Ukraine

Russia-Ukraine War Reason: কী নিয়ে দ্বন্দ্ব? কার লাভ, কার ক্ষতি? ইউক্রেন দখল করতে রাশিয়া কেন এত মরিয়া

ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে রাশিয়ার সেনা সরানোর প্রক্রিয়া যে স্রেফ ছলচাতুরি ছিল তা এ বার যেন বুঝিয়ে দিলেন ভ্লাদিমির পুতিনও।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
মস্কো শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১১:২৬
Share:
০১ ১৩

আমেরিকা আগেই সতর্ক করেছিল। ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে রাশিয়ার সেনা সরানোর প্রক্রিয়া যে স্রেফ ছলচাতুরি ছিল তা এ বার যেন বুঝিয়ে দিলেন ভ্লাদিমির পুতিনও। সোমবার তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ইউক্রেনের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী অধিকৃত এলাকাকে স্বীকৃতি দিতে চলেছে রাশিয়া। যার একটাই অর্থ—এবার সরাসরিই ইউক্রেনকে সঙ্ঘাতে আহ্বান করতে চলেছেন পুতিন।

০২ ১৩

ইউক্রেনের ওই দুই এলাকা দনেৎস্ক এবং লুহানস্ক, যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়, সেখানে এখনও ইউক্রেন সেনার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সোমবারের ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগ বাড়িয়ে ইউক্রেনের দুই এলাকাকে রাশিয়ার স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ ইউক্রেনকে প্রকাশ্যে যুদ্ধের জন্য উসকানি দেওয়া। একইসঙ্গে এটাও বোঝানো যে সেনা নিয়ে ইউক্রেনের সীমান্তে ঢোকার পথ পরিষ্কার করে রাখল রাশিয়া।

Advertisement
০৩ ১৩

ফলে কী হতে চলেছে? রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে মস্কো যে ইতিমধ্যই প্রায় দু’লক্ষ সেনা মোতায়েন করেছে এবং তারা যে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত সে ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছিল আমেরিকা। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক রাশিয়ার এই পদক্ষেপে কী হতে পারে। গোটা পর্বে কার লাভ হচ্ছে, কারই বা ক্ষতি।

০৪ ১৩

কী নিয়ে সমস্যা? ২০১৪ সালে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ থেকে নিজেদের মুক্ত বলে ঘোষণা করে ডনবাস। অভিযোগ, ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ যে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে তাদের রাশিয়াই অর্থ এবং নানারকম সুযোগ সুবিধা দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে লালন করে আসছে। এমনকি এই এলাকার বাসিন্দাদের কোভিড টিকাকরণ, প্রায় আট লক্ষ পাসপোর্টের ব্যবস্থাও করেছে পুতিন সরকার।

০৫ ১৩

রাশিয়ার স্বীকৃতি পেলে কী হবে? রাশিয়া এই প্রথম প্রকাশ্যে বলল তারা ওই দুই এলাকাকে ইউক্রেনের অংশ বলে মনে করে না। যার অর্থ রাশিয়া এখন চাইলেই সেখানে সেনা পাঠাতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হবে, তারা ডনবাসের ‘বন্ধু’ হিসেবে তাদের ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে চাইছে।

০৬ ১৩

দনেৎস্কের এক প্রাক্তন রাজনৈতিক নেতা আলেকজান্ডার বোরোদাই, যিনি এখন রাশিয়ার পার্লামেন্টেরও সদস্য, সম্প্রতি বলেছিলেন, রাশিয়া যদি ডনবাসকে ইউক্রেনের সরকারের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত পৃথক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তবে সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারাও ডনবাসকে ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত করতে রাশিয়ার পাশে দাঁড়াবে। ফলে দু’দেশের মধ্যে শুরু হবে সেনা সঙ্ঘাত।

০৭ ১৩

মিনস্ক শান্তি প্রক্রিয়ার কী হবে? ২০১৪ সালে ডনবাস নিজেকে ইউক্রেনের শাসন মুক্ত ‘প্রজাতন্ত্র’ ঘোষণা করার পর ২০১৪-১৫ সালে মিনস্ক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তিকে ডনবাস সমস্যার সেরা সমাধান বলে মনে করা হয়েছিল।

০৮ ১৩

ওই চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেনের অধীনে থেকেও দনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকা দু’টি সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করবে। এ ব্যাপারে ইউক্রেন বা অন্য কোনও রাষ্ট্র কোনওরকম হস্তক্ষেপ করবে না। যদিও ইউক্রেন বা রাশিয়া কেউই এ যাবৎ সেই চুক্তির শর্ত মানেনি। তবে রাশিয়া ডনবাসকে স্বীকৃতি দিলে এই চুক্তি ভাঙবে।

০৯ ১৩

পশ্চিমী দেশগুলি কী করবে? পশ্চিমের একাধিক দেশের সরকারের তরফে মস্কোকে এ ব্যাপারে আগেই সতর্ক করা হয়েছে। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইউক্রেন সীমান্তে হওয়া রাশিয়ার সেনা বাহিনীর যে কোনও আক্রমণাত্মক কার্যকলাপের দাম দিতে হবে রাশিয়াকে। এমনকি পশ্চিমী দেশগুলি থেকে আসা অর্থ সাহায্যেও তার প্রভাব পড়বে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। যদিও তাতে পুতিনের সিদ্ধান্তে নড়চড় হয়নি।

১০ ১৩

রাশিয়া কি এর আগে বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে স্বীকৃতি দিয়েছে? দিয়েছে। এর আগে জর্জিয়ার দু’টি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল মস্কো। এ নিয়ে জর্জিয়ার সঙ্গে সেনা সঙ্ঘাতও হয়েছিল রাশিয়ার। ২০০৮ সালে একটা ছোটখাটো যুদ্ধই হয়েছিল রাশিয়া এবং জর্জিয়ার। পরে ওই দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী এলাকাকে আর্থিক সহায়তা, সেনা নিরাপত্তা এবং নাগরিকত্ব দিয়ে সাহায্য করে মস্কো।

১১ ১৩

ইউক্রেনের ডনবাস আয়ত্তে এলে কী লাভ রাশিয়ার? ইউক্রেনের ওই দু’টি অঞ্চল দখলে এলে রাশিয়ার দখলে আসবে একটি বন্দরও। দনেৎস্কের ওই বন্দর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকলে ঘুরপথে বাণিজ্যের বড় সমস্যা ঘুচবে রাশিয়ার। সহজ হবে বাণিজ্যপথ। বাঁচবে বিপুল অর্থ।

১২ ১৩

ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় চিন্তা নেটো। রাশিয়ার হাত থেকে বাঁচতে কোনও ভাবে যদি ইউক্রেন নেটোয় অংশ নেয়, তা হলে এই পুরো এলাকায় রাশিয়ার কর্তৃত্ব খর্ব হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। মস্কোর দাবি, ইউক্রেনকে নেটোর অংশ করে এই অঞ্চলে কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছে আমেরিকা-সহ নেটো গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলি। জর্জিয়ার ক্ষেত্রেও এই একই ভয় পেয়েছিল মস্কো।

১৩ ১৩

ক্ষতি বা ঝুঁকি কোথায়? মিনস্ক শান্তি চুক্তি ভাঙলে আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়বে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হবে। তা ছাড়া প্রায় আট বছরের যুদ্ধদীর্ণ দু’টি এলাকার সম্পূর্ণ দায়িত্বও নিয়ে হবে রাশিয়াকে। সেই বোঝাও কম হবে না।

ছবি: রয়টার্স

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement