নব্বইয়ের দশকে বলিপাড়ার সর্বাধিক উপার্জনকারী অভিনেত্রীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বিদেশে পাড়ি দেন নায়িকা। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়জগৎ থেকে দূরে ছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর আবার বলিউডে ফিরে আসেন মাধুরী দীক্ষিত। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ কত জানেন?
১৯৮৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অবোধ’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় পা রাখেন মাধুরী। তাঁর কেরিয়ারের প্রথম ছবি তাপস পালের সঙ্গে। অভিনয় শুরুর পর চার বছর মাধুরীর ছবি বিশেষ জনপ্রিয়তা পায়নি।
১৯৮৮ সালে অনিল কপূরের সঙ্গে ‘তেজাব’ ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে বিপুল প্রশংসা অর্জন করেন মাধুরী। তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। কেরিয়ারের ঝুলিতে ‘রাম লক্ষ্মণ’, ‘প্রেম প্রতিজ্ঞা’, ‘দিল’, ‘সাজন’, ‘বেটা’, ‘খলনায়ক’, ‘অঞ্জাম’, ‘হম আপকে হ্যায় কৌন..!’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-এর মতো বহু সফল হিন্দি ছবি ভরতে শুরু করেন মাধুরী।
১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসে শ্রীরাম মাধব নেনেকে বিয়ে করেন মাধুরী। অভিনয় থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন মাধব। পেশায় হার্ট সার্জন তিনি।
বিয়ের পর মুম্বই ছেড়ে কলোরাডোর ডেনভার শহরে গিয়ে বসবাস শুরু করেন মাধুরী এবং শ্রীরাম। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন মাধুরী। তার দু’বছর পর ২০০৫ সালের দ্বিতীয় পুত্রের জন্ম দেন তিনি।
এক দশকের বেশি সময় বিদেশে কাটানোর পর ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে সপরিবার মুম্বই ফেরেন মাধুরী। তার পর আবার অভিনয় শুরু করেন তিনি।
২০১৩ সালে ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবিতে একটি গানের দৃশ্যে অভিনয় করে আবার বড় পর্দায় ফিরে আসতে দেখা যায় মাধুরীকে। তার পর ‘দেড় ইশকিয়া’, ‘টোটাল ধামাল’, ‘কলঙ্ক’, ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’ নামের একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
বড় পর্দার পাশাপাশি ওটিটির জগতেও পা রাখেন মাধুরী। ‘মজা মা’ নামের ছবি এবং ‘দ্য ফেম গেম’ নামের ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করেন তিনি। ২০১৮ সালে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া ‘মোগলি’ নামের ইংরেজি ছবির জন্য হিন্দি ভাষায় কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, প্রতি ছবিতে অভিনয়ের জন্য ৫ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন মাধুরী।
নাচের বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোয়ের বিচারকের আসনে দেখা যায় মাধুরীকে। বলিউডের জনশ্রুতি, শোয়ের এক একটি সিজ়নের জন্য ১০ থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করেন তিনি।
বিভিন্ন নামী সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের বিজ্ঞাপনী প্রচারেও অভিনয় করেন মাধুরী। বলিউডের গুঞ্জন, বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত কাজকর্ম করে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেন নায়িকা।
মাধুরীর সংগ্রহে রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়িও। বলিপাড়া সূত্রে খবর, নায়িকার গ্যারাজে রয়েছে মার্সি়ডিজ় মেব্যাক এস৫৬০। এই গাড়ির আনুমানিক বাজারমূল্য ৩ কোটি থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
মাধুরীর সংগ্রহে রয়েছে রেঞ্জ রোভার ভোগ মডেলের দামি গাড়ি। এই গাড়িটির আনুমানিক বাজারমূল্য দু’কোটি থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে মাধুরীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি। শ্রীরামের চেয়ে কোটি কোটি টাকা বেশি সম্পত্তি রয়েছে তাঁর।
মুম্বইয়ের অন্ধেরীর পশ্চিমে একটি প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে নেনে দম্পতির। তা ছাড়াও মুম্বইয়ের ওরলির বিলাসবহুল এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে তাঁদের।
বলিউড সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে শ্রীরামের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি প্রযোজনা সংস্থা খোলেন মাধুরী। তা ছাড়া অনলাইন মাধ্যমে নাচের প্রশিক্ষণও দেন নায়িকা। সেই সংস্থার দায়িত্ব একত্রে সামলান মাধুরী এবং শ্রীরাম।
ক্যালিফর্নিয়া থেকে ডিগ্রি অর্জন করে সেখানেই অনুশীলন করতেন শ্রীরাম। তার পর পরিবারসমেত মুম্বই চলে যাওয়ার পর সেখানেই নতুন করে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্টার্টআপ শুরু করেন তিনি।
পেশায় শিল্পোদ্যোক্তা শ্রীরাম আবার আইআইটি জোধপুরের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য। কানাঘুষো শোনা যায়, প্রতি মাসে ৭ কোটি টাকার বেশি উপার্জন করেন তিনি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, একা শ্রীরামের সম্পত্তির পরিমাণ ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা, যা মাধুরীর সম্পত্তির তুলনায় অনেক কম।
বলিউডের জনশ্রুতি, মাধুরী এবং শ্রীরামের সম্পত্তি যোগ করলে তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা।