কেরিয়ারের প্রথম ছবি। অভিনয়জগতে প্রথম পা দিয়েই সকলের মন কেড়ে নিয়েছিলেন নায়িকা। তখন অবশ্য তিনি কিশোরী। কেরিয়ার শুরু করতে না করতেই পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু অভিনয়জগতে তাঁর যাত্রা বেশি দূর ছিল না। মাত্র ২১ বছর বয়সে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন অভিনেত্রী মনীষা উন্নি।
১৯৭১ সালের জানুয়ারি মাসে কেরলের কোঝিকোড়ে জন্ম মনীষার। পরে অবশ্য পরিবার নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে যান তিনি। বাবা-মা এবং দাদার সঙ্গে সেখানেই থাকতেন মনীষা। চামড়ার সামগ্রীর ব্যবসা ছিল মনীষার বাবার।
মনীষার মা নৃত্যে পারদর্শী ছিলেন। মেয়েকেও ছোটবেলা থেকে নাচের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন তিনি। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকে নাচ শিখতেন মনীষা। অভিনয়ের প্রতিও আগ্রহ ছিল তাঁর।
১৪ বছর বয়সে তামিল ভাষার একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় মনীষাকে। সেই অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন এমটি বাসুদেবন নায়ার।
পেশায় সাহিত্যিক ছিলেন এমটি বাসুদেবন নায়ার। পাশাপাশি চিত্রনাট্যকার এবং পরিচালকও ছিলেন তিনি। মনীষার পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছিলেন তিনি।
মালয়ালম ছবির পরিচালক হরিহরণ তাঁর ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন মনীষাকে। সেই ছবির চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন এমটি বাসুদেবন নায়ার।
কেরিয়ারের প্রথম ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন মনীষা। মাত্র ১৬ বছর বয়সে বড় পর্দায় পা রেখেছিলেন তিনি।
১৯৮৬ সালের পর থেকে মালয়ালম ভাষার পাশাপাশি তামিল, তেলুগু এবং কন্নড় ভাষার ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মনীষা। দ্রুত ২৫টি ছবিতে অভিনয় করে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর অভিনয়যাত্রা বেশি দূর ছিল না।
১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। মায়ের সঙ্গে গাড়িতে সফর করছিলেন মনীষা। গাড়ির পিছনের আসনে শুয়ে বিশ্রাম করছিলেন তিনি। সেই সময় ভয়ানক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গাড়িটি কেরলের চেরথালা এলাকায় পৌঁছোতেই বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। গাড়ি থেকে ছিটকে বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মনীষার মা। ঘটনাস্থলে মারা গিয়েছিলেন গাড়ির চালক।
মনীষাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন মনীষা।
দক্ষিণী ফিল্মজগতের অধিকাংশের দাবি, দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে মনীষা এমন এক জন অভিনেত্রী যিনি এত কম বয়সে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন।
মনীষার মৃত্যুর পর বড় পর্দায় তাঁর একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। ১৯৯৩ সালে ‘মুন্দ্রাবধু কান’ নামের তামিল ভাষার একটি ছবিতে শেষ অভিনয় দেখা গিয়েছিল তাঁর।