হাতির হামলায় ক্ষতি, বিক্ষোভ রেঞ্জ অফিসে

এলাকার জঙ্গল থেকে হাতি তাড়ানোর দাবিতে সোমবার সকালে বড়জোড়া রেঞ্জে বিক্ষোভ দেখাল কৃষকসভা। ওই রেঞ্জের খাঁড়ারি, কাঞ্চনপুর, শালুকা, দেজুড়ির মতো হাতি উপদ্রুত গ্রামের বহু বাসিন্দা এ দিন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন কৃষকসভার জেলা সম্পাদক যদুনাথ রায়, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী প্রমুখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৫৬
Share:

এলাকার জঙ্গল থেকে হাতি তাড়ানোর দাবিতে সোমবার সকালে বড়জোড়া রেঞ্জে বিক্ষোভ দেখাল কৃষকসভা। ওই রেঞ্জের খাঁড়ারি, কাঞ্চনপুর, শালুকা, দেজুড়ির মতো হাতি উপদ্রুত গ্রামের বহু বাসিন্দা এ দিন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। উপস্থিত ছিলেন কৃষকসভার জেলা সম্পাদক যদুনাথ রায়, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুজয় চৌধুরী প্রমুখ।

Advertisement

এই মুহুর্তে বড়জোড়ার জঙ্গলে ৯৫টি দলমার হাতির একটি দল অবস্থান করছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সাতদিনের মধ্যে স্থানীয় জঙ্গল থেকে হাতি সরাতে হবে। উল্লেখ্য, হাতির হামলায় প্রায়ই ক্ষতির মুখে পড়ছে জেলার বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত ও উত্তর বনবিভাগের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলি। প্রায়ই হাতির পাল থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’একটি হাতি বের হয়ে গ্রামে ক্ষয়ক্ষতি করছে, আবার কখনও দল বেঁধে একাধিক হাতি গ্রামে ঢুকে পড়ছে। প্রাণহানির ঘটনা ধারাবাহিক ভাবে ঘটে চলেছে বড়জোড়া রেঞ্জ এলাকায়। চলতি বছরেই এই রেঞ্জে ছ’জন হাতির হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। হাতি সমস্যা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে দীর্ঘদিনে ধরেই।

এ দিনের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন বেশ কিছু ক্ষতিগ্রস্থ চাষি। কাঞ্চনপুর গ্রামের রমেশ বাউরি জানান, পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন তিনি। কিছু দিন আগেই হাতির পাল মাঠে নেমে গোটা খেত পায়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে। তাঁর ক্ষোভ, “জমানো টাকা এই চাষে বিনিয়োগ করেছিলাম। এই চাষই আমাদের সারা বছরের সম্বল। কিন্তু ফসল ঘরে তুলতে হল না। হাতির হানায় সব নষ্ট হয়ে গেল।” খাঁড়ারি গ্রামের জীতেন গড়াই ন’বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। একই অবস্থা তাঁর জমিরও। তাঁর ক্ষোভ, “বন দফতর সঠিক সময়ে ক্ষতিপূরণ দেয় না। দিলেও যে টাকা মেলে তা যথেষ্ট নয়।” কাঞ্চনপুরের ভাগচাষি সুখময় বাউরি প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। তাঁর জমিরও ধান নষ্ট হয়েছে হাতির পায়ের চাপে। তাঁর ক্ষোভ, “লোকের জমিতে চাষ করে সংসার টানি। এ বার পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।”

Advertisement

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুজয়বাবু ঘটনার জন্য বন দফতরের উপর দায় চাপিয়ে বলেন, “রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষকে হাতি সমস্যার সমাধান নিয়ে নানা আশ্বাস দেয়। অথচ বন দফতরের ঠিকঠাক পরিকাঠামোটাও গড়ে তুলতে পারেনি।” বড়জোড়ার বিধায়ক আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘হাতির সমস্যা একটা সার্বিক সমস্যা। বাম আমলেও কোনও সমাধান ছিল না এর।” তাঁর কথায়, ইলেকট্রিক তারের বেড়া দিয়ে, জঙ্গলে ওয়াচ টাওয়ার বসিয়ে, হুলা পার্টি দিয়ে হাতির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। হাতির হানায় মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের টাকার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে এই সরকারের আমলে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement