Panakam recipe and history

তিন হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন গ্রীষ্মকালীন শরবত, নাম পানাকম, যা ‘দেবতা’রও প্রিয়!

শরীর ভিতর থেকে শীতল রাখতে রকমারি শরবত বানানোর চল আছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তপ্ত দিনে তেষ্টা মেটানোর জন্য রইল তেমনই ঘরোয়া পানীয়ের খোঁজ। জেনে নিন বানানোর প্রণালী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১১:২০
Share:

স্বাদে স্বর্গীয় যে শরবত! গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পানাকম। তামিল, তেলুগু এবং কন্নড়ভাষীদের মধ্যে জনপ্রিয় এই পানীয়ের নাম আসলে একটি সংস্কৃত শব্দ। যার অর্থ মিষ্টি পানীয়। তবে পানাকমকে শুধু মিষ্টি পানীয় বললে সবটা বলা হয় না। এটি গ্রীষ্মকালের জন্য উপযুক্ত একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়ও বটে। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ৩০০০ বছরের পুরনো ইতিহাস।

Advertisement

দক্ষিণ ভারতে এই পানীয় বহু বছর ধরে মন্দিরে ভোগ হিসাবে অর্পণ করা হয়ে আসছে। বিশেষ করে রাম যেখানে পূজিত সেই সব মন্দিরে পানাকম দেওয়া হয়ই। কারণ, ভক্তেরা মনে করেন এই শরবত রামের প্রিয় পানীয়। পানাকম একটা সময়ে নিয়ম করে রামনবমীর দিনেই তৈরি করা হত এবং পুজোর পরে তা বিলিয়ে দেওয়া হত ভক্তদের মধ্যে। চৈত্রের প্রখর গরমে সেই পানীয় নিমেষে শীতল করত ভক্তদের শরীর এবং মন।

খাবারের ইতিহাসবিদ মধুর জাফরি তাঁর বইয়ে লিখেছেন পানাকমের কথা। তিনি লিখছেন, ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের লিপিতেও পানাকমের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই হিসাবে এই পানীয় তিন হাজার বছরেরও বেশি প্রাচীন। তবে প্রাচীন লিপিতে পানাকম সাধারণ মানুষকে পরিবেশন করার কথা বলা হয়নি। পরবর্তী কালে যদিও পানাকম মন্দিরের প্রসাদ হিসাবে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। স্বাদ, গন্ধ এবং খাদ্যগুণের জন্য এই শরবত বাড়িতেও বানিয়ে খেয়েছেন সাধারণ মানুষ।

Advertisement

পানাকমের ঔষধি গুণের উল্লেখও রয়েছে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে। তাতে বলা হয়েছে, শরীর শীতল করার এই পানীয় পিত্ত দোষ দূর করতে এবং হজমের সমস্যা মেটাতে কার্যকরী। তবে এই সব কিছুর থেকে বেশি যেটি বিচার্য, তা হল এই পানীয়ের স্বাদ। যাকে এককথায় ব্যাখ্যা করতে হলে বলতে হয়— ‘স্বর্গীয়’!

আয়ুর্বেদেও পানাকমের ঔষধি গুণের উল্লেখ রয়েছে।

কী ভাবে বানাবেন ?

উপকরণ

১ কাপ আখের গুড় গুঁড়ো করে নেওয়া

৮ টি ছোট এলাচ

১/৪ টেবিল চামচ গোলমরিচের দানা

১ টি বড় পাতিলেবু

১ চা চামচ আদার পাউডার

৬-৭ টি তুলসীপাতা

১ চিমটে খাওয়ার কর্পূর

৬ কাপ ঠান্ডা জল

কী ভাবে বানাবেন পানাকম, প্রণালী জেনে নিন।

প্রণালী

ছোট এলাচ আর গোলমরিচ ভাল ভাবে থেঁতো করে নিন।

একটি পাত্রে জল এবং গুড় একসঙ্গে গুলে নিয়ে তার মধ্যে থেঁতো করা মশলা মিশিয়ে ১৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। এতে মশলার সমস্ত গন্ধ যেমন জলের সঙ্গে মিশবে, তেমনই গুড়ও জলের সঙ্গে ভাল ভাবে গুলে যাবে।

১৫ মিনিট পরে জল ছেঁকে নিন। এ বার ওই জলে মেশান এক চিমটে কর্পূর। তবে মনে রাখবেন, যে কোনও কর্পূর নয়, খাওয়া যায় এমন কর্পূর মেশাতে হবে। না পেলে এটি বাদও দিতে পারেন।

এর পরে একে একে মেশান লেবুর রস, আদার গুঁড়ো এবং তুলসীপাতা। পাতাগুলো জলে মেশানোর সময় হাতের চাপে খানিকটা রগড়ে নিতে পারেন। তাতে গন্ধ দ্রুত মিশবে জলে। এক বার ভাল ভাবে সব কিছু গুলিয়ে নিয়ে ৫ মিনিট রেখে দিন। তার পরে পরিবেশন করুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement