বলিপাড়ায় বরাবরই রাজত্ব করেছে দেওল পরিবার। দেখতে দেখতে প্রায় ৬৫ বছর হয়ে গেল ধর্মেন্দ্র অভিনয় করছেন বড়পর্দায়। নিজের ছয় সন্তানের মধ্যে চার জনই কমবেশি সিনেমা অভিনয় করেছেন। তবে অভিনেতার দুই সন্তানকে কখনওই কোনও সিনেমা করতে দেখা যায়নি। এমনকি বলিপাড়ার পার্টিতেও সে ভাবে নজরে আসেননি তাঁরা।
সিনেমাজগতে একাধিক চড়াই-উতরাই পার করেছেন ধর্মেন্দ্র। মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে। যদিও তা বেশি দিন টেকেনি। তবে প্রথম পক্ষের সন্তানদের সঙ্গে বরাবরই ভাল সম্পর্ক বজায় রেখেছেন ধর্মেন্দ্র।
ধর্মেন্দ্র প্রথম বিয়ে করেন প্রকাশ কৌরকে। প্রকাশ বরাবরই সিনেমাজগৎ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলেন। তাঁদের চার সন্তান রয়েছে। দুই পুত্র এবং দুই কন্যা। সানি দেওল, ববি দেওল, অজিতা দেওল এবং বিজেতা দেওল।
বেশ কিছু বছর সংসার করার পর প্রকাশের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানেন ধর্মেন্দ্র। দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন হেমা মালিনীকে। ১৯৮০ সালে এই জুটি সাত পাকে বাঁধা পড়ে। সে সময় বলিউডে চুটিয়ে অভিনয় করছেন হেমামালিনী।
হেমার সঙ্গেই এখনও ঘর করছেন ধর্মেন্দ্র। তাঁদের দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। ঈশা দেওল এবং অহনা দেওল। দু’জনেই অভিনেত্রী, একই সঙ্গে মায়ের মতো তাঁরাও নৃত্যশিল্পী।
অন্য দিকে, মায়ের মতোই (প্রকাশ কৌর) সিনেমাজগৎ থেকে নিজেদের একেবারে দূরে রেখেছেন ধর্মেন্দ্রের আগের পক্ষের দুই কন্যাই। অজিতা এবং বিজেতাকে কখনওই কোনও সিনেমায় দেখা যায়নি।
সিনেমাজগৎ থেকে নিজেকে দূরে রেখে সম্পূর্ণ অন্য এক পেশা বেছে নিয়েছেন অজিতা। পড়াশোনা করেছেন মনোবিজ্ঞান ও দন্তচিকিৎসা নিয়ে।
তবে, বর্তমানে শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি স্কুলে মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক অজিতা।
১৯৮৯ সালে দন্তচিকিৎসক কিরণ চৌধরিকে বিয়ে করেন অজিতা। কিরণ ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও বর্তমানে আমেরিকায় থাকেন।
খুব সাধারণ ভাবেই অজিতা এবং কিরণের বিয়ে হয়। তাঁদের বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে ছিলেন নিকট আত্মীয় এবং বন্ধুরাই। সংবাদমাধ্যমের কোনও ঝলকানি ছিল না এই তারকা-সন্তানের বিয়েতে।
অজিতা এবং কিরণের দুই কন্যাসন্তান রয়েছেন, নিকিতা চৌধরি এবং প্রিয়াঙ্কা চৌধরি। এই দু’জনও কখনও সিনেমাজগতে পা দেননি। বাবা-মায়ের মতো দু’জনেই দন্তচিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে পড়েছেন।
ধর্মেন্দ্র ও প্রকাশ কৌরের কনিষ্ঠ কন্যা বিজেতা। বিয়ে করেন ব্যবসায়ী বিবেক গিলকে। তারকা-সন্তান হলেও সাদামাঠা জীবনকে বেছে নিয়েছেন বিজেতা।
বিজেতা এবং বিবেক দু’জনেই বর্তমানে দিল্লিতে থাকেন। স্বামীকে কাজে সহায়তা করেন বিজেতা। তাঁদের একটি বিনিয়োগ ও ট্রেডিং সংক্রান্ত সংস্থা রয়েছে। নাম রাজকমল হোল্ডিংস অ্যান্ড ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড। এই সংস্থার ডিরেক্টর বিজেতা।
ধর্মেন্দ্রের দু’টি প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে। দু’টি সংস্থারই নাম রেখেছেন বিজেতার নামানুসারে। বিজেতা প্রোডাকশন প্রাইভেট লিমিটেড এবং বিজেতা ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড।
যদিও বাবার প্রযোজনা সংস্থায় কখনওই সরাসরি কাজ করতে দেখা যায়নি বিজেতাকে। বরং সানির সিনেমায় অভিষেক হয় এই প্রযোজনা সংস্থা থেকেই। সানিরও প্রথম ছবি এবং প্রযোজনা সংস্থারও প্রথম কাজ ছিল ‘বেতাব’ সিনেমা।
ছয় দশক ধরে চলচ্চিত্রজগতের সঙ্গে যুক্ত ধর্মেন্দ্র। বরাবরই সিনেমা নিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন নিজের ছেলেমেয়েদের। অজিতা এবং বিজেতা সিনেমাজগতে পা না দিলেও বাবার ভালবাসা থেকে কখনওই ব্রাত্য থাকেননি।