Oracle chairman Larry Ellison

‘বুড়ো ঘোড়া’র ধাক্কায় সাময়িক ভাবে সিংহাসনচ্যুত মাস্ক! ওরাকলের শেয়ারের দাপটে বিশ্বসেরা ধনকুবের অশীতিপর ল্যারি

ইলন মাস্ককে সরিয়ে কিছু ক্ষণের জন্য ধনকুবেরদের তালিকার শীর্ষে চলে এলেন আমেরিকার অন্যতম প্রযুক্তি সংস্থা ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। এলিসনের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৪০
Share:
০১ ১৮

পৃথিবীর সেরা ধনকুবেরের পালক খসে গেল টেসলার চিফ এক্‌জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) ইলন মাস্কের মাথা থেকে। কয়েক ঘণ্টার জন্য তাঁকে সরিয়ে ধনকুবেরদের তালিকার শীর্ষে চলে এলেন আমেরিকার অন্যতম প্রযুক্তি সংস্থা ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। বুধবার তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৩০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে যায়। ফলে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসাবে টেসলা-কর্তাকে ছাড়িয়ে যান ল্যারি।

০২ ১৮

বুধবার অপ্রত্যাশিত ভাবে ওরাকল কর্পোরেশনের শেয়ারের দাম ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে যায়। ১৯৯২ সালের পর এই প্রথম ওরাকলের শেয়ারের দামে এমন রকেট গতির উত্থান দেখা গেল। ফলে এলিসনের সম্পত্তির পরিমাণ এক দিনে ১০ হাজার ১০০ কোটি ডলার বেড়ে যায়। পরে অবশ্য শেয়ারের দামে পতন হয়।

Advertisement
০৩ ১৮

ওরাকলের স্টকে রেকর্ড উত্থানের ফলে এলিসনের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ চড়চড় করে বাড়তে থাকে। ব্লুমবার্গের সূচক অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড লাভ হয়েছে এলিসনের। ১৯৭৭ সালে ওরাকল প্রতিষ্ঠা করেন এলিসন। বর্তমানে ওরাকলের ৪১ শতাংশের মালিকানা রয়েছে তাঁর হাতে।

০৪ ১৮

শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এলিসনের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছোয়। ওরাকলের শেয়ারের ঊর্ধ্বগতির ফলে সেই সম্পদের পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় মাস্কের সম্পদকেও। অন্য দিকে টেসলার শেয়ারে পতন মাস্কের আসন টলিয়ে দেয়।

০৫ ১৮

দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রথম বারের জন্য ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের শীর্ষস্থানে আসেন এলিসন। ৮১ বছর বয়সে এসে মাস্ককে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হলেন ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। আমেরিকার শেয়ার বাজারে বুধবার লেনদেনে ওরাকলের শেয়ারের দাম ৪০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়, যার ফলে সংস্থার মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ৯৬ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছে যায়।

০৬ ১৮

দিনের শেষে শেয়ারের দামে ঊর্ধ্বগতি কিছুটা কমে যায়। ওরাকলের শেয়ারের দাম ৩৬% বেড়ে ৩২৮ ডলারে দাঁড়ায়। এর ফলে এলিসনের শেয়ারের মূল্য ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে নেমে আসে। এ ভাবেই লেনদেনের শেষে মাস্ক আবার তাঁর শীর্ষস্থান ফিরে পান।

০৭ ১৮

অশীতিপর এই আমেরিকান ধনকুবের তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন অ্যাম্পেক্স কর্পোরেশনে এক জন কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসাবে। এলিসন ৩৭ বছর ধরে ওরাকলের সিইও ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে পদত্যাগ করেন।

০৮ ১৮

১৫ বছর আগে ওরাকলে এলিসনের মাত্র ২২ শতাংশ শেয়ার ছিল। ২০১১ সাল থেকে ওরাকলের স্টক পুনরায় কিনতে থাকেন তিনি। একে স্টক বাইব্যাক বা সংস্থার নিজস্ব শেয়ার পুনঃঅধিগ্রহণ বলা হয়ে থাকে। এর জন্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি ডলায় ব্যয় করেন তিনি।

০৯ ১৮

আজ এলিসনের শেয়ারের মালিকানা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৪১ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। এই বাইব্যাকের সময় এলিসন তাঁর বেশির ভাগ শেয়ার ধরে রেখেছিলেন। সেগুলি বিক্রি না করেই তাঁর শেয়ারের মালিকানা বৃদ্ধি করেছিলেন। ফলে যখন ওরাকলের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পায়, তখন তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদও বেড়ে যায়।

১০ ১৮

ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের বাজারে ওরাকলের ক্রমবর্ধমান লাভের কারণে সংস্থাটির প্রথম ত্রৈমাসিকের আয় বৃদ্ধি হয়েছে। অ্যামাজ়ন ওয়েব সার্ভিসেস এবং মাইক্রোসফ্‌ট অ্যাজুরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যবসা করছে ওরাকেল। প্রত্যাশার চেয়েও ভাল লাভ করেছে সংস্থাটি। ফলে শেয়ার বাজারে তার প্রতিফলন পড়েছে।

১১ ১৮

ওরাকলের আয় প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছে, এই খবরেই সংস্থার শেয়ারের দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ওরাকলের এই সাফল্য এসেছে বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। ওরাকল আশা করছে যে, আগামী ত্রৈমাসিকে ওরাকল ক্লাউড ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ওসিআই) থেকে তাদের আয় ৫০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

১২ ১৮

অন্য দিকে টেসলার বৈদ্যুতিন গাড়ির শেয়ারে ১৩ শতাংশ পতন হওয়ার কারণে টলমল করে উঠেছিল মাস্কের সিংহাসন। তাঁর মোট সম্পদ ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল। শেষ মুহূর্তে অবশ্য নিজের হৃত আসন ফিরে পান টেসলা কর্ণধার।

১৩ ১৮

২০২৪ সালে ফোর্বস পত্রিকার বিচারে বিশ্বে ধনকুবেরদের তালিকায় দু’নম্বরে উঠে আসে ল্যারির নাম। তিনি পিছনে ফেলেন অ্যামাজ়নের প্রতিষ্ঠাতা জ়েফ বেজ়োসকে। তালিকায় প্রথম স্থান দখল করে আছেন টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক। টেসলার চিফ এক্‌জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) পদে রয়েছেন মাস্ক। সংস্থার বিপুল পরিমাণ শেয়ারও রয়েছে তাঁর হাতে।

১৪ ১৮

পারিবারিক কারণে এলিসন শেষ করতে পারেননি কলেজের পাঠ। তার পরেও তাঁর হাতে মালিকানা রয়েছে এমন একটি সংস্থার, যার দৌলতে আজ বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি তিনি। ১৯৬২ সালে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন ল্যারি। সেই পড়া শেষ করা হয়ে ওঠেনি তাঁর। পরে ১৯৬৬ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্ষিপ্ত ভাবে পড়াশোনা শেষ করেন তিনি।

১৫ ১৮

ফোর্বসের তথ্য অনুসারে, এলিসন ২০১৮ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলার পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন। ২০২২ সালে তিনি এই পদ ছাড়েন। বর্তমানে তিনি সংস্থার প্রায় দেড় কোটি শেয়ারের মালিক।

১৬ ১৮

ওরাকল ও টেসলার শেয়ার ছাড়াও একটি গোটা দ্বীপের মালিক মার্কিন টেক জায়ান্ট কর্তা। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে লানাই নামের একটি দ্বীপ রয়েছে তাঁর। ২০১২ সালে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিময়ে দ্বীপটির মালিকানা হাতে পান তিনি। লানাই কেনার পর রাতারাতি সেই জায়গার ভোল বদলে ফেলেন ল্যারি।

১৭ ১৮

লানাইয়ে বহু বিলাসবহুল হোটেল তৈরি করিয়েছেন তিনি। তৈরি করিয়েছেন বিলাসবহুল রিসর্টও। নিজের জন্য ল্যারি পাঁচটি বাড়ির একটি কমপ্লেক্সও তৈরি করিয়েছেন লানাই দ্বীপপুঞ্জে। এ ছাড়া ২০২২ সালে এলিসন ১৪০০ কোটি টাকা গিয়ে ফ্লরিডায় একটি বিশাল সম্পত্তি কিনে নেন।

১৮ ১৮

কানাঘুষো শোনা যায়, আমেরিকার অন্যতম ধনকুবের এলিসনের ষষ্ঠ স্ত্রী সেখানে থাকেন। ৪৭ বছরের ছোট তরুণীর সঙ্গে ২০২৩ সালে ল্যারি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন বলে দাবি করে আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ও চিনের বাসিন্দা জোলিন ঝু হলেন বিশ্বের দ্বিতীয় ধনকুবেরের ঘরনি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement