সমাজমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তা-ও আবার তিনি যদি সেলেব হন! নিজের জীবনযাপনের ভিডিয়ো করে সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেন অনেক টলি-বলি তারকা। কিন্তু নিজের জীবনকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত রাখতে পছন্দ করেন ছোটপর্দার তারকা সুনীল গ্রোভারের স্ত্রী আরতি গ্রোভার।
কৌতুকাভিনেতা হিসাবে বিনোদন জগতে বেশ পরিচিত সুনীল। বিশেষত ছোটপর্দায় ‘কমেডি নাইটস উইথ কপিল’ শোয়ের জন্য। সেখানে সুনীলের গুত্থী এবং ডক্টর মশহুর গুলাটী চরিত্র দেখে হাসতে হাসতে কুপোকাত হয়ে পড়তেন দর্শক।
ওটিটির পর্দায় নতুন নামে শুরু হলেও ২০২২-এ ইতি টানে এই ‘কমেডি শো’। তবে সমাজমাধ্যমে আজও ভাইরাল ‘কমেডি নাইটস উইথ কপিল’-এর ক্লিপিং। গুত্থীর নানা মজার ক্রিয়াকলাপ বেশ ভাইরাল সমাজমাধ্যমে।
১৯টি সিনেমায় কাজ করেছেন সুনীল। ২০ থেকে ২৫টি কাজ রয়েছে ছোটপর্দায়। এ ছাড়াও বেশ কিছু ওয়েব সিরিজ়েও দেখা গিয়েছে সুনীলকে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে সুনীলের কাছে এখন রয়েছে প্রায় ২১ কোটি টাকার সম্পত্তি।
স্ত্রী আরতি এবং সন্তানকে নিয়ে সুনীলের পরিবার। তারকাপত্নী হয়েও আরতি ব্যতিক্রমী। তাঁর মধ্যে তারকাদের মতো হাবভাবও নেই। জানলে অবাক হবেন, সমাজমাধ্যমে এই তারকাপত্নীর কোনও অ্যাকাউন্টও নেই।
আরতি পেশায় একজন অন্দরসজ্জা শিল্পী। রঙিন, নিত্যনতুন জিনিসের সঙ্গে পুরনো সামগ্রীর ছোঁয়ায় ঘর সাজান তিনি। কিন্তু সবটাই সমাজমাধ্যমের আড়ালে।
ক্যামেরা এবং আলোর ঝলকানি থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করেন আরতি। স্বামীর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি থাকলেও, নিজের পেশার প্রতি সব সময় একাগ্র তিনি। সুনীল-পত্নীর আয়ও কম নয়।
আরতি নিজে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় নন। তাঁদের দু’জনের ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নেন সুনীল। তবে একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত তেমন একটা দেখা যায়নি।
স্বামীর সঙ্গে ক্যামেরার সামনে একটি মাত্র কাজ করেছেন আরতি। ২০২৩ সালে এক রং সংস্থার সঙ্গে এই জুটি কাজ করেছিলেন। ভিডিয়োর মধ্যে দিয়ে আরতি তাঁর ঘর সাজানোর পছন্দগুলি তুলে ধরেছিলেন।
পাপারাৎজ়িরাও আরতিকে খুব একটা ফ্রেমবন্দি করতে পারেন না। আরতিকে ফিল্মি পার্টিতেও খুব একটা দেখা যায় না। যদি কোনও ছবি ধরা পড়ে সেখানেও আরতিকে তাঁর স্বামী ও সন্তানের সঙ্গেই দেখা যায়।
সুনীলের জন্ম হরিয়ানায়। শৈশবও কেটেছে সেখানে। পরে কাজের সূত্রে মুম্বই চলে যান। দীর্ঘ কাল কাজ করে মুম্বইয়ে একটি বাড়ি তৈরি করেছেন সুনীল। সেই বাড়ি সৃজনশীলতা ও পেশাদার দক্ষতা দিয়ে নিজে হাতে সাজিয়েছেন আরতি।
সুনীল চণ্ডীগড়ের পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন। প্রথম থেকেই তিনি অভিনয়কে পেশা হিসাবে নিতে চাইতেন। তাই পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থিয়েটার নিয়েই স্নাতকোত্তর পড়েন সুনীল।
আরতির বিষয়ে সে ভাবে কোনও তথ্যের উল্লেখ না থাকলেও কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী আরতি এবং সুনীলের প্রথম দেখা হয়েছিল পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে তাঁরা বন্ধু ছিলেন। পরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন এই জুটি।
২০১৫ সালে বিয়ে হয় তাঁদের। খুবই সাধারণ ভাবে বিয়ে সেরেছিলেন এই দম্পতি। শুধুমাত্র সুনীল এবং আরতির পরিবারের কিছু মানুষ ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বিশেষ দিনটি উদ্যাপন করেছিলেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমের কেউ উপস্থিত ছিলেন না তাঁদের বিয়েতে।
সুনীল নিজেও কখনও স্ত্রীকে নিয়ে ক্যামেরার সামনে খুব একটা কিছু বলেননি। যদিও এক সাক্ষাৎকারে স্ত্রীর বিষয়ে মজার ছলে বলেছিলেন, ‘‘সব কথায় না হলেও প্রতি দু’-একটা কথায় আরতি আমায় খোঁচা দেয়। আসলে আমার মনে হয় আমারই ভুল থাকে, তাই বলে।’’
১৯৯৫ সালে ছোটপর্দায় অভিনয়জীবন শুরু সুনীলের। তাঁর কৌতুক অভিনয়ের জন্যই বিশেষ ভাবে পরিচিত তিনি। তবে তার বাইরে গিয়েও বেশ কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে সুনীলকে। উল্টো দিকে আরতি সম্পূর্ণ শান্ত জীবনকে বেছে নিয়েছেন। নিরিবিলিতে পরিবার এবং নিজের কাজেই মেতে থাকতে পছন্দ করেন আরতি।