Arpita Mukherjee

Arpita Mukherjee: অভিনয়টাই করে গেলে অর্পিতা অনেকটা দূর যেতেই পারতেন, বলছেন তাঁর পরিচালকরা

২০০৪ সাল নাগাদ মডেলিং শুরু অর্পিতার। প্রথম অভিনয় ২০১০-এ। তবে তত দিনে নাকি ঝাড়গ্রামের এক চলচ্চিত্র প্রযোজকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় তাঁর।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২ ১৬:৩৬
Share:
০১ ১৯

বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার আটপৌরে একটা বাগানঘেরা বাড়ি। এখানেই মা মিনতি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকতেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। প্রথম জীবনে। পরবর্তী কালে অবশ্য অর্পিতা এই বাড়ি ছাড়েন।

০২ ১৯

ইডি সূত্রের খবর, বেলঘরিয়াতেই আরও দু’টি ফ্ল্যাট নেন অর্পিতা। তার পর আরও কয়েকটি ফ্ল্যাট বদলে দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত পাড়ায় থিতু হন।

Advertisement
০৩ ১৯

কিন্তু দেওয়ানপাড়া থেকে ডায়মন্ড সিটির আবাসনে পৌঁছনোর যাত্রা কেমন ছিল? কী ভাবে একেবারে সাধারণ ঘরের মেয়ে অর্পিতা মডেল থেকে অভিনেত্রী হয়ে আচমকাই চলে এলেন আর্থিক বিতর্কের কেন্দ্রে? কী ভাবে উত্থান অর্পিতার! কোথা থেকেই বা তাঁর ফ্ল্যাটে এত টাকা! উত্তর খুঁজতে নেমে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে অর্পিতার জীবন সম্পর্কে।

০৪ ১৯

বাবা ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরে। মা গৃহবধূ। দুই বোন অর্পিতারা। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

০৫ ১৯

কলকাতাতেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা অর্পিতার। কলেজে পড়াকালীন শুরু মডেলিং। অর্পিতার কলেজের ‘বন্ধু’ সৌমেন রায় নামে এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বরাবরই সপ্রতিভ ছিলেন অর্পিতা।

০৬ ১৯

কলেজ জীবনের অর্পিতাকে ‘গো-গেটার’ বলেও উল্লেখ করেছেন সৌমেন, যিনি অর্পিতাকে ২০০২ সাল থেকে চেনেন বলে তাঁর দাবি। ‘গো-গেটার’ অর্থাৎ কোনও কিছু ভেবে নিলে তা আদায় করেই ছাড়া।

০৭ ১৯

কলেজের পড়াশোনা শেষ হওয়ার কিছু দিন পর অর্পিতার বাবা প্রয়াত হন। তখন মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয়েরও চেষ্টা করছেন অর্পিতা। বাবার কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিটি তাঁর কন্যাকে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। তবে অর্পিতা সেই চাকরি নিতে রাজি হননি। অর্পিতার মায়ের কথায়, ‘‘তখন ও মডেলিং, অভিনয় করছে। ওড়িয়া আর তামিল ছবিতেও অভিনয় করা শুরু করেছে। চাকরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল ও।’’

০৮ ১৯

অভিনয় জগৎ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সাল নাগাদ মডেলিং করা শুরু করেন অর্পিতা। প্রথম অভিনয় ২০১০ সালে। তবে তত দিনে নাকি ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা এক চলচ্চিত্র প্রযোজকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় তাঁর। কিছু দিন এক সঙ্গে ছিলেন বলেও শোনা যায়। যদিও সেই সম্পর্ক টেকেনি বেশি দিন।

০৯ ১৯

মডেলিংয়ের পাশাপাশি রূপসজ্জার প্রশিক্ষণও চলছিল। ‘নেল আর্ট’ শেখেন অর্পিতা। কয়েক বছরের মধ্যে পাটুলি, লেক ভিউ রোড, বরানগরে তিনটি নেল আর্ট স্টুডিও খুলে ফেলেন। যদি এই ব্যবসার অর্থ কোথা থেকে এসেছিল অর্পিতার কাছে, তা স্পষ্ট নয়।

১০ ১৯

অর্পিতা তখনও সিনেমায় কাজ করা শুরু করেননি। প্রথম কাজ করেন ‘স্পর্শ’ নামের একটি ছবিতে। তবে সেই ছবির কথা অনেকেই জানেন না। ‘মামা ভাগ্নে’ ছবির পরেই তিনি প্রথমে দর্শকদের নজরে আসেন। সেটি মুক্তি পায় ২০১০ সালে।

১১ ১৯

টালিগঞ্জের প্রযোজক পরিচালক অনুপ সেনগুপ্তর ছবি ‘মামা ভাগ্নে’তে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জিৎ মল্লিক, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান অর্পিতা।

১২ ১৯

সেই অনুপ তাঁর ছবির অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে সাড়ে ২২ কোটি টাকা উদ্ধারের খবরে চমৎকৃত। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আমার ‘মামা-ভাগ্নে’, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, ‘বাংলা বাঁচাও’ ছবিতে পরপর কাজ করেছিলেন অর্পিতা। তার পরে আর যোগাযোগ রাখেননি। ১২ বছর পরে খবরের শিরোনামে তিনিই! জেনে অবাক লাগছে।’’ তার পরেই দাবি, ‘‘লোভ মানুষকে কোথায় নামিয়ে আনে।’’

১৩ ১৯

চমকেছেন বিজেপির কলকাতা জেলা সভাপতি তথা চলচ্চিত্র পরিচালক সংঘমিত্রা চৌধুরীও। সংঘমিত্রা বলেছেন, ‘‘আমার দু’টি সিনেমায় অভিনয় করেছিল ও। ‘দ্য ভুত অব রোজভিল’ আর ‘বিদেহীর খোঁজে রবীন্দ্রনাথ’। আমার এক পরিচিত যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিল। ২০১১ সালে ও আমার ছবির শ্যুটিংয়ে আসত বাসে, ট্রেনে চড়ে। আমাকে বলা হয়েছিল, অর্পিতা রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে।’’

১৪ ১৯

সংঘমিত্রা জানান, ২০১৩ সাল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল অর্পিতার। কী ধরনের ছবি করবেন, সে ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে আলোচনাও করতেন। সংঘমিত্রা বলেন, ‘‘২০১৩ সালে আমি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে আমার সঙ্গে ওর যোগাযোগ একেবারেই কমে যায়।’’

১৫ ১৯

কেমন অভিনয় প্রতিভা ছিল? সঙ্ঘমিত্রা বলেন, ‘‘শুধু অভিনয়টাই করলে ও অনেক দূর যেতেই পারত। রূপের পাশাপাশি অভিনয় দক্ষতাও ছিল। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ছিল উচ্চাকাঙ্ক্ষা। ও শুরু থেকেই বেশি উপার্জনের জন্য অন্য ভাষায় ছবি করার কথা বলত।’’

১৬ ১৯

২০১৩ সালের পর বাংলার আর কোনও ছবিতে সে ভাবে দেখা যায়নি অর্পিতাকে। তবে সংঘমিত্রাকে তিনি বেশ কয়েক বছর পর দেখা হতে জানিয়েছিলেন, তিনি ওড়িয়া এবং তামিল ছবিতে অভিনয় করছেন। সঙ্গে মডেলিংও করছেন।

১৭ ১৯

যদিও অর্পিতা কোন ব্র্যান্ড বা পণ্যের মুখ তা জানা যায়নি। তবে তার নাম জানা গিয়েছিল। সিনেমার দৌলতে নয়। সম্পূর্ণ অন্য কারণে। ২০১২ সালই রাজ্যের মন্ত্রী পার্থের ‘ভাল বন্ধু’ বলে অর্পিতার নাম প্রকাশ্যে এসেছিল একবার।

১৮ ১৯

২০১৯ সালে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন অর্পিতা। ঘটনাচক্রে, সেই পুজোও রাজ্যের মন্ত্রী পার্থের পুজো হিসেবেই পরিচিত। তথাকথিত টলিউডের ‘পার্শ্বচরিত্রের’ অভিনেত্রী অবশ্য নাকতলায় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে জায়গা নেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের। পর পর দু’বছর নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন অর্পিতা।

১৯ ১৯

অর্পিতার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ছবিতে চোখ রাখলে দেখা যায়, বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন অর্পিতা। বেশ কয়েকবা র বিদেশ যাত্রাও করেছেন তিনি। গিয়েছেন ব্যাঙ্ককেও। ইডির একটি সূত্রের প্রশ্ন, গত কয়েক বছরে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও কাজ না করেও এই বিপুল অর্থ কোথা থেকে যোগাতেন অভিনেত্রী? অভিনেত্রীর মা মিনতি অবশ্য জানিয়েছেন, মেয়ের যে এত সম্পত্তি তা জানাই ছিল না তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement