Science News

রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন: মঙ্গলে দৈত্যাকার রোভার পাঠাচ্ছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি

জীবদেহের গঠনগত ও কার্যগত একক ডিঅক্সি-রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ)-এর গঠন আবিষ্কারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল রোজালিন্ডের। যদিও তিনি কোনও দিন নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হননি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লণ্ডন শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:৫৪
Share:

রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন। মঙ্গলে এই রোভার পাঠাচ্ছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। ছবি সৌজন্যে: ইএসএ।

আমাদের প্রতিবেশী ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলে নতুন রোভার মহাকাশযান পাঠাচ্ছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ বা ‘এসা’)। আগামী বছর। যা মঙ্গলে পৌঁছবে ২০২১-এ। ইএসএ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত যত রোভার পাঠানো হয়েছে মঙ্গলে, এটি তাদের মধ্যে বৃহত্তম। রোভারটির নামকরণ করা হয়েছে নোবেল পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হওয়া এক বিশিষ্ট ইংরেজ মহিলা বিজ্ঞানীর নামে। ‘রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন’। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ও রাশিয়ান স্পেস এজেন্সি ‘রসকসমস’ মঙ্গলে যৌথ ভাবে পাঠাচ্ছে ওই রোভার।

Advertisement

জীবদেহের গঠনগত ও কার্যগত একক ডিঅক্সি-রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ)-এর গঠন আবিষ্কারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল রোজালিন্ডের। যদিও তিনি কোনও দিন নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হননি। অথচ, তাঁর দেখানো পথেই ডিএনএ-র ডাব্‌ল হেলিক্স (প্যাঁচানো মইয়ের মতো সজ্জা) মডেল দেওয়ার জন্য যৌথ ভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিন জন বিজ্ঞানী। সেই হতভাগ্য ইংরেজ মহিলা বিজ্ঞানীকেই সম্মান জানাতে অভিনব পন্থা বেছে নিল ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। রোজালিন্ডের নামেই নামকরণ করা হল ইএসএ-র নতুন রোভারের।

রোজালিন্ডের নাম কেন বেছে নেওয়া হল?

Advertisement

ইএসএ জানিয়েছে, নতুন রোভারটির কাজ হবে মঙ্গলের পিঠে ঘুরে ঘুরে প্রাণের উপাদান খোঁজা। তাই পৃথিবীতে প্রাণের প্রধান উপাদানের গঠনকাঠামো যিনি আবিষ্কার করেছিলেন, সেই রোজালিন্ডের নামেই রাখা হয়েছে রোভারটির নাম। কী নাম রাখা যায়, তা নিয়ে মানুষের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। জমা পড়েছিল ৩৬ হাজার নাম। তাদেরই মধ্যে থেকে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বেছে নিয়েছে রোজালিন্ডের নাম।

মঙ্গলে কী কী কাজ করবে নতুন রোভার? দেখুন ভিডিয়ো

ইএসএ-র ডিরেক্টর জেনারেল জ্যান ভের্নার বলেছেন, “এই নাম আমাদের মনে করায়, মানব জিনের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। মহাকাশে অজানার সন্ধানে এই নাম আমাদের আরও উত্সাহ দেবে।”

মহাকাশে রয়েছেন নিউটন, ইউক্লিড ও প্ল্যাঙ্কও!

ভের্নার জানিয়েছেন, বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের নামে মহাকাশে পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহদের নামকরণ অনেক দিন ধরেই করে চলেছে ইএসএ। এর আগে দুই পদার্থবিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটন, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং গণিতজ্ঞ ইউক্লিডের নামেও মহাকাশ অভিযানের নাম রাখা হয়েছিল।

আরও পড়ুন- বিশাল গর্তের হদিশ মঙ্গলে! নীচে দেখা মিলবে জলস্রোতের?

আরও পড়ুন- মঙ্গলের এই এলাকায় ছিল জলে ভরা হ্রদ, নাসার রোভার নামবে আগামী বছর​

রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন কে?

রোজালিন্ড ছিলেন এক জন ইংরেজ রসায়নশাস্ত্রবিদ ও এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফার। ডিএনএ-র ডাবল হেলিক্স মডেল অর্থাৎ প্যাঁচানো মইয়ের মতো গঠন আবিষ্কার হয়েছিল তাঁর দেখানো পথেই। পরে তিনি কয়লা, গ্রাফাইটের আণবিক গঠনও আবিষ্কার করেন।

মঙ্গলের মাটিতে গিয়ে কী করবে রোজালিন্ড?

মঙ্গলের ঘোরার পাশাপাশি মঙ্গলের লাল মাটি খুঁড়ে সেখানকার নানা রকমের উপাদান সংগ্রহ করবে। তার পর সেই সব উপাদান বিশ্লেষণ করবে রোভার ‘রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন’। তা থেকেই জানা যাবে মঙ্গলের মাটির নীচে প্রাণের উপাদানের অস্তিত্ব এখনও রয়েছে কি না বা কোনও কালে ছিল কি না।

ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে: ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন