সব মেয়েদের মতো আমিও ভাবতাম আমার জীবনে কেউ আসবে। একদিন স্বপ্নপূরণ হবে। সাদা গাউন, ফুলের সাজে সেজে নতুন জীবনে পা রাখব ভালবাসার মানুষটির হাত ধরে। সেই দিনের কাউন্টডাউন চলতো মনে মনে। কিন্তু জীবনটাই যদি কাউন্টডাউন হয়ে যায়? তখন বুঝলাম, আর সময় নেই। অপেক্ষা এখন বাহুল্য মাত্র। নিজের স্বপ্ন নিজেকেই পূরণ করতে হবে। গল্প বলছেন তাইওয়ানের ২৮ বছরের কিউ মে চেন। টার্মিনাল ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। কিন্তু তাতে তো আর থেমে থাকতে পারে না স্বপ্ন দেখা। তাই থেমে যেতে পারেনি গল্প লেখাও।
যেমনটা চাইতেন ঠিক তেমনই চারটে বিয়ের পোশাক কিনে ফেলেন চেন। নিজেই জানান, লাল তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রতীক, গোলাপি আমার কাছে স্নিগ্ধ, সাদা রাজকীয়, আর নেটের পোশাকে হয়ে ওঠা যায় মোহময়ী। স্বপ্নে নিজেকে যেমন দেখতেন, সাজিয়ে তোলেন ঠিক সে ভাবেই। বাকি শুধু ছবি হয়ে থাকা। নাই বা এল কেউ, হোক না মিছিমিছি। তবুও নিজের গল্পে তো তিনি রাজকন্যাই। তাই পৌঁছে গেলেন স্বপ্নের সেই রাজ প্রাসাদে। যার অলিন্দ ধরে প্রিয়তমর হাত ধরে হেঁটে যাওয়ার স্বপ্নের বিভোর ছিলেন তিনি। সাদা ওয়েডিং গাউন, টিয়ারায় সেজে নিজের চেহারা আয়নায় দেখেই কাঁদতে ইচ্ছা করছিল। মনে হচ্ছিল অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হল। তখন সপ্তাহে তিন দিন কেমোথেরাপির জন্য হাসপাতালে যেতে হয় তাঁকে। ট্রাউজার পরার সময়টুকু এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারেন না। হুইলচেয়ারে বসতে হয়, মাথা ঢাকা পরচুলায়।
এই ওয়েডিং ফোটোশুটের মাধ্যমে শুধু নিজের স্বপ্নপূরণ নয়, সকল সুস্থ-অসুস্থ মানুষের কাছে পৌঁছতে চেয়েছেন তিনি। বলতে চেয়েছেন, জীবন অতটাও কুত্সিত নয়। জীবন ও মৃত্যুর মাঝে সব কিছুই খুব ক্ষুদ্র। ক্যানসারে ভোগা মানুষরা শুধুই দিন গুনতে গুনতে বাঁচেন। সত্যিই কি আমরা জানতে পারি ঠিক কত দিন বাঁচবো? তাই ভেবে লাভ কী? বরং যত দিন বাঁচবো, বাঁচার মতো করেই বাঁচি।
দেখুন সেই ফোটোশুট