Women News

পুরুষদের ‘নো এন্ট্রি’, গোলাপি অটো এ বার অসমেও

এ বার আশার আলো দেখছেন পূর্ণিমা। পরিচারিকার কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। অটো চালাবেন। রোজগার বাড়বে। সচ্ছল হবে সংসার। শুধু পূর্ণিমাই নন, তাঁর মতো অসমের আরও ১২ জনের জীবন বদলে দিতে চলেছে গোলাপি অটো। কারণ, বুধবার থেকে ‘গোলাপি বিপ্লবে’র আঁচ লেগেছে অসমেও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:৪৮
Share:

অন্য রাজ্যেও দেখা গিয়েছে গোলাপি অটো। ছবি: সংগৃহীত।

লোকের বাড়িতে বাসন মাজা, কাপড় কাচার কাজ করেই দিন চলত পূর্ণিমা পাল দাসের। স্বামী সব্জি বিক্রেতা। রোজগার টেনেটুনে মাসে হাজার দুয়েক। তাই দিয়েই কোনও রকমে সংসার চলত।

Advertisement

তবে, এ বার আশার আলো দেখছেন পূর্ণিমা। পরিচারিকার কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। অটো চালাবেন। রোজগার বাড়বে। সচ্ছল হবে সংসার। শুধু পূর্ণিমাই নন, তাঁর মতো অসমের আরও ১২ জনের জীবন বদলে দিতে চলেছে গোলাপি অটো। কারণ, বুধবার থেকে ‘গোলাপি বিপ্লবে’র আঁচ লেগেছে অসমেও।

অসমের বঙ্গাইগাঁওয়ে দেখা মিলবে গোলাপি অটোর। শুধু রঙেই নয়, বদল ঘটেছে চালক এবং সওয়ারিরও। পুরুষ ড্রাইভারের বদলে গোলাপি অটো চালাবেন কেবলমাত্র মহিলারাই। তাতে সওয়ারও হবেন কেবলমাত্র শিশু ও মহিলারা।

Advertisement

আরও পড়ুন
‘আমার চেয়ে বড় মস্তান কেউ নেই’, শাসানি ইউনিট হেডের

অসমের আগে গোলাপি অটো রিকশার চাকা ঘুরেছে দিল্লি, সুরাত, মুম্বই, ঝাড়খণ্ড এবং ওডিশার রাস্তায়। তবে গত কাল বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বঙ্গাইগাঁওতে এই পরিষেবা চালু হল। ন্যাশনাল আর্বান লাইভিহুড মিশনের অধীন সিটি মিশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (সিএমএমইউ) এই পরিষেবা চালু করল শহরে।

আপাতত ১৩ জন মহিলা চালক। পরিষেবা চালুর আগে থেকে কড়া অনুশীলনে দেখা গিয়েছে তাঁদের। প্রতি দিন ঘণ্টা দুয়েক করে চলত ট্রেনিং। পরে অবশ্য তা বেড়ে দাঁড়ায় চার ঘণ্টা। পূর্ণিমা বলেন, “প্রথম প্রথম বেশ ভয় লাগত। তবে এখন অটো চালানোটা বেশ সোজা মনে হয়।”

সিএমএমইউ-এর আধিকারিক কুসুমবর চৌধুরী জানিয়েছেন, আপাতত সকাল থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত এই গোলাপি অটো চলবে। এই উদ্যোগে সমর্থন মিলেছে বঙ্গাইগাঁও অটো ইউনিয়নের। কুসুমবর জানিয়েছে, এই চালকদের জন্য থাকছে একটি হেল্পলাইন নম্বরও। যাতে আপদেবিপদে পুলিশ ও অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। কুসুমবরের দাবি, “অটো চালিয়ে মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন এই মহিলারা।”

আরও পড়ুন
আধপোড়া বই, এক আকাশ সাহস

পূর্ণিমার মতোই অটো চালাবেন আঁখি রায়। মধ্যবয়সী আঁখি দুই সন্তানের মা। দিনমজুর স্বামীর রোজগার সামান্য। দুই ছেলে বেকার। আঁখি বলেন, “ তিন বছর লোকের বাড়ি কাজ করেছি। তবে, তাতে সংসার চলত না।”

পূর্ণিমার একমাত্র ছেলেকে কেড়ে নিয়েছে দুর্ঘটনা। সন্তানহারা পূর্ণিমা বলেন, “লোকের বাড়ি আর কাজ করতে হবে না আমাকে।”

গোলাপি অটোর হ্যান্ডল ধরেই এখন নতুন জীবনের স্বপ্নে মশগুল আঁখি-পূর্ণিমারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন