ঐতিহাসিক: জালিয়ানওয়ালা বাগে একটি কুয়োতে পড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সে দিন। পরে তারই উপরে নির্মিত হয় এই স্মারক সৌধ ‘শহিদি কুঁয়া’।
হাওড়া স্টেশন থেকে ১১ এপ্রিল পঞ্জাব মেল-এ উঠেছিলেন ‘দ্য ট্রিবিউন’ কাগজের সহকারী সম্পাদক অমল হোম। দু’দিন পর দুপুরে লাহৌর পৌঁছবেন, এই ছিল আশা। কিন্তু পাঁচ ঘণ্টা লেট করে ট্রেন যখন অমৃতসর স্টেশনে ঢুকল, তখন প্ল্যাটফর্ম ছেয়ে ফেলেছে গোরা ফৌজ। চারদিকে বালির বস্তার ওপর চড়ানো মেশিনগান। গাড়িতে চলছে খানাতল্লাশি। ঠিক তখনই বাঙালি সাংবাদিকের কানে এল বিকট কড়কড় শব্দ! যেন কাছ থেকেই আসছে! তাঁর কথায়, ‘একটা গোরাকে জিজ্ঞাসা করলাম— ব্যাপারখানা কী? উত্তরে সে স্টেশনের বাইরে, শহরের দিকে তার বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলটা বাড়িয়ে দিয়ে জানালে—লটস অব ফান গোয়িং অন দেয়ার— ওখানে দেদার মজা চলছে!’
তখন ঘড়িতে বিকেল সাড়ে চারটে-পাঁচটা! ১৩ এপ্রিল ১৯১৯, রবিবার। মজা নেহাত কম হচ্ছিল না! কিছুক্ষণ আগেই অমৃতসরের আকাশে দেখা গেছে যুদ্ধবিমান। জালিয়ানওয়ালা বাগের মাথার ওপর চক্কর দিয়ে দেখে নিয়েছে, ভিড় কতটা জমল! ঠিক তার আগের বছর এপ্রিলেই রয়্যাল এয়ার ফোর্স তো আর এমনি এমনি তৈরি হয়নি বিলেতে! প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আকাশপথে পরিদর্শন ও যুদ্ধ তো চালু হয়েই গিয়েছিল। এ বার অমৃতসর, লাহৌর, গুজরানওয়ালার আকাশে অবাধ্য নেটিভদের রাওলাট-বিরোধী গতিবিধির ওপর নজর রাখার কাজেও আসতে লাগল। যুদ্ধজয়ের গর্বে ইংরেজদের তখন মাটিতে পা পড়ছে না। লাহৌরের কমিশনার কিচিন তো খোলাখুলি বলেই দিয়েছিলেন জনগণকে, ‘সরকার জার্মানি জয় করেছে, সে যে কোনও কিছু করতে সক্ষম। সবাইকে তাই সরকারের আদেশ পালন করতেই হবে।’ জার্মানিকে যখন শায়েস্তা করা গেছে, তখন জার্মান মদতপুষ্ট গদরপন্থী বিপ্লবীদের মুল্লুকে এ বার কড়া দাওয়াই দেওয়ার পালা। বাংলার বিপ্লবীদের সঙ্গে যোগসাজশ আর ইংরেজ-বিরোধিতা ঘুচে যাবে জন্মের মতো। আর এই ‘রাওলাট সত্যাগ্রহ’ নামে নতুন ব্যামোরও চিকিৎসা আছে।
চিকিৎসাটা শুরু হয়েছিল দু’দিন আগে থেকেই। ১১ই এপ্রিল সন্ধেয় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডায়ার অমৃতসরে পৌঁছে দায়িত্ব নেওয়ার পরে সে দিন গভীর রাতে বিদ্যুৎহীন করে দিলেন শহরটাকে। সে দিন সকাল থেকেই শহরবাসীর মাথার ওপর চক্কর দিচ্ছিল বিমান। পরের দিনও। ১২ তারিখ থেকে শহরের অলিগলিতে সেনা নামালেন ডায়ার। নিজে বেরোলেন দুটো সাঁজোয়া গাড়ি সঙ্গে নিয়ে। বিদ্যুৎ নেই, জল সরবরাহ আগের দিনই বন্ধ করা হয়েছে। বিশেষ ছাড়পত্র ছাড়া শহরে ঢোকা বা শহরের বাইরে বেরোনো অসম্ভব। মিলিটারি পরাক্রম দেখিয়ে তখন প্রমাণ করতে চাওয়া হচ্ছে, অমৃতসর কার দখলে। ডেপুটি কমিশনার আর্ভিং-এর প্রশ্ন অনুযায়ী, ‘Who governs Amritsar?’ রাজার জাত না প্রজা?
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শহরের ইংরেজ প্রশাসকদের খুবই চিন্তা ও অস্বস্তিতে ফেলেছিল স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সইফুদ্দিন কিচলু ও সত্যপাল-এর নেতৃত্বে মার্চ মাসের শান্তিপূর্ণ রাওলাট আইন প্রতিরোধ এবং মুসলমান-হিন্দু-শিখের অভূতপূর্ব যোগদান। ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি ফতোয়া জারি হল কোনও জনসভায় ভাষণ না দেওয়ার। তা সত্ত্বেও ৬ এপ্রিল এক বিরাট জমায়েত আটকানো গেল না। সেখান থেকে দাবি উঠল, কিচলু ও সত্য পল-এর উপর থেকে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক, কারণ রাওলাট-এর নামে সদ্য চালু হওয়া কালা কানুনের স্বরূপ পঞ্জাববাসীকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছিলেন ওই দুজন। ৬ এপ্রিল পুরো শহর স্তব্ধ করে হরতাল হল, তার উপর সরকারের বিরুদ্ধে এত সব বড় বড় কথা!
পঞ্জাবে দণ্ডমুণ্ডের কর্তা স্যর মাইকেল ও’ডোয়্যার ছ’বছর ধরে বজ্র আঁটুনিতে বেঁধে রেখেছিলেন পঞ্চনদীর দেশকে। তাঁর জমানায় নেটিভদের এত আস্পর্ধা! একেই শিখ-মুসলমান-হিন্দু যুবারা যুদ্ধের পর আর সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে চাইছে না। সেই সিপাহি বিদ্রোহের সময় থেকে পঞ্জাবি সৈন্যরা লক্ষ্মীছেলের মতো আনুগত্য প্রমাণ করে আসছিল। ‘যোদ্ধা জাতি’ বলে উস্কে দিয়ে, রুখাশুখা জমির মালিকদের নানা সুবিধার লোভ দেখিয়ে, গ্রামকে গ্রাম খালি করে শুধু পঞ্জাব থেকেই ৪,৮০,০০০ পুরুষকে বিশ্বযুদ্ধে পাঠানো গিয়েছিল। তবে যুদ্ধের প্রথম দু’বছরে নাম লেখানো যত সহজে হয়েছিল, পরের দিকে আর ততটা নয়। ১৯১৭ থেকে শুরু হল জোর-জবরদস্তি, ১৯১৮-এর মাঝামাঝি থেকে হরেক রকম শাস্তি! প্রতিটি গ্রামের ‘কোটা’ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। যে গ্রাম থেকে ছেলে পাঠানোর ‘কোটা’ পূরণ হত না, পেয়াদারা সেখানে গিয়ে নিত্যনতুন জুলুম করত! অনিচ্ছুক বেইমানদের জমিতে সেচের জল বন্ধ করে দেওয়াও ছিল একটা ‘শিক্ষা দেওয়া’।
বছর চারেক আগেই কানাডা-ফেরত ‘কোমাগাতা মারু’ জাহাজটাকে বজবজে জোর করে ভিড়িয়ে উচিত শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে-আসা পঞ্জাবি যাত্রীদের। কালো মানুষ, স্বাভাবিক ভাবেই তারা কাজের খোঁজে কানাডায় পৌঁছেও ঢুকতে পায়নি। কানাডা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে বলেই তাদের ঢুকতে দিতে হবে নাকি? ওই গদর দলের বিপ্লবীরাই বর্ণবৈষম্যের ধুয়ো তুলে এদের ফোঁস করতে শেখাচ্ছে! সে বার বজবজে জাহাজ থেকে নামার পর এরা একটু অস্থিরতা দেখিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে একুশ জনের লাশ ফেলে দেওয়া হল। তবু এদের তেজ কমে কই!
ও দিকে স্যর মাইকেল যুদ্ধের পরেও মিলিটারিতে ভর্তির জুলুম চালাতে চালাতে পঞ্জাবি কৃষিজীবীদের বেইমানিতে বিরক্ত হচ্ছিলেন। এর মধ্যে আবার শহরের শিক্ষিত উকিলরা মানুষ খেপাচ্ছে! এত সুবিধেজনক একটা আইন হল— যেখানে সেখানে যে কাউকে ওয়ারেন্ট ছাড়া ধরা যেতে পারে, বিনা বিচারে আটকেও রাখা যেতে পারে যত দিন খুশি! কে ‘অ্যানার্কিস্ট’ আর কে বিপ্লবী তার কোনও প্রমাণও লাগবে না! যদি কোনও না-পসন্দ ঐতিহাসিক নথি বা বই পাওয়া যায় কোনও ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তির কাছে, সেটা ‘সিডিশাস’ বলে চালিয়ে দিলেই হল! অ্যাপিল চলবে না, জুরি থাকবে না। রাজার হুকুম! এ নিয়ে বেশি ট্যাঁফোঁ করলে পঞ্জাববাসীদের ভাল করে কড়কে দিতে হবে।
১৩ এপ্রিল স্মরণে এক জনসভায় জওহরলাল নেহরু। ১৯৫২ সালের ছবি।
৬ এপ্রিল থেকেই তার মহড়া চলছিল। পঞ্জাবে তখনও পর্যন্ত রাওলাট সত্যাগ্রহকে ঘিরে তেমন কোনও হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটলেও, ৯ তারিখ গাঁধীর পঞ্জাব প্রবেশ আটকানো হল। তার পর দিনই সইফুদ্দিন কিচলু ও সত্যপালকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হল কোনও ‘অজানা’ গন্তব্যে। নেতাদের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষুব্ধ অমৃতসরবাসী ১০ এপ্রিল পথে নামলেন। আগুন জ্বলল কিছুক্ষণের মধ্যেই। নেতাদের মুক্তির দাবিতে প্রচুর মানুষ হাঁটছিলেন শহরের ডেপুটি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে। মিলিটারি পিকেট তাঁদের পথ আটকানোর পর ব্যারিকেড ভেঙে কিছু মানুষের এগোনোর চেষ্টা থেকে গন্ডগোল শুরু। অচিরেই ভিড় লক্ষ্য করে গুলি, কুড়ি-পঁচিশ জনের মৃত্যু! এ বার জনতার একাংশ উন্মত্ত। তারা আক্রমণ করল টাউন হল, দুটো বিদেশি ব্যাঙ্ক, টেলিগ্রাফ আর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ। মারমুখী জনতার হাতে পাঁচ জন সাহেবের প্রাণ গেল, দু’জন মেমসাহেব আক্রান্ত হয়ে কোনও রকমে পালিয়ে বাঁচলেন। সঙ্গে সঙ্গে শহরটাকে মিলিটারির হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হল। অমৃতসরে ১৩০ জন ইংরেজ নরনারীকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি নেটিভদের শিক্ষা দেওয়ার বন্দোবস্ত শুরু হতে দেরি হল না।
পর দিন সকাল থেকে আকাশে বোমারু বিমান, রাস্তায় কারফিউ ও সেনা টহল, আগের দিনের ঘটনায় মৃতদের দেহ সৎকারে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা, যথেচ্ছ ধরপাকড় ও রাতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডায়ারের প্রবেশ। ১২ তারিখে শহরের কিছু জায়গায় নোটিস ঝুলিয়ে মিটিং-জমায়েত নিষিদ্ধ করা হল। শহরের কিছু মান্যগণ্য মানুষ ঠিক করলেন, পর দিন, ১৩ তারিখ বিকেলে একটা শান্তিপূর্ণ মিটিং করে কিচলু ও সত্যপাল-এর মুক্তির দাবি তুলবেন, সেই সঙ্গে ১০ তারিখের অনভিপ্রেত ঘটনার পর সাধারণ মানুষের চরম হয়রানি ও যথেচ্ছ গ্রেফতারের বিরুদ্ধেও কথা হবে। বিকেল চারটে নাগাদ ভালই জমায়েত হল স্বর্ণমন্দিরের কাছাকাছি বাগান-চত্বরে। ওখানে নিয়মিত মিটিং হত। সে দিন কিন্তু কোনও নোটিস ঝোলানো ছিল না ওই চত্বরে সভা নিষিদ্ধ করে। ঢোকার মুখে ভিড় আটকানোর চেষ্টাও হয়নি, যদিও চারদিকে থিকথিক পাহারা ছিল।
মিটিং শুরু হলে ডায়ার প্ল্যানমাফিক ওই চত্বরের একমাত্র সরু প্রবেশ-প্রস্থান পথের মুখে দুটো সাঁজোয়া গাড়ি লাগালেন। বেয়াদব লোকগুলো যাতে দৌড়ে বেরিয়ে পালাতে না পারে, সে জন্যে রাস্তার দু’ধারে মিলিটারি পিকেট বসে গেল। আকাশপথে পরিদর্শনও সম্পূর্ণ! তার পরেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের নির্দেশে হাঁটু-গেড়ে বসা বালুচ ও গোর্খা সৈন্যরা শুরু করল গুলিবর্ষণ! জনতাকে কোনও বিপদসঙ্কেত দেওয়ার প্রশ্নই নেই, কয়েকশো লোককে খতম না করতে পারলে কী ভাবে প্রতিশোধ নেওয়া যাবে ১০ তারিখের ওই পাঁচ জন স্বজাতির মৃত্যুর, সাফ করে দেওয়া যাবে যত বিদ্রোহ-সত্যাগ্রহকে! বিপদ বুঝে ভিড় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে কী ভাবেই বা গোটা পঞ্জাব জুড়ে একটা ‘নৈতিক প্রভাব’ ফেলা যাবে! সেই কারণেই জেনারেল ডায়ার কয়েক মাস পর তদন্তকারী হান্টার কমিশনকে বলেছিলেন, ‘‘শুধু জনগণকে ছত্রভঙ্গ করাই নয়, একটা নৈতিক প্রভাব ফেলারও ব্যাপার ছিল— মিলিটারির দিক থেকে দেখতে গেলে, শুধু ওখানে যারা উপস্থিত ছিল তাদের উপরেই নয়— গোটা পঞ্জাব জুড়ে।’
১৩ তারিখ সন্ধেয় ক্যাম্পে ফিরে বিশ্রাম নিয়ে কর্তব্যপরায়ণ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবার বেরোলেন রাত আটটার পর। শহরে টহল দিয়ে দেখে নিতে— কারফিউ ভেঙে কেউ চুপিচুপি জালিয়ানওয়ালা বাগের দিকে যাচ্ছে কি না। এত ত্রাসের মধ্যেও শোকস্তব্ধ মানুষ অনেকেই গভীর রাতে লণ্ঠন নিয়ে বেরিয়েছিলেন প্রিয়জনদের খোঁজে ওই মৃত্যুভূমির দিকে। সেই রাতের বিভীষিকার পর অমৃতসরবাসীরা সকাল হতে না হতেই দেখলেন, এপ্রিলের গরমে পচন ধরতে শুরু করা মৃতদেহগুলির আকর্ষণে মাথার ওপর চিল-শকুনের আনাগোনা। শহরজোড়া হাহাকারের মধ্যে প্রাণে বেঁচে যাওয়া আহত মানুষদের চিকিৎসা পাওয়ার পথ প্রায় রুদ্ধ, কারণ ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক ও চিকিৎসাপ্রার্থী দুজনেরই আগের দিনের সভার সঙ্গে যোগ থাকার অপরাধে গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা।
১৫ এপ্রিল গোটা পঞ্জাবে ঘোষিত হল সামরিক শাসন। প্রায় দু’মাসের ওই দুঃসহ শাসনকালে পঞ্জাবের মানুষ অসহ্য নির্যাতন ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ১৩ এপ্রিল বিকেলের ঘটনা এবং তার পর সামরিক আইনের শাসন স্যর মাইকেলের সাঙ্গোপাঙ্গদের কতটা মজার খোরাক জুগিয়ে চলছিল— প্রেস সেন্সরশিপ চালু থাকায় সে সব কথা পঞ্জাবের বাইরে পৌঁছনোর উপায় প্রায় ছিল না। জুন-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত পঞ্জাবে কারও ঢোকা-বেরোনো ছিল এক রকম অসম্ভব কাজ। লাহৌর-নিবাসী সরলা দেবী চৌধুরাণীর লেখা থেকে জানা যায়, পোস্ট অফিসগুলোতে বসেছিল শত শত সেন্সর। বিশেষ করে পঞ্জাব-বাংলার মধ্যে যাতে খবর চালাচালি না হয়, সেই কারণে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বহু বাঙালি পোস্টাল ক্লার্ককে, যাঁরা সব বাংলা চিঠি খুলে খুলে পড়তেন। এত ঢাকা-চাপা দেওয়ার চেষ্টার মধ্যেও নানা পথ ঘুরে খবর ঠিকই পৌঁছে গেল যেখানে যা পৌঁছনোর।
৩১ মে ভাইসরয় চেমসফোর্ডকে ‘আতঙ্কে নির্ব্বাক’ হয়ে যাওয়া দেশবাসীর মনের ‘বেদনাপূর্ণ ধিক্কার’ জানিয়ে নাইট উপাধি থেকে নিষ্কৃতি চাইলেন রবীন্দ্রনাথ। ধীরে ধীরে যে আসল ‘নৈতিক প্রভাব’ পড়া শুরু হল, তাতে এক বছরের মধ্যে দেশের রাজনীতির মোড় গেল ঘুরে।