বক্রেশ্বরে ১৫ দিনেই তুলতে হবে নদীর ছাই

আলো জোগাতে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দূষণ-বিষ। সেই নদী-দূষণ নিয়ে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে আগেই তিরস্কার করেছিল পরিবেশ আদালত। এ বার ছাই তুলে নদী পরিষ্কার করার জন্য বেঁধে দেওয়া হল সময়সীমা। বৃহস্পতিবার বক্রেশ্বরের নদী-দূষণ নিয়ে একটি মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রতাপ রায় এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ১৫ দিনের মধ্যে নদীর তলায় এবং দু’পাড়ে জমে থাকা ছাই তুলে ফেলতে হবে। তা নিয়ে হলফনামা দিতে হবে বক্রেশ্বর-কর্তৃপক্ষ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৪
Share:

আলো জোগাতে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দূষণ-বিষ। সেই নদী-দূষণ নিয়ে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে আগেই তিরস্কার করেছিল পরিবেশ আদালত। এ বার ছাই তুলে নদী পরিষ্কার করার জন্য বেঁধে দেওয়া হল সময়সীমা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বক্রেশ্বরের নদী-দূষণ নিয়ে একটি মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি প্রতাপ রায় এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ১৫ দিনের মধ্যে নদীর তলায় এবং দু’পাড়ে জমে থাকা ছাই তুলে ফেলতে হবে। তা নিয়ে হলফনামা দিতে হবে বক্রেশ্বর-কর্তৃপক্ষ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে।

বক্রেশ্বরের ছাই চন্দ্রভাগা নদীতে মিশছে, এই অভিযোগে কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে মামলা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার ভিত্তিতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে ওই নদীর দূষণের মাত্রা পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে বলেছিল আদালত। সম্প্রতি পর্ষদ সেই রিপোর্ট দিয়েছে। পর্ষদের এক শীর্ষ কর্তা জানান, নদী-দূষণের প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা। শুধু চন্দ্রভাগা নয়, বক্রেশ্বর নামে অন্য এক নদীতেও দূষণ ছড়িয়েছে। এই দূষণের প্রকোপ চলছে বিস্তীর্ণ এলাকায়।

Advertisement

সুভাষবাবু জানান, আদালত নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই। বক্রেশ্বর-কর্তৃপক্ষ নির্দেশ না-মানলে আরও কড়া ব্যবস্থার কথাও বলেছে আদালত। “শুধু বিদ্যুৎকর্তারা হলফনামা দিলেই হবে না। নদী সাফাই খতিয়ে দেখে তা আদালতকে জানাবে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও,” বলেন সুভাষবাবু।

ছাই সাফাইয়ে বক্রেশ্বর ও বিদ্যুৎ নিগমকে যাতে সাহায্য করা হয়, তার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। স্থানীয় কোনও সমস্যা থাকলে তা মেটানোর জন্য বীরভূমের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে। গোটা কাজ নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিবকেও। পরবর্তী শুনানি ১৯ ডিসেম্বর। বিদ্যুৎ নিগমের কর্তারা জানাচ্ছেন, ১৫ দিনের মধ্যে নদীর সব ছাই তুলে ফেলাটা খুব কঠিন। তবে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মানার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালানো হবে। আজ, শুক্রবার থেকেই এই কাজের জন্য ডাম্পার ও অন্যান্য যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “১৫ দিনের মধ্যে যতটা কাজ হবে, তার রিপোর্ট আমরা পরিবেশ আদালতে যথাসময়ে জমা দেব।”

সংস্থা সূত্রের খবর, মামলা হওয়ার পরে বক্রেশ্বর-কর্তৃপক্ষ নদীর ছাই তোলার বিষয়টিকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ছাইয়ের সঙ্গে প্রচুর বর্জ্য জলও বেরোয়। ছাই ও জল একসঙ্গে থাকায় ছাই-পুকুর তাড়াতাড়ি ভর্তি হয়ে যাচ্ছিল। পাম্প খারাপ থাকায় আলাদা করে জল বার করা যাচ্ছিল না। সংস্থার এক কর্তা জানান, কয়েক দিন আগে পাম্পটি সারানো হয়েছে। ছাই-পুকুরের জল বার করে পাঠানো হবে পরিশোধন কেন্দ্রে। সেই পরিস্রুত জল পুনর্ব্যবহার করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন