ধেয়ে আসছে গ্রহাণু ইউডব্লিউ-১৫৮। ছবি: এএফপি।
না, গণনা নির্ভুল। একটুও এ-দিক ও-দিক হল না। পৃথিবীর কান ঘেঁষেই চলে গেল গ্রহাণু ইউডব্লিউ-১৫৮। দূরবীঁণে ধরাও পড়ল তার ছবি। প্রায় পাঁচ লক্ষ কোটি ডলার প্ল্যাটিনাম শুধু দেখেই যেতে হল! বাজারে একেই সোনার দাম ২৫ হাজারের তলায় চলে গিয়েছে। এ বাজারে এই গ্রহাণুর থেকে প্ল্যাটিনাম পেলে দাম কোথায় গিয়ে নামত ভাবুন তো?
আমাদের কাছে তো আর বলিউডি ছবি আর্মাগেডন-এর ব্রুস উইলিস-এর মতো খননের কাজে দক্ষ দল নেই। নেই গ্রহাণুর বুকে নেমে খনন চালানোর মতো প্রযুক্তিও। অতএব হাত কামড়ানো ছাড়া কিই বা করার আছে? তবে আমরা নিজেদের ভাগ্যবানও মনে করতে পারি। এই গ্রহাণু যদি পথ পাল্টে এই গ্রহের দিকে ধেয়ে আসত। তা হলে বেশ কয়েক দিন আগে থেকে প্রলয়ের সব বিপদ সঙ্কেত এক সঙ্গে বাজতে শুরু করত। মাঝেমধ্যেই এ নিয়ে হইচইও হয়। কারণ, বিশাল আকারের গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়লে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। এমনকী বিপন্ন হতে পারে মানব সভ্যতাও। তাই এ দিকে কড়া নজর রাখছে জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা।
গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়াতেই ধরাধম থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসরের দল। এক দল বিজ্ঞানীর ধারণা এমনই। পৃভাবুন, অত বড় ডাইনোসরা যা সামলাতে পারল না এই ক্ষুদ্র মানব তা কি করে পারবে। থিবীর বুকে এমন আগ্রাসনের আরও চিহ্ন আছে। বেশ কিছু বড় লেক আদতে গ্রহাণুর আঘাতে তৈরি হয়েছে।
তা হলে পৃথিবীর দিকে ধাবমান এমন গ্রহাণু নিয়ে কী করা যায়? না, কোনও সর্বসম্মত উত্তর নেই। এক দলের মত, পৃথিবীতে ঢোকার আগেই পারমাবিক অস্ত্র ব্যবহার করে ধ্বংস করে দিতে হবে গ্রহাণুকে। কিন্তু মহাকাশে এই যুদ্ধ চালানোর ব্যবস্থাও তো বেশ আগেই তৈরি করে রাখতে হবে। কিন্তু সেই ব্যবস্থা তৈরির খরচ কে জোগাবে? না, এই প্রশ্নেরও কোনও সর্বসম্মত উত্তর নেই। আমাদের এত চিন্তায় ফেলেনি ইউডব্লিউ-১৫৮। পৃথিবীর থেকে শুক্রর যা দূরত্ব তার থেকেও কাছ দিয়ে কাছ দিয়ে চলে গেল সে। শুধু প্ল্যাটিনামের দুঃখটাই রয়ে গেল।