Volcano

Volcano: আগ্নেয়গিরির মাঝারি বিস্ফোরণেই অচল হতে পারে সুয়েজ খাল, ঝলসে যেতে পারে আফ্রিকা, আমেরিকার একাংশ

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাম্প্রতিক গবেষণা এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২১ ১৬:৩৪
Share:

-ফাইল ছবি।

হলিউডের সিনেমার মতো খুব বড়সড় আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ না হলেও চলবে। ভিসুভিয়াস ও সান্তোরিনির মতো কয়েকটি মাঝারি আকারের আগ্নেয়গিরিই গোটা পৃথিবীতে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘটিয়ে দিতে পারে। ডেকে আনতে পারে ভয়ঙ্কর সুনামি। বন্ধ করে দিতে পারে বিশ্ববাণিজ্যের প্রধান জলপথ সুয়েজ খাল। গভীর সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে যাওয়া টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার যাবতীয় লাইন ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে চরম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে তাইওয়ান-সহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি বড় অংশ, উত্তর আফ্রিকা, উত্তর-পশ্চিম আমেরিকা, ভূমধ্যসাগর এবং অতলান্তিক মহাসাগরের উত্তর দিকের দেশগুলিতে।

Advertisement

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সাম্প্রতিক গবেষণা এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার কমিউনিকেশন্স’-এ।

মাঝারি বা ছোট আগ্লেয়গিরির অগ্ন্যূৎপাত খুব ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে, গোটা পৃথিবীর এমন মোট সাতটি জায়গাকে (‘পিঞ্চ পয়েন্ট’) চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। আকারে কিছুটা ছোট হলেও ওই এলাকাগুলিতে রয়েছে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অনেকগুলি পুঞ্জ (‘ক্লাস্টার’)। আগ্নেয়গিরির সেই পুঞ্জগুলি রয়েছে তাইওয়ান, উত্তর আফ্রিকা, ভূমধ্যসাগর, উত্তর-পশ্চিম আমেরিকা ও অতলান্তিক মহাসাগরের উত্তর দিকের দেশগুলিতে।

Advertisement

মূল গবেষক, কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব এগজিসটেন্সিয়াল রিস্কস (সিএসইআর)-এর অধ্যাপক লারা মানি বলেছেন, “আমরা দেখেছি, এই সাতটি এলাকার মধ্যে যে কোনও একটিতে মাঝারি আকারের আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণে যে পরিমাণ ভস্ম ও ভয়াবহ কম্পনের জন্ম হবে, তৈরি করবে যে পরিমাণ কাদার স্রোত ও ভূমিধস, তা গোটা বিশ্বের যাবতীয় অর্থনৈতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, গভীর সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে যাওয়া টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিতে পারে এক লহমায়।”

আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী ‘সুপার ভলক্যানো’ তাকেই বলা হয়, যখন কোনও আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের মাত্রা ‘ভলক্যানিক এক্সপ্লোসিভিটি ইনডেক্স' (ভিইআই)-এ হয়ে যায় ৮। যদিও বিশেশজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। প্রতি ১ লক্ষ বছরে ঘটে মাত্র একটি। মাঝারি আকারের আগ্নেয়গিরিগুলির বিস্ফোরণের মাত্রা কখনওই ৭ বা ৮-এ পৌঁছয় না। তা ৬-এর মধ্যেই থাকে। তবু সেগুলি বিস্ফোরণের পর প্রচুর পরিমাণে ভস্ম, কম্পন, কাদার স্রোত ও ভূমিধস তৈরি করতে পারে।

আগ্নেয়গিরির ছোট বিস্ফোরণও কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা বোঝাতে একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন গবেষকরা। ১৯১২ সালে আলাস্কার নোভারুপ্তার অগ্ন্যুদ্গীরণের পর বিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয়েছিল ফিলিপিন্সের মাউন্ট পিনাটুবোয়। ১৯৯১ সালের ১৫ জুন। সেই বিস্ফোরণের মাত্রা ভিইআই স্কেলে ছিল ৬। আর ২০১০ সালে আইসল্যান্ডের ফাগরাদাল্‌সফেজাল আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের মাত্রা ভিইআই স্কেলে ছিল ৪। মাত্রায় কম হলেও আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের জন্য ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছিল। সেই আগ্নেয়গিরির ভস্মের জন্য গোটা ইউরোপের বিমান পরিবহণ ব্যবসার ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছিল। আর পিনাটুবো আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের জন্য ক্ষতি হয়েছিল মাত্র সাড়ে ৭ কোটি ডলার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement