা ফেরত চাইলেন প্রবাসী ভারতীয় চিকিৎসক। টাকার পরিমাণও নেহাত কম নয়। লক্ষ লক্ষ টাকা চেয়ে মামলাও ঠুকলেন। কেন আচমকা ফেরত চাইলেন টাকা?
চিকিৎসক অমিত পটেল মামলাটি করেছেন। চিত্রগ্রাহক ক্লেন গেসেলের থেকে ৭৬ হাজার ডলার ফেরত চেয়ে মামলা করেছেন তিনি। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৬২ লক্ষ টাকারও বেশি।
অমিত আমেরিকার নিউ জার্সিতে থাকেন। মেয়ের বিয়েতে এলাহি আয়োজন করেছিলেন তিনি। কিন্তু কেন চিত্রগ্রাহকের থেকে টাকা ফেরত চাইলেন চিকিৎসক?
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শেষ মুহূর্তে এমন সব দাবি করে বসেছিলেন ক্লেন যে, তা আর মানতে পারেননি অমিত। তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য চিত্রগ্রাহককে নিয়োগ করেন।
অমিতের মেয়ে অনিশার বিয়ে হয়েছে অর্জুন পটেলের সঙ্গে। তুরস্কে বসেছিল বিয়ের আসর। নিমন্ত্রিত ছিলেন গণ্যমান্যরা।
তুরস্কের এক বিলাসবহুল হোটেলে হয়েছে মেহেন্দি, সঙ্গীত, বিয়ে। ২৫০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে ১৩ বার পোশাক বদলেছেন অনিশা। প্রত্যেকটি পোশাকের নকশা করেছেন কোনও না কোনও বিখ্যাত ডিজাইনার।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, চিত্রগ্রাহক ক্লেনের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন চিকিৎসক অমিত। চুক্তি অনুযায়ী, ক্লেনের থাকার জন্য অন্য একটি হোটেলে বন্দোবস্ত করেছিলেন অমিত। যে বিলাসবহুল হোটেলে বিয়ের আসর বসেছিল, সেখানে ক্লেনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়নি।
ক্লেন প্রথমে তা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে মেল করে অমিতকে জানিয়েছিলেন, বিয়ে যে হোটেলে হচ্ছে, সেখানেই তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
অমিতকে ক্লেন জানিয়েছিলেন, বিয়ের সব অনুষ্ঠানের ছবি তিনিই তুলে দেবেন। কিন্তু বিয়ের দিন কয়েক আগে জানান, তিনি ঠিক করে দেবেন, কোন অনুষ্ঠানের ছবি তাঁর কোন সহকারী তুলে দেবেন।
এতে বেজায় চটে যান অমিত। নিউ ইয়র্ক পোস্টকে অমিত পটেল বলেন, ‘‘আতঙ্ক হয়ে গিয়েছিল। ভাবতে পারেন আমার তখন কী অবস্থা? বিয়ের কয়েক দিন আগে মেয়েকে বলতে হয়েছে, যে চিত্রগ্রাহককে তুমি পছন্দ করেছ, তিনি কাজ করবেন না।’’
শেষ পর্যন্ত অন্য এক চিত্রগ্রাহক অনিশার বিয়ের ছবি তুলেছেন। তবে বেজায় চটেছেন অমিত। তিনি একেবারে মামলাই ঠুকে দিয়েছেন। মেয়ের বাবা বলে কথা!
এই ঘটনার কথা জানতে পেরে সমাজমাধ্যমে এক ব্যবহারকারী নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। লিখেছেন, এ রকমই এক ভুলের জন্য নিজের বিয়ের একটাও ছবি নেই তাঁর কাছে।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জনৈক জানিয়েছেন, ২০২১ সালে বিয়ে করেছিলেন তিনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে তিনি এবং কনে লাগাতার ছবি তুলে যাচ্ছিলেন। চিত্রগ্রাহক খেতে যাওয়ারও সময় পাননি। এই ঘটনায় ক্ষেপে গিয়েছিলেন চিত্রগ্রাহক।
কম যান না বর। রাগের চোটে চিত্রগ্রাহককে জানিয়েছিলেন, দরকার নেই ছবির। একটি টাকাও দেবেন না। শুনে স্থির থাকতে পারেননি চিত্রগ্রাহক। জানান, টাকা তাঁর লাগবে না। বর-কনের সামনেই সব ছবি মুছে বিয়েবাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।