হার্দিক পাণ্ড্যকে বিরাট কোহালির শুভেচ্ছা পর পর তিনটি ছক্কা হাঁকানোর পর। ছবি: রয়টার্স।
দুরন্ত ভারত, দুরন্ত ভারতের ব্যাটিং। যদিও শুরুর আবহাওয়া ৩০০র গণ্ডি পেড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল এমনটা নয়। বরং শুরুতে রোহিত, শিখরের ঠুকঠুক ব্যাটিং বার্মিংহ্যামের বৃষ্টিস্নাত শীতল আবহাওয়াকে আরওই যেন মন্থর করে দিয়েছিল। কে বলবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ চলছে? শান্ত গ্যালারি, নির্লিপ্ত মুখে ঠুকঠাক ব্যাটিং। প্রথম ওভারে তো রানের খাতাই খুলতে পারলেন না ভারতের ওপেনাররা। কে বুঝেছিল আসলে বারুদটা জমাট বাঁধছিল একটু একটু করে। যার বিস্ফোরণ হতে শুরু করল একটু পর থেকেই। প্রথমে রোহিতের একটা বাউন্ডারি। তার পর আবার আর একটা। কোথা দিয়ে যেন রানের কলটা খুলে গেল ভারতের। যার ফল বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ ৫০ ওভারের না হয়ে ৪৮এ নামিয়ে এনেও ভারত যখন থামল তখন বোর্ডে ৩১৯/৩।
আরও খবর: লন্ডন হামলার পর আরও জোরদার করা হল ভারত-পাক ম্যাচের নিরাপত্তা
এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। টপ অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটসম্যানেরই ব্যাট থেকে এল হাফ সেঞ্চুরি। কেউ ধরে খেললেন, কেউ আবার বল ওড়ালেন গ্যালরির বাইরে। এমন কামব্যাকের পরও হতাশ করে আউট হলেন রোহিত শর্মা। ১১৯ বলে ৯১ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস শেষ হল রান আউটে। এই ইনিংসে ছিল ৭টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি। কিন্তু সেঞ্চুরি করে ফেরাটা ইতিহাসে লিখে রাখা হল না। কিন্তু ভারতের ৩১৯ রানের ইনিংসের শেষে রোহিতের এই ইনিংস সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়েই থেকে যাবে। আদৌ ম্যাচ শেষ হবে কী না তা নিয়ে সংশয় থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুটা ব্যাটসম্যানরা দারুনভাবে করে দিল।
শুধু রোহিত নন এই তালিকায় ফিরলেন আরও দু’জন। এক শিখর ধবন। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতেও নামলেন তিনি। ৬৫ বলে ৬৮ রানের মাপা ইনিংস খেললেন তিনি। হাঁকালেন ৬টি বাউন্ডারি ও ১টি ওভার বাউন্ডারি। যাঁর ধারাবাহিকতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেক সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। কিন্তু ব্যাট হাতে এদিন যোগ্য জবাবটাই দিয়ে গেলেন ভারতের এক সময়ের সেরা ওপনেরা। ধবন আউট হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরার পর রোহিতের সঙ্গে এসে ভারতীয় ইনিংসের হাল ধরেন বিরাট কোহালি। ঠিক যেখানে শেষ হয়েছিল ধবনের স্থিতিশীল ইনিংস সেখান থেকেই শুরু হল বিরাটের ঝোড়ো ব্যাটিং। ততক্ষণে ক্রিজে জমে গিয়েছেন রোহিত। সঙ্গে বিরাট জুটে যেতেই যেন পাক বোলারদের একহাত নেওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলেন দু’জনে। এর পরটা তো শুধুই তোলো আর মারো। যার ফল বিরাট ব্যাট থেকে এল ৬৮ বলে ৮১ রানের অপরাজিত ইনিংস। বিরাটও যিনি বড় শট খেলেন না তেমন তাঁর ব্যাট থেকে এল ৬টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি।
রোহিত ফিরতেই দেখা গেল সেই চেনা যুবরাজ সিংহকে। নেমেই শুরু করলেন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে। এর পরটা ৩২ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ছিল ৮টি বাউন্ডারি ও ১টি ওভার বাউন্ডারি। যুবরাজ আউট হতেই নামলেন হার্দিক পাণ্ড্য। এ যেন একজন করে যাচ্ছিলেন আর রেখে যাচ্ছিলেন তাঁর খেলাটা অন্যের মধ্যে। না হলে হার্দিক নেমেই পর পর তিনটি ছক্কা হাঁকান। ৬ বলে করেন ২০ রান। যদিও প্রকৃতির কোপে খেলার ভাগ্য কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা সময়ই বলবে। তবে পুরো খেলা হলে পাকিস্তানের পক্ষে লক্ষ্যে পৌঁছনো সহজ হত না।।