Japan’s Most Bizarre Mystery

স্কুলের বাথরুমের পাইপে আটকানো তরুণের অর্ধনগ্ন দেহ, সঙ্গে একপাটি জুতো! ৩৬ বছরেও সমাধান হয়নি যে মৃত্যুরহস্যের

শৌচাগারের ভিতর একপাটি জুতো কোথা থেকে এল, তা বুঝতে শৌচাগারের বাইরে ট্যাঙ্কের সামনে গিয়ে পৌঁছোন স্কুলের শিক্ষিকা। তিনি লক্ষ করেছিলেন যে, ট্যাঙ্কের মুখ থেকে একজোড়া পা ঝুলছে। কোনও পায়েই জুতো নেই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ ১২:২৬
Share:
০১ ১৫

স্কুলের সব কাজকর্ম শেষ। ছাত্রছাত্রীদেরও ছুটি হয়ে গিয়েছে বহু ক্ষণ। হাতের বাকি কাজ সেরে স্কুল থেকে বেরোনোর উপক্রম করছিলেন শিক্ষিকা। বেরোনোর আগে চোখেমুখে জল দিতে স্কুলের শৌচাগারে যান তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে চমকে গেলেন শিক্ষিকা। শৌচাগারের মুখে পড়ে রয়েছে এক পাটি কালো জুতো। দেখে মনে হচ্ছে পাইপের ভিতর ঢুকে রয়েছে মানবদেহের বাকি অংশ। ভয় পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে বাইরে চলে যান শিক্ষিকা।

০২ ১৫

ঘটনাটি ৩৬ বছর আগেকার। ১৯৮৯ সালে জাপানের ডুলু নামের একটি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে পড়াতেন ইউমি টানাকা। স্কুল ছুটির পর এক বার চারদিক টহল দিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইউমি। চোখেমুখে জল দিতে স্কুলের শৌচাগারে যান তিনি। তখনই লক্ষ করেন, শৌচাগারের একটি পাইপের মুখ থেকে একপাটি কালো জুতো উঁকি দিচ্ছে।

Advertisement
০৩ ১৫

শৌচাগারের ভিতর একপাটি জুতো কোথা থেকে এল, তা বুঝতে শৌচাগারের বাইরে ট্যাঙ্কের সামনে পৌঁছোন ইউমি। শিক্ষিকা দেখেন যে, ট্যাঙ্কের মুখ থেকে একজোড়া পা ঝুলছে। কোনও পায়েই জুতো নেই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন ইউমি।

০৪ ১৫

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। ট্যাঙ্কের ভিতর যে কারও মৃতদেহ আটকে রয়েছে তা বুঝতে পারে পুলিশ। কিন্তু এত সরু পাইপের মুখ দিয়ে কী করে মানুষ গলে যায় তা নিয়ে সন্দেহ জাগে পুলিশের।

০৫ ১৫

ট্যাঙ্কের পাইপের মুখ ছিল ৩৬ সেন্টিমিটার চওড়া। পাইপটি না কেটে কোনও মতেই সেই মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলে জানায় পুলিশ। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টার পর এক তরুণের অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় পাইপের ভিতর থেকে। পাইপের ভিতর তরুণের দেহ মুড়ে ছিল। একটি কোট খুব সুন্দর করে ভাঁজ করে তরুণের বুকের কাছে রাখা ছিল।

০৬ ১৫

তরুণের মাথার কাছে দেখা যায় একপাটি কালো জুতো। পাইপ থেকে তরুণের মৃতদেহ উদ্ধার করার পর খুব সন্তর্পণে পরীক্ষা করা হয়। তবে দেহের কয়েক জায়গায় কাটার চিহ্ন ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া যায়নি।

০৭ ১৫

তরুণের দেহ শনাক্ত করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, তরুণের নাম নাওউকি কান্নো। ২৬ বছর বয়সি নাওউকি ছিলেন সেখানকার এক পারমাণবিক কেন্দ্রের কর্মী। গ্রামের এক তরুণ দলের সদস্যও ছিলেন তিনি। খুব শান্ত প্রকৃতির স্বভাব ছিল তাঁর।

০৮ ১৫

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে যে, ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন নাওউকি। বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে নাওউকি তাঁর বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি যে বেশ কিছু ক্ষণ বাড়িতে ফিরবেন না তা-ও জানিয়েছিলেন। কিন্তু আর বাড়িই ফেরেননি নাওউকি।

০৯ ১৫

নাওউকির বাবা-মা প্রথমে তেমন চিন্তা না করলেও পরে তাঁরা ভয় পেতে শুরু করেন। তিন দিন কেটে যাওয়ার পরেও বাড়ি ফিরছিলেন না নাওউকি। চিন্তিত হয়ে পুলিশের কাছে নিখোঁজ হওয়ার লিখিত অভিযোগ জানান তাঁরা। তার পরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

১০ ১৫

তদন্ত চালিয়ে নাওউকির গাড়ির হদিস পায় পুলিশ। একটি খামারবাড়ির সামনে রাখা ছিল নাওউকির গাড়ি। কিন্তু গাড়ির ভিতর তিনি ছিলেন না। শত খোঁজাখুঁজির পরেও নাওউকির সন্ধান পাচ্ছিলেন না পুলিশকর্মীরা। শেষমেশ শিক্ষিকার কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেই নাওউকির দেহের খোঁজ পায় পুলিশ।

১১ ১৫

২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৯। স্কুলের শৌচালয়ের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় নাওউকির দেহ। কিন্তু তিনি কী ভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সেই পাইপের ভিতর ঢুকলেন, সেই রহস্য আজও অধরা পুলিশের কাছে। এত সরু পাইপের মধ্যে মৃতদেহ মোড়ানো অবস্থায় ভরে দেওয়াও কঠিন।

১২ ১৫

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, নাওউকি বোধ হয় শৌচালয়ের ভিতর উঁকি দিয়ে ছাত্রীদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখার চেষ্টা করছিলেন। সেই অবস্থায় পাইপের ভিতর আটকে যান তিনি। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তবে সেই দাবি হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয়দেরই একাংশ।

১৩ ১৫

গ্রামবাসীদের অনেকের দাবি, নাওউকি কখনওই কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। তিনি যে এমন কিছু করতে পারেন তা কল্পনা করাও কঠিন। তবে অন্য রহস্যের সন্ধান দেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সেই সময় গ্রামে ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রের একটি কারখানা তৈরি নিয়ে অশান্তি চলছিল।

১৪ ১৫

স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন যে, নাওউকি যে পারমাণবিক কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন, তা ওই কারখানা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিল। নাওউকির মৃত্যুর কয়েক মাস আগে তিনি এক সহকর্মীকে নিয়ে কারখানার নির্মাণকাজ দেখতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে আসার পর নাওউকির সহকর্মী আত্মহত্যা করেন।

১৫ ১৫

সহকর্মীর আত্মহত্যার এক মাস পরেই শৌচালয়ের পাইপ থেকে উদ্ধার হয় নাওউকির দেহ। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, সহকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে নাওউকির মৃত্যুর যোগসূত্র রয়েছে। তাঁরা দু’জন সেই কারখানা সংক্রান্ত কোনও গোপন তথ্য জেনে ফেলেছিলেন। তাই দু’জনকেই মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু কোনও প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ খুনের তদন্ত বন্ধ করে দেয়। ৩৬ বছর আগে তরুণের মৃত্যুর রহস্যের সমাধান হয়নি আজও।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement