Global Warming

Global Warming: বাতাস থেকে বছরে চার হাজার টন গরল শুষে নেবে, বিশ্বের বৃহত্তম প্ল্যান্টের কাজ শুরু সুইৎজারল্যান্ডে

এই প্ল্যান্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওরকা’। আইসল্যান্ডের ভাষায় যার অর্থ, শক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৩৯
Share:

কাজ শুরু করল বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন-সাকিং প্ল্যান্ট। সুইৎজারল্যান্ডে, বুধবার। ছবি- ‘ক্লাইমওয়ার্কস’ -এর সৌজন্যে।

বাতাস থেকে কয়েক লহমায় শুষে নেবে গরল। বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস। যাতে কমবে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপদ। হয়তো কিছুটা মোড় ঘোরানো যাবে খুব দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের। হয়ে উঠবে সভ্যতার প্রধান হাতিয়ার।

বাতাস থেকে গরল টেনে নেওয়ার জন্য সুবিশাল একটি প্ল্যান্টের কাজ শুরু হল বুধবার। সুইৎজারল্যান্ডে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কার্বন-সাকিং প্ল্যান্ট’। এই কাজে এটাই বিশ্বের বৃহত্তম প্ল্যান্ট।

এই প্ল্যান্টের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওরকা’। আইসল্যান্ডের ভাষায় যার অর্থ, শক্তি। আইসল্যান্ডের সংস্থা ‘কার্বফিক্স’ ও সুইস সংস্থা ‘ক্লাইমওয়ার্কস’ যৌথ ভাবে তৈরি করেছে বিশ্বের বৃহত্তম এই কার্বন-সাকিং প্ল্যান্ট।

সুইস সংস্থা ক্লাইমওয়ার্কস-এর তরফে জানানো হয়েছে, বাতাস থেকে বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস টেনে নেওয়ার জন্য এই প্ল্যান্টে রয়েছে মোট চারটি ইউনিট। প্রতিটি ইউনিটই বানানো হয়েছে দু’টি করে ধাতব বাক্স দিয়ে। যেগুলি আকারে জাহাজে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার কন্টেনারের মতো।

Advertisement

এই বিশাল পাখাগুলিই বাতাসকে টেনে নেবে সংগ্রাহক যন্ত্রের ভিতর, সেখান থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস বা্র করে নেওয়ার জন্য। ছবি- ‘ক্লাইমওয়ার্কস’-এর সৌজন্যে।

এই প্ল্যান্টের এখন যা উৎপাদন ক্ষমতা তাতে বাতাস থেকে বছরে ৪ হাজার টন ওজনের বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস টেনে নিতে পারবে। আমেরিকার এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ)-র দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বাতাস থেকে এখন যে পরিমাণে বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস টেনে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম এই প্ল্যান্টের, সেই পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস বেরিয়ে আসে জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে এক বছর ধরে চলা ৮৭০টি গাড়িতে।

কী ভাবে কাজ করছে এই কার্বন-সাকিং প্ল্যান্ট?

সুইস সংস্থা ক্লাইমওয়ার্কস-এর তরফে জানানো হয়েছে, প্ল্যান্টের প্রতিটি ইউনিটেই রয়েছে বিশালকায় পাখা। ওই পাখাগুলি দিয়েই বাতাসকে টেনে আনা হবে প্ল্যান্টের মধ্যে থাকা সংগ্রাহক যন্ত্রে (‘কালেক্টর’)। যার মধ্যে রাখা আছে এমন পদার্থ যা ছাঁকনির মতো বাতাস থেকে বার করে নিতে পারে বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস। বাতাস থেকে টেনে নেওয়া বিষাক্ত গ্যাসে সেই ছাঁকনির ছিদ্রগুলি পুরোপুরি ভরে গেলেই সংগ্রাহক যন্ত্রটি বন্ধ হয়ে যাবে। তখনই সেই সংগ্রাহকের তাপমাত্রা খুব বাড়িয়ে দেওয়া হবে। যাতে ছাঁকনির ছিদ্রগুলিতে আটকে থাকা বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে পড়তে পারে। এর পর সেই ঘন বিষাক্ত গ্যাসে মেশানো হবে জল, প্রচুর পরিমাণে। শেষে জলে মেশানো সেই ঘন বিষাক্ত গ্যাস আছড়ে ফেলা হবে ১ হাজার মিটার গভীরে ব্যাসাল্ট পাথরের উপর। তাতে বিষাক্ত গ্যাস হয়ে যাবে শিলীভূত। বরফের মতো। কার্বন ডাই-অক্সাইড আর কার্বন মনোক্সাইডের বরফ। যার আর কোনও ক্ষমতাই থাকবে না পরিবেশকে বিষিয়ে তোলার।

উষ্ণায়নের জন্য দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের রথের চাকা গড়িয়ে চলা রুখতে আগামী দিনে এই প্ল্যান্ট গোটা বিশ্বকে পথ দেখাবে, এমনই বিশ্বাস বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন