ক্যানসার কোষ। -প্রতীকী ছবি।
অনেক শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মের জন্য তাকে দরকার হয় খুব। সে না থাকলেই বরং বিপদ। অথচ সে যখন মিউটেশন করে নিজের রূপ বদলে ফেলে স্বাভাবিক কাজ করতে করতেই, তখন সে মানবদেহের পক্ষে হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর। নানা ধরনের ক্যানসার কোষের জন্ম ও তাদের বাড়-বৃদ্ধিতে সে হয়ে ওঠে অত্যন্ত সহায়ক। মানবদেহের সেই বিশেষ একটি প্রোটিন (নাম ‘রাস প্রোটিন’)-কে বেঁধে ফেলে বা নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে প্রায় সব রকমের ক্যানসার চিকিৎসার পথ দেখালেন বিজ্ঞানীরা। প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারের ৯৬ শতাংশ আর কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ৯৬ শতাংশ রোগীর দেহেই এই প্রোটিনের সেই বদলে নেওয়া রূপের কলাকৌশল বিজ্ঞানীরা এই প্রথম ধরতে পেরেছেন।
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মলিকিউলার অ্যান্ড সেলুলার বায়োলজির বিজ্ঞানীদের এই নজরকাড়া গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার কমিউনিকেশন্স’-এ।
আরও পড়ুন
শিশুদের শরীরে কোভোভ্যাক্সের ট্রায়ালে নিষেধাজ্ঞা কেন্দ্রের, বড় ধাক্কা খেল সিরাম
আরও পড়ুন
কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মাত্র ৯০ লক্ষ, জুলাইতেও রাজ্যে টিকার আকাল থাকার আশঙ্কা প্রবল
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এর ফলে, শুধু প্যানক্রিয়াটিক আর কোলোরেক্টাল ক্যানসারই নয়, আরও বহু ধরনের ক্যানসারের নতুন নতুন ওষুধ আবিষ্কারের পথ খুলে যাবে। কারণ, আগের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই রাস প্রোটিনের মিউটেশন মানবদেহে আরও বহু ধরনের ক্যানসার কোষের জন্ম ও বাড়-বৃদ্ধিতে মদত জোগায়। রাস প্রোটিনকে জব্দ করার জন্য একটি ওষুধ সবে অনুমোদিত হয়েছে। তবে সেই ওষুধটি সামান্য কয়েকটি ক্যানসারের ক্ষেত্রে খুব সামান্য কার্যকরী হতে পেরেছে। তাই এই গবেষণা পথপ্রদর্শক হয়ে উঠতে পারে আগামী দিনে।
মূল গবেষক, অ্যাসবারি সেন্টার ফর স্ট্রাকচারাল অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির অধ্যাপক ডারেন টমলিনসন বলছেন, “মিউটেশনের দৌলতে মানবদেহে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে ওঠে বলে রাস প্রোটিনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেথ স্টার। গোলাকার এই প্রোটিনের ভিতরে কোনও ওষুধই ঢুকতে পারে না। ফলে, এত দিন তাকে বেঁধে ফেলা বা নিষ্ক্রিয় করার কোনও উপায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা পথ দেখালাম।”