এই শীতে পরপর তিন পূর্ণিমা জুড়ে ‘সুপারমুন’

পূর্ণিমার চাঁদকে এর ফলে একটু বেশি বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে বলে জানাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। প্রথমটি দেখা যাবে আজ, রবিবার। একে ‘সুপারমুন’ আখ্যা দিয়ে ইতিমধ্যেই হইচই শুরু হয়েছে নেট দুনিয়ায়।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

এ বারের শীতে বোধ হয় একটু বেশিই আর্কষণীয় হয়ে উঠবে পূর্ণিমার চাঁদ। কারণ, আগামী তিনটি পূর্ণিমাতেই চাঁদ থাকবে পৃথিবীর কাছাকাছি। পূর্ণিমার চাঁদকে এর ফলে একটু বেশি বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে বলে জানাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। প্রথমটি দেখা যাবে আজ, রবিবার। একে ‘সুপারমুন’ আখ্যা দিয়ে ইতিমধ্যেই হইচই শুরু হয়েছে নেট দুনিয়ায়। বিজ্ঞানীদের একাংশ এ-ও বলছেন, পরপর তিনটি পূর্ণিমায় এমন নজির খুব কমই আছে।

Advertisement

আজ, রবিবার পূর্ণিমা। সেই সঙ্গে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পাক খেতে খেতে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসবে চাঁদ। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশন্যাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার (পিএসি) জানিয়েছে, আগামী ২ জানুয়ারি এবং ৩১ জানুয়ারির পূর্ণিমাতেও পৃথিবীর কাছে থাকবে চাঁদ। ৩১ জানুয়ারি পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণও রয়েছে। কলকাতা-সহ গোটা দেশ থেকেই দেখা যাবে তা। পিএসি-র অধিকর্তা সঞ্জীব সেন বলছেন, ‘‘জানুয়ারি মাসে দু’টি পূর্ণিমা পড়েছে। তাই ৩১ জানুয়ারি দ্বিতীয় পূর্ণিমাকে ‘ব্লু মুন’ বলা হবে।’’

ক্ষুধার রাজ্যে গদ্যময় পৃথিবীতে পূর্ণিমার চাঁদকে ঝলসানো রুটি মনে হয়েছিল সুকান্ত ভট্টাচার্যের। তবে আদিকাল থেকে গোটা দুনিয়ার কবি-শিল্পীদের চোখে চাঁদ আর পৃথিবীর সম্পর্ক রোমান্সে রঙিন। জ্যোৎস্নার আঙুল দিয়ে ছোঁয়াছুঁয়ি চললেও সেই রোমান্স চিরবিরহের বলেই চিরজীবী। চিরবিরহ, কেননা কখনওই তাদের মিলন হয় না, হওয়ারও নয়। তাই উভয়ের কাছাকাছি আসাটুকু কম প্রাপ্তি নয়। দীর্ঘ ব্যবধানে একটু বেশি কাছে আসাটা বাড়তি প্রাপ্তি পৃথিবীর।

Advertisement

কিন্তু উভয়ের মধ্যে দূরত্ব কমে কী ভাবে? কে-ই বা কার কাছে আসে?

বিজ্ঞানের বিশ্লেষণ, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে উপবৃত্তাকার (অনেকটা ডিমের মতো) কক্ষপথে পাক খায় চাঁদ। পৃথিবীকে এক বার পাক খেতে তার গড়ে সময় লাগে সাড়ে সাতাশ দিন। এই সাড়ে সাতাশ দিনের মধ্যে চাঁদ এক বার পৃথিবীর কাছে চলে আসে এবং এক বার দূরে চলে যায়। দূরত্বটা যখন সব থেকে কমে যায়, সেটাকে বলে ‘অনুভূ’ অবস্থান। আর তারা যখন একে অপরের থেকে সর্বাধিক দূরে থাকে, সেই অবস্থানকে বলে ‘অপভূ’। চাঁদ কক্ষপথের যে কোনও অবস্থানে থাকাকালীনই পূর্ণিমা হতে পারে। কিন্তু অনূভূ অবস্থানের কাছাকাছি সময়ে পূর্ণিমা ঘটলে লোকমুখে সেটাই হয়ে যায় ‘সুপারমুন’।

সঞ্জীববাবু জানান, প্রতিটি অনুভূ অবস্থানে দূরত্ব সমান হয় না। রবিবার পূর্ণিমার সময় পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কমে ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৮৭ কিলোমিটার হবে। ২ জানুয়ারি তা হবে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার এবং ৩১ জানুয়ারি পৃথিবীর থেকে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরে থাকবে চাঁদ।

চাঁদ ও পৃথিবীর এই ‘রোমান্স’ নিয়ে ‘সুপারমুন’ বলে হইচই শুরু হলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানান, বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘সুপারমুন’ বলে কিছু নেই। পূর্ণিমা এবং চাঁদের অনুভূ অবস্থান— এই দু’টি মিলে গেলেই ‘সুপারমুন’ বলে প্রচার শুরু হয়ে যায়। যার জনক পশ্চিমী জ্যোতিষী রিচার্ড নোল্লে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন