আশির দশক থেকে অভিনয় শুরু। জনপ্রিয় তারকার নাতনি। একসময় রেখাকেও নাকি টেক্কা দিতেন। কিন্তু কেরিয়ারের ঝুলিতে একাধিক সুপারহিট ছবি থাকা সত্ত্বেও কাজ পাচ্ছিলেন না তিনি। এমনকি বড় পর্দা থেকেও এক দশকের জন্য ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছিলেন বলি অভিনেত্রী কিয়ারা আডবাণীর সৎমাসি। এখন কী করছেন অনুরাধা পটেল?
১৯৬১ সালের অগস্ট মাসে জন্ম অনুরাধার। তিনি অভিনেতা অশোক কুমারের নাতনি। ১৯৮৩ সালে ‘লভ ইন গোয়া’ নামের হিন্দি ছবির মাধ্যমে অভিনয়জগতে পদার্পণ তাঁর। তার পর ‘উৎসব’, ‘সদা সুহাগন’, ‘ইজাজ়ত’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
১৯৮৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘উৎসব’ ছবিতে ‘মন কিঁউ বহেকা’ গানের দৃশ্যে রেখার সঙ্গে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন অনুরাধা। ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রী হিসাবে কম সময়ের মধ্যে পরিচিতি গড়ে ফেলেছিলেন তিনি। এমনকি, সৌন্দর্য এবং অভিনয়ের দিক থেকে রেখাকেও টক্কর দিতেন অনুরাধা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, পাঁচ থেকে ছ’বছর একটানা অভিনয়ের পরেও কাজের তেমন সুযোগ পাচ্ছিলেন না অনুরাধা। কেরিয়ারের ঝুলিতে সুপারহিট ছবি থাকলেও মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকে তিনি বিজ্ঞাপন এবং হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করা শুরু করেছিলেন।
অনুরাধার কেরিয়ারের তালিকায় ছিল বাংলা ছবিও। বাঙালি অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘জ্যোতি’ নামের একটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন নায়িকা। ১৯৮৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল সেই ছবি।
১৯৮৮ সালে জনপ্রিয় টেলি অভিনেতা কনওয়লজিৎ সিংহকে বিয়ে করেছিলেন অনুরাধা। বিয়ের পর দুই পুত্রের জন্ম দেন নায়িকা। ধীরে ধীরে অভিনয়জগতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন তিনি। কাজ পেতে সমস্যা হওয়ায় বলিউড থেকে পুরোপুরি ‘উধাও’ হয়ে যান এই অভিনেত্রী।
১৯৯৪ সালে ‘মানভিনি ভাবাই’ নামের গুজরাতি ভাষার একটি ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল অনুরাধাকে। তার পর প্রায় এক দশকের বিরতি নিয়েছিলেন তিনি। অভিনয়জগৎ থেকে সরে গিয়ে সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন নায়িকা।
অভিনয় ছেড়ে দিলেও পেশার খাতিরে মডেলিং চালিয়ে গিয়েছিলেন অনুরাধা। এক দশকের বিরতির পর ২০০৩ সালে আবার বড় পর্দায় ফিরে আসেন তিনি। তার পর ‘তুঝে মেরি কসম’, ‘দশ কহানিয়া’, ‘জানে তু… ইয়া জানে না’, ‘আয়েশা’, ‘রেডি’, ‘রাধে শ্যাম’, ‘সত্যপ্রেম কি কথা’— একাধিক হিন্দি ছবিতে পর পর অভিনয় করেছেন তিনি।
২০২৩ সালের পর অবশ্য আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি অনুরাধাকে। অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যবসাও শুরু করেন তিনি। ১৯৮৭ সাল থেকে একটি সংস্থার মালিকানা রয়েছে নায়িকার। ‘গ্রুমিং’, ‘পার্সোনালিটি ডেভেলপমেন্ট’, ‘পাবলিক স্পিকিং’ এবং ‘কনফিডেন্স বিল্ডিং’ নিয়ে সেই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বর্তমানে অবশ্য নামী কিছু সংস্থার বিজ্ঞাপনের প্রচারের জন্য শুট করেন অনুরাধা। ২০২১ সালে স্বামী কনওয়লজিতের সঙ্গে অনলাইনে জনপ্রিয় কেনাকাটার ওয়েবসাইটের জন্য বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন অনুরাধা।
‘দেখো মগর প্যার সে’, ‘কিঁউ কি সাস ভি কভি বহু থি’র মতো একাধিক হিন্দি ধারাবাহিকে ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল অনুরাধাকে। বলিউডের জনশ্রুতি, বলি অভিনেত্রী নীনা গুপ্তের সঙ্গে নাকি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন কনওয়লজিৎ। নব্বইয়ের দশকে ‘সাঁস’ নামের এক হিন্দি ধারাবাহিকে কনওয়লজিতের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন নীনা।
‘সাঁস’ ধারাবাহিকে কনওয়লজিৎ এবং নীনার সম্পর্কের রসায়ন দর্শকের মনে ধরেছিল। কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে যে, ক্যামেরার পিছনেও নাকি তাঁদের সম্পর্ক গাঢ় হতে শুরু করেছিল। দুই তারকা নাকি গোপনে সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন।
যদিও বলিপাড়ার একাংশের দাবি, কনওয়লজিৎ এবং নীনার মধ্যে শুধুমাত্র পেশার খাতিরে বন্ধুত্ব ছিল। তার বাইরে আর কিছুই ছিল না। পরকীয়া নিয়ে মিথ্যা খবর রটানো হয়েছিল। অনুরাধা এবং কনওয়লজিতের সংসারে ‘তৃতীয় ব্যক্তি’ ছিলেন না নীনা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, কিয়ারার সৎদিদা ভারতী জাফ্রের কন্যা অনুরাধা। কিয়ারার মা এবং অনুরাধা সম্পর্কে সৎবোন। সেই সূত্রে কিয়ারার সৎমাসি হন অনুরাধা। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, কিয়ারার সঙ্গে কমবয়সি অনুরাধার মুখের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।